চাঁদপুর: সম্প্রতি দেশের জনপ্রিয় এক অনলাইন প্রোর্টালের জড়িপে উঠে আসে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির অনেক অজানা তথ্য। চিন্তাসূত্র প্রোর্টালের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চর্যাপদের ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে গত দুই বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কবি নূরুন্নাহার মুন্নি এবং মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন কবি রফিকুজ্জামান রণি। এই কমিটির মেয়াদ আগামী ৩ মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির আগামী দিনের নেতৃত্বে আসছেনন কারা?
জানা গেছে, আগামী কমিটি গঠিত হবে প্রত্যক্ষ ভোটদানের মাধ্যমে। ইতোমধ্যে নিবার্চন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৬ মার্চ নিবার্চন কমিশনের হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে চিঠিও দেওয়া হয়। এতে প্রধান নিবার্চন কমিশনার আয়শা আক্তার রুপা, নির্বাচন কমিশনার দুখাই মুহাম্মাদ, রিটার্নিং অফিসার ফেরারি প্রিন্সের নাম রয়েছে। এছাড়া, নিবার্চন পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন সাইফুল ইসলাম রনি ও সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন কবি শিউলী মজুমদার।
চিঠিতে কমিশনকে ২ সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচনের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ওই কমিশন নিবার্চনি কোনো কাজে হাত দেয়নি। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যাও পাওয়া যায়নি বলে সূত্র জানিয়েছে। ফলে কমিশনকে নতুন করে সময় বেঁধে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রটি বলছে, এ কমিশনের আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কোনো কারণবশত নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও এই কমিশনই সমঝোতা কমিটির ভূমিকা পালন করার ক্ষমতা পাবে। ফলে সংগঠনের সব সদস্যের অভিমতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি ঘোষণার ব্যাপারে কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে।
এখন প্রশ্ন আসছে, নির্বাচনের মাধ্যমেই হোক আর সমঝোতা কমিটির মাধ্যমেই হোক, কারা হচ্ছেন আগামী কমিটির কর্ণধার? শোনা যাচ্ছে, সংগঠনের নীতি নির্ধারকরা চান, সভাপতি পদে নূরুন্নাহার মুন্নি ও মহাপরিচালক পদে রফিকুজ্জামান রণি পুনরায় দায়িত্ব পাক। তাদের দাবি, গত দুই বছরে এই কমিটির কার্যক্রম সারাদেশে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
এছাড়া করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১ বছর দায়িত্ব পালনও ব্যাহত হয়েছে। তবে, আরও দুই-একজনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, সূত্রটি বাকিদের নাম বলতে রাজি হয়নি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাজের অগ্রগতি না থাকায় এখনো কেউ স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না। অধিকাংশই মনে করেন, মুন্নি ও রণি এ দুজনেই পুনরায় দায়িত্ব পাবেন চর্যাপদ একাডেমির।
এদিকে, এবারের কমিটি কত সদস্য বিশিষ্ট হবে, তা নিয়েও চলছে সংগঠনের মধ্যে তুমুল আলোচনা। কেননা, গত দুই বছরে অনেক সদস্য এতে যুক্ত হয়েছেন। তাদের কমিটিতে আনা হবে কি না, তা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনাসভা হয়েছে। এ-ও শোনা যাচ্ছে, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির দায়িত্বে যারাই আসুক, কমিটিতে এবার কর্মদক্ষতা ও আন্তরিকতা দেখে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। যার ফলে, নতুন কমিটি থেকে অনেকেরেই ছিটকে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে চর্যাপদ একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা রফিকুজ্জানান রণির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চিন্তাসূত্রের নিউজটি আমি দেখেছি, প্রথমে কিছুটা বিব্রত হলেও পরে সেটা স্বাভাবিকভাবে নিয়েছি। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি কীভাবে এমন তথ্য তারা পেলো। আমাদের প্রতিষ্ঠানের এমন গোপন বিষয় বাইরে যাওয়ায় প্রথমে একটু বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু সম্মানিত সভাপতি নূরুন্নাহার মুন্নি ও চর্যাপদ পরিবারের সদস্য দিলীপ ঘোষ আমাকে অভয় দিয়ে বলেছেন সামনে আমরা আরও সতর্ক হয়ে চলবো। আমাদের মধ্যে ঐক্য থাকলে এর চেয়ে বড় বড় বিব্রতকর পরিবেশ মোকাবেলা করা ব্যাপার না।
তিনি আরও জানান, চিন্তাসূত্রের তথ্য একেবারেই মিথ্যে এমন নয়, সেটার সত্যতা থাকলেও কিছুটা মনগড় বিষয়ও টেনে এনেছেন তারা। যারা আমাদের পিছনে লেগেছে তাদের ওয়েলকাম জানাই। আমাদের ভেতরে সততা ও স্বচ্ছতা থাকলে এতে ভয় পাবার কিছু নেই। তবে সামনের কমিটিতে আমরা বিশ্বস্ত লোকদের গুরুত্ব দেবো। প্রয়োজনে আরও ছোট আকারে কমিটি গঠন করবো, তারপরও নির্ভেজাল লোকদের নিয়ে কাজ করবো আমরা। কাজ করতে বেশি লোকের প্রয়োজন হয় না। সততা ও আন্তরিকতা থাকলে কম লোক দিয়েই অনেক বড় কাজ সম্পন্ন করা যায়। বেশি লোক থাকলে বরং কাজের ব্যাঘাত ঘটে।
উল্লেখ্য, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি খুব অল্পসময়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। সম্প্রতি এর প্রতিষ্ঠাতা রফিকুজ্জামান রণি ফ্রেন্ডস অব হিউমেনিটি বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় সংগঠনটি আরও বেশি আলোচনায় আসে। তাছাড়া দেড় বছরে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বই উপহার দিয়ে সারাদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি। গত ৬ এপ্রিল চিন্তাসূত্র হঠাৎ এ সংগঠনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তা সর্বমহলে আলোচনার ঝড় তোলে। এর আগে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার সংক্রান্তও এমন নিউজ প্রকাশ করেছিলো প্রোর্টালটি
চাঁদপুরনিউজ/এমএমএ/
