গোসল করতে যাওয়াতেই যে আরজুর শেষ বিদায় হবে এটি তার মা ভাবতেই পারেননি। দলীয় ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ওই দিন পুরাণবাজার নতুন রাস্তা এলাকাটি পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। দু’ দলের সমর্থক ও কর্মীরা মাথায় হেলমেট পরে ও মুখে গামছা পেঁচিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র এবং ককটেল নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। তাদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপেই আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আরজু ও হাকিম আলী রাস্তায় পড়ে থাকে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে আরজু মারা যায়। আর হোটেল শ্রমিক হাকিম আলী শরীরে মারাত্মক যন্ত্রণা নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দু’ গ্রুপের সংঘর্ষে আরজু মারা যাওয়ার পরই তার ভাগ্যে জুটে যায় নতুন পরিচিতি। ওই দিন চলছিলো ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৩ দিনব্যাপী হরতালের ২য় দিন। এ সুযোগটা কাজে লাগায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা। মৃত্যূর কিছুক্ষণ পরই বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলের স্ক্রলে দেখা যায়, চাঁদপুরে যুবদল কর্মী আরজু কিংবা ছাত্রদল কর্মী আরজু নিহত। এভাবে সারা চাঁদপুর জুড়ে রটে বিএনপির কর্মী মারা গেছে। রাতে পুরাণবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন নতুন রাস্তায় নিহতের জানাজার পূর্বেই উপস্থিত হন ১৮ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। তারা উপস্থিত মুসল্লিদের সামনে বিএনপির কর্মী হিসেবে আরজুর পরিচয় দেন। জানাজা শেষে মধ্য শ্রীরামদী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। আজ তার মৃত্যূর ৪র্থ দিন। আরজুর মৃত্যুর প্রতিবাদে হরতালও ঘোষণা করা হয় চাঁদপুরে। কিন্তু নিহতের পরিবারের পাশে গিয়ে বিএনপি কিংবা সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী সহযোগিতা করা তো দূরের কথা, একটু খোঁজ-খবরও নেয়নি। এমনকি যারা তার জন্য হরতাল আহবান করেছে তাদেরকেও দেখা যায়নি তার পরিবারের খোঁজ খবর নিতে কিংবা কবর জিয়ারত করতে।
গতকাল সন্ধ্যায় তার ফুফু ময়নার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, কেউ কেউ আরজুকে দলীয় কর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়। কিন্তু তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা বা খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য কাউকেই তো দেখা যায়নি।