মিজান লিটন : ‘ওরে আল্লাহ, ওরা (পুলিশ) আমার শিশু বাচ্চাটাকে গুলি করলো ক্যান? কি অপরাধ আমার আব্বার, কেন তারা মারলো আমার আব্বাকে, আমি কী এহন লাশ নিয়া বাড়ি যামু, এইডার নাম কি সোনার বাংলা, এইডার নাম’ই কি রাজনীতি’। পুলিশের গুলিতে নিহত ছেলে সিয়ামের লাশ সামনে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় বাবা মজিবুর রহমান সুমন এভাবেই আর্তনাদ করছিলেন। তার আর্তনাদে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। পাগলের মত বিলাপ করতে থাকা সুমন মোস্তানের চিৎকারে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের কালিবাড়ি এলাকায় ১৮ দলের মিছিলে পুলিশের গুলিতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সিয়াম ও ছাত্রদল কর্মী রতন পাটওয়ারী নিহত হয়। নিহত সিয়াম শহরের গুণরাজদি এলাকার মজিবুর রহমান সুমন মোস্তানের ছেলে। ৪ ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। সিয়াম শহরের আল আমিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল।
পুলিশের নির্বিচারে গুলিবর্ষণের ঘটনায় হতবাক সুমন মোস্তান কিছুতেই মানতে পারছে না ছেলের করুণ মৃত্যুর ঘটনা। সে বিলাপ করে বলতে থাকে ‘ঐ পুলিশ আমার ছেলেরে মারছস ক্যান, এবার আমারেও গুলি কর। পাখির মতো গুলি করে আমার আদরের ধন তোরা কেড়ে নিলি। আমার আব্বার পরীক্ষার ফল তো কয়দিন পর বাইর হইবো, এই ফল দিয়া আমি কি করুম’।
নিহত সিয়ামের মা পাখি বেগম ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ। ছেলের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। যখনই জ্ঞান ফিরছে তখনই খুঁজছে ছেলেকে। মায়ের চোখের পানি, আর গগনবিদারী আর্তনাদে আশপাশের লোকজনেরও চোখ ভিজে উঠছে। সান্ত¡না দেবার কোন ভাষাই যেন পাচ্ছে না কেউ। মায়ের মত সিয়ামের ৩ ভাইও মানতে পারছে না এ করুণ মৃত্যু। তারাও ফেরত চাইছে তাদের আদরের ভাইকে।
শিরোনাম:
রবিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ৩১ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।