মুন্না রায়হান
আমনের ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর খুচরা বাজারে একদিনেই মানভেদে প্রতি কেজি চালে ৩ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ দেশের ধান-চালের বড় বড় মোকাম ও হাটবাজারগুলোতে এখন নতুন আমন ধানের ব্যাপক সরবরাহ। প্রতিদিনই হাট-বাজারগুলোতে ধান-চালের এ সরবরাহ বাড়ছে। তাহলে চালের দাম বাড়ছে কেন?
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বেড়েছে। আগে মোকাম থেকে চাল আনতে যে ট্রাক ভাড়া ছিল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এখন তা নেওয়া হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকা। এই বাড়তি ভাড়া চালের দামের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এছাড়া ধানের দাম বেশি। গত বছরের চেয়ে এবার মণ প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি। এর প্রভাব পড়েছে চালের দামের ওপর।
তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনার মহামারির চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও আবার করোনার চতুর্থ ঢেউ আসতে পারে। তাই একটি চক্র আগেভাগেই ব্যাপকভাবে ধান-চাল মজুদ করছে। এর প্রভাবে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।
চাল কিনছেন এক ক্রেতা। ছবি: বিপ্লব মল্লিক
গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল/মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৮ টাকা, পাইজাম/লতা ৫১ থেকে ৫৬ টাকা ও ইরি/স্বর্ণা ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ একদিন আগে নাজিরশাইল/মিনিকেট ৫৬ থেকে ৬৮ টাকা, পাইজাম/লতা ৪৮ থেকে ৫৬ টাকা ও ইরি/স্বর্ণা ৪৪ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) গতকাল তাদের নিত্যপ্রণ্যের বাজারদরের প্রতিবেদনে চালের দাম বাড়ার এ তথ্য জানিয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর দেশে ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫৩ হাজার টন। আশা করা হচ্ছে, চলতি মৌসুমে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
আমাদের রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা দীপক কুমার কর জানান, রায়গঞ্জের প্রায় ৩৫ শতাংশ আমন কাটা হয়েছে। প্রতিদিনই এখানকার হাটবাজারগুলোতে ধান-চালের সরবরাহ বাড়ছে। তবে দাম বেশি।
উপজেলার ধামাইনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের কৃষক নাজমুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ২২ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। এরমধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। ফলন হয়েছে ভালো, দামও বেশ ভালো।