মাহফুজ মল্লিক:
মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন আগামি ৫ সেপ্টেম্বর। গত ১৪ আগস্ট উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল ঘোষণার পর এ পর্যন্ত ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে। ২০ আগস্ট পর্যন্ত যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত চেয়ারম্যান মরহুম নাজিম উদ্দিনের ছোট ভাই মো. গিয়াস উদ্দিন মোহন, আলী আহম্মদ মাস্টার, মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. ইলিয়াস মিয়াজী। আগামি ২২ আগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় রয়েছে বলেও নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়।
এদিকে উপ-নির্বাচনকে ঘিরে মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার প্রচারণা শুরু হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হওয়ায় প্রায় এক ডজন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর অংশ নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের কেউ কেউ গণসংযোগও করে আসছেন। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র যারা সংগ্রহ করেছে তাদের ছাড়াও রয়েছেন সম্ভাব্যপ্রার্থী শহীদ প্রধান, বিল্লাল হোসেন খান, হানিফ পাটোয়ারী, হেলাল বকাউল ও কবির হোসেন খান।
সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরামহীনভাবে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। কোন কোন প্রার্থী জনসাধারণের মন জয় করার জন্য এলাকার রাস্তাঘাট নিজ উদ্যোগে সংস্কার করে যাচ্ছেন। এছাড়া গরিব ও অসহায়দের মধ্যে নগদ অর্থ ও বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করে আসছে। ভোটারদের মন জয় করতে একেক প্রার্থী একেক কৌশল অবলম্বন করতে দেখা যাচ্ছে। মাঠে যতজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাঠের জনসমর্থন যাচাই বাছাই করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতেও পারেন বলে অনেকে মনে করছেন। নির্বাচনটি যদিও নির্দলীয় তারপরও দলের একক সমর্থন পেতে প্রার্থীরা দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে লবিং করতে দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কে হচ্ছে তা দু’একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ইতিপূর্বে যুবদল থেকে যুবলীগে যোগদানকারী ইউনিয়নের সর্বকনিষ্ট চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম কোন সংগঠনের ব্যানারে নয়, যুব সমাজের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে ইল্শেপাড়কে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. শহীদ প্রধান যদিও জাতীয় পার্টির সাথে যুক্ত তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে এ প্রতিনিধিকে নিশ্চিত করেছেন। ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিন সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থী স্থানীয় সাংসদের পিএস মো. খবির হোসেন প্রধানের সাথে ভোটযুদ্ধে লড়াই করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। নাজিম উদ্দিনকে তখন বিএনপি থেকে মনোনয়ন না দিলেও তিনি বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে বহু প্রতিকূলতার মধ্যে জনগণের মন জয় করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, নাজিম উদ্দিন চেয়ারম্যানের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. খবির হোসেন প্রধানকে সন্ত্রাসীরা ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে নির্মমভাবে খুন করে। খবির আজ জীবিত থাকলে হয়তো নির্বাচনে একজন ভাল প্রার্থী হিসেবে এলাকাবাসীর কাছে মূল্যায়িত হতো।
এদিকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. নাজিম উদ্দিনও গত ২ জুলাই স্ট্রোক করে মারা যাওয়ার পর এ পদটি শূন্য হয়ে যায়। বর্তমানে যারা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তাদের কেউ কেউ নাজিম উদ্দিনের ছবি সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন ছেপে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা গেছে।
উপাদী উত্তর ইউনিয়নের বেশ ক’টি গ্রাম ঘুরে ভোটারদের চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে জানতে গিয়ে মরহুম নাজিম উদ্দিনের মতো সৎ ও যোগ্য প্রার্থীর কথাই তারা ভাবছেন। যারা গরিব, অসহায়, দুঃস্থ মানুষদের পাশে থেকে তাদের সুখ-দুঃখের অংশীদারীত্বের মর্ম বুঝতে এবং এলাকার উন্নয়ন যাকে দিয়ে হবে এমন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।
শিরোনাম:
বুধবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।