চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী আজ রোববার দুপুরে শেরেবাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২০ বা ২৩ মার্চ প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচন করতে চাচ্ছে ইসি। এখন বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন দিন নির্বাচন করা হবে।
ইউপি নির্বাচনের তফসিল চলতি সপ্তাহে নাকি আগামী সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জাবেদ আলী আজ বলেন, আগামী সপ্তাহে কেন? আজ-কালের মধ্যে বিধি হাতে পেলে চলতি সপ্তাহেই ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
জাবেদ আলী বলেন, ‘সচিবালয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে আমরা বিধিমালা হাতে পাব বলে আশা করি। বিধি হাতে পেলেই আমরা গেজেট প্রকাশ করে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব।’
এদিকে আজ সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার বলেন, তাঁদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে পরীক্ষার সময়সূচির সঙ্গে যেন ইউপি নির্বাচনের সময় সাংঘর্ষিক না হয়। দেশে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে থেকে এ বছর পর্যায়ক্রমে চার হাজার ২৮৯টি ইউপির নির্বাচন করতে হবে। বাকিগুলোতে বিভিন্ন ঝামেলা থাকার কারণে নির্বাচন করা যাচ্ছে না। ইউপি নির্বাচন যেন কেউ বিতর্কিত করতে না পারে সে জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করা হবে। নির্বাচন হবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে, সেদিকে লক্ষ করেই এসব নির্বাচন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ইসি সূত্র আরো জানায়, পুলিশ বাহিনী থেকে ইসিকে জানানো হয়েছে যে, এক সঙ্গে চারশর বেশি ইউপিতে নির্বাচন করতে গেলে তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। সেদিক বিবেচনা করে ইসি প্রথম ধাপের জন্য ৭৬৫টির তালিকা করলেও তা কমিয়ে ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ ইউপিতে নির্বাচন করার কথা ভাবছে।
মার্চ মাসে নির্বাচন শুরু হয়ে চলবে জুন মাস পর্যন্ত। এ সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা চলতে থাকলেও এ পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকেও নির্বাচন করা হতে পারে। এ নির্বাচন ১০ থেকে ১৫ ধাপে সম্পন্ন হতে পারে বলেও জানিয়েছে ইসি সূত্র।
বর্তমানে দেশে চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বিবেচনায় ভোটের জন্য উপযুক্ত ইউনিয়ন বাছাই করে ধাপে ধাপে ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ২৯ (৩) ধারা অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তারিখ পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। এ হিসাবে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জুনের মধ্যে সবগুলো ইউপির নির্বাচন শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
দেশে ১৯৭৩, ১৯৭৭, ১৯৮৩, ১৯৮৮, ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০০৩ ও ২০১১ সালে মোট আটবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হয়েছে।