স্টাফ রিপোর্টার:
ওরা শিশু। ওরা মানুষ। অথচ গৃহপালিত পশুর মতো ৫ ঘন্টা ধরে খরের গাধার সাথে তিন শিশুকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ফসলি জমি থেকে আলু চুরির অপরাধে তাদের ধরে এনে গরুর দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন এক সবজি ব্যবসায়ী।
ঘটনাটি হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার কংগাইশ গ্রামের পাল পুকুরিয়া বাড়ীতে। ওই গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী মিজান বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত তিন শিশুকে বেঁধে রাখেন।
ঐ তিন শিশু হলো- এনায়েতপুর মাঈনুদ্দিনের ছেলে জিদান (১২), একই গ্রামের আখন বাড়ীর বিল্লাল হোসেনের ছেলে সিয়াম (১১) ও সিয়ামের খালতো বোন সদর ইউনিয়নের মাতৈন গ্রামের সূবর্ণা (১১)।
বৃহস্পতিবার রাত ৮ ঘটিকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওইবাড়ীর লোকজনসহ খরের গাধার কাছে তিন শিশুকে দেখতে ভীড় জমে আছে।
শিশু জিদান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে আমরা ব্রিক ফিল্ড এর কাছে দিয়ে শামুক খুঁজতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে মিজান মিয়া আমাদেরকে ধরে বাড়ী নিয়ে আসে। বাড়ীতে এনে আমাদের নির্যাতন করার হুমকী দেয়। একপর্যায়ে আমাদেরকে গরু দঁড়ি দিয়ে খরের গাধার সাথে বেঁধে রাখেন।
শিশু সিয়াম বলেন, ‘আমরা চুরি করিনি। তবুও আমাদের বেঁধে রেখেছে। আমরা শীতে কাঁপছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘শীতের রাতে এই তিন শিশুকে বেঁধে রাখা অমানবিক কাজ।’
এদিকে সবজি ব্যবসায়ী মিজান তাদের কাছে বড় দুইটি আলু পাওয়ার বিষয়টি দাবী করে বলেন, ‘আমার জমির আলুর দুইভাগ নষ্ট করে ফেলেছে। অনেক দিন ধরে চোর খুঁজি। ক্ষতিপূরণ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের ছাড়বো না।’
ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে এলাকাবাসী এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশের কাছে বিচার দাবী করে।
উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম বলেন, তিন শিশুকে বেঁধে রাখার সত্যতা পেয়েছি। তবে সাংবাদিকদের ছবি তোলার পর তিন শিশুকে দ্রুত ছেড়ে দেয়। পরে তাদের মা-বাবা নিয়ে গেছে।
হাজীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহআলম বলেন, তিন শিশুকে বেঁধে রাখার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। আমরা অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে শিশুদের পিতা মাতার সাথে আলাপকালে তারা জানান শিশুদেরকে অন্যায়ভাবে বেঁধে রাখা হয়েছিল। শিশুরা আলু চুরি করেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে রাত ১০টায় তাদেরকে ছেড়ে দেয় মিজানুর রহমান । সে এলাকার মাতাব্বর হওয়ায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদেরকে অভিযোগ দেওয়ার কথা বলেছে,আমরা গরিব মানুষ দিন আইন্না দিন খাই। যার ফলে মামলা চালাইতে পারমুনা বলে মামলা দেইনা।