প্রতিনিধি
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামের খান বাড়ির মৃত আমির খানের ছেলে হাফেজ কবিরাজ তার আপন ছোট ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, গত ২৮ জানুয়ারি গভীর রাতে। এলাকাবাসী ঐ রাতে মুমূর্ষ অবস্থায় আহত আলম খানকে উদ্ধার করে চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে আহত আলম খানের স্ত্রী তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ৪জনকে আসামী করে চাঁদপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৪১।
জানা যায়, হাফেজ কবিরাজ নিজেকে কবিরাজ দাবি করে এলাকায় নানা অপকর্ম করে চলছে। আর এসব অপকর্মের মদদ যোগাচ্ছেন হাফেজের স্ত্রী সাহিদা বেগম। হাফেজ নিজেকে কবিরাজ ও জ্বীনের বাদশা দাবি করে ততাকথিত জ্বীন চালানের মাধ্যমে বোঝা-পরার ভয়-ভীতি দেখিয়ে এলাকার মানুষকে জিম্মি করে কবিরাজির নামে এলাকার নিরীহ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া জ্বীন চালানোর নাম করে রাতের আঁধারে নিরীহ মহিলাদের সম্ভ্রমহানীসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। ভণ্ড কবিরাজ হাফেজের প্রথমা স্ত্রীর গর্ভের সন্তান মিতু আক্তার বেশির ভাগ সময়ে গ্রামে না থেকে ঢাকায় তার খালাদের তত্ত্বাবদানে বড় হয়ে উঠে। তাদের সম্পত্তি ভোগের জন্য নিজ কন্যা মিতু আক্তারকে হাফেজ কবিরাজ দাওয়াই দিয়ে মানষিক রোগিতে পরিণত করে। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি রাত ১০টায় হাফেজের ২য় স্ত্রী সাহিদা বেগম তার সৎ মেয়ে মিতুকে তারই চাচা চাঁদপুর শহরে মমিন পাড়া বাসিন্দা আলম খানের বাসায় দিয়ে যায়। মিতুকে পরক্ষণই রাত ৩টায় বাড়ির মালিকের আসবাবপত্র মানষিক রোগী হয়ে ভেঙ্গে ফেলায় ঐ রাতেই আলম খান ও স্ত্রী মিতুকে গ্রামের বাড়ি হাফেজ কবিরাজের কাছে দিয়ে আসতে যায়। বাড়িতে গেলে হাফেজ কবিরাজ মিতুকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ায় আলমের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। এমনকি আহত আলমের স্ত্রী শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে বলে জানা যায়।
গত রোববার ভণ্ড হাফেজ কবিরাজ তার ঔরশজাত সন্তান মিতুকে হত্যার জন্য মানষিক রোগী বলে একটি নির্জন ঘরে শিঁকল দিয়ে বেঁধে রাখে। ঐ রাতেই মিতুকে হত্যা করে তার ভাই আলম খান ও তার পরিবারের উপর দোষ চাপিয়ে মামলা করার বিষয়ে পাঁয়তারা করে। মিতুকে হত্যা করা হবে বিষয়টি বাড়ির লোকজন জানতে পেরে ঐ ঘর থেকে মিতুকে উদ্ধার করে বাড়ির লোকজন তাদের জিম্মায় রেখে দেয়। গত ৪ ফেব্র“য়ারি মানষিক ও ভারসাম্যহীন মিতু আক্তার সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট অসীম কুমার দে’র আদালতের জবানবন্ধীমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। তাসলিমা বেগমের দায়ের করা মামলায় হাফেজ কবিরাজের ছেলে আসিফ খানকে পুলিশ আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। ৪ ফেব্র“য়ারি আটক আসামী আসিফের জন্য জামিন চাওয়া হলে মানষিক রোগী মিতুর জবানবন্ধি শুনে বিচারক আটক আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে। এভাবে তাসলিমা বেগমের মামলার পর থেকে ভণ্ড হাফেজ কবিরাজ ও অভিযুক্ত আরো ২ আসামী পলাতক রয়েছে। হাফেজ কবিরাজের এহেন কর্মকাণ্ড পুরো এলাকাবাসী অতিষ্ট। তারা ভণ্ড হাফেজ কবিরাজের হাত থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ সুপাারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। হাফেজ খানের ভণ্ডামীর কারণে এলাকার মানুষ প্রায় সর্বশান্ত। এলাকাবাসী জানায়, হাফেজের এ কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ ভাওতাবাজি। সে কোন কবিরাজ বা জ্বীনের আসরের লোক নয়। সে এলাকার লোকজনের কাছে কবিরাজ দাবি করে প্রতারণ করছে।
শিরোনাম:
সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।