ক্যপশন : ডান দিক থেকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্, রোগীদের জন্য বাবুর্চি খাবার তৈরী করছেন, হাসপাতালের ভিতরে ময়লার ট্রাকিং ভাঙ্গা, বেলা গড়িয়ে গেলেও ডাক্তারদের চেম্বারে তালা ঝুলতে দেখা যায়। পার্শ্বে টিকা দেওয়ার অপেক্ষায় শিশুদের নিয়ে অভিভাবকরা। ছবি-মিথুন
চাঁদপুর জেলার প্রানকেন্দ্র হাজীগঞ্জ উপজেলাকে বলা হলেও কাজে কর্মে এখনো মান সম্মত হয়নি। এখন মান্দাতার আমলের ন্যয় কিছু কিছু কাজ হচ্ছে হাসপাতালে। যেমন হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্টি চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর পাশে অবস্থিত থাকা স্বর্তেও মান উন্নত হয়নি আজও। অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকে হাসপাতালের কার্যক্রম।
জানাযায় যে, পূর্বে হাসপাতালের ডাক্তারগণ রোগীদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে ফি নিত প্রায় ২’শ, ৩’শ টাকা করে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর চাপ সৃষ্টি করার পর ডাক্তারগণ হাসপাতালে বসে গ্রামের অসহায় রোগীদের কাছে প্রকাশ্যে ফি নেওয়া বন্ধ হলেও দালাল, রিপ্রেজেন্টিভ মুক্ত হয়নি হাসপাতালটি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় দৈনিক হাসপাতালে ভিতর বাহিরে, দালাল ও রিপ্রেজেন্টিবদের আড্ডা। দালালদের কাজ রোগীদের স্লিপ দেখে রোগীদের বাহিরের ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে এই টেষ্ট সেই টেষ্ট দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় রোগীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালের চারপাশে রিপ্রেজেনষ্টিভদের মোটর সাইকেল মহড়া দেখতে পাওয়া যায়। তারা ডাক্তারদের সাথে একের পর এক গিয়ে বিজিট করে। দেখা যায় ডাক্তারদের সাথে বিভিন্ন ঔষদের সম্মন্ধে কথা বলতে বলতে অনেক সময় পেরিয়ে যায়। বাহিরে অসহায় রোগীদের সিরিয়াল পড়ে থাকে।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমরা মানুষ কিনা পশু এরকম কোন কিছু বোঝা জায়না। হাসপাতালে আসার পর এই হাসপাতালের খাবারের মান এত নাজুক যে, ভাবতে কষ্ট হয়। ভাতের সাথে পাওয়া যায় পাথর কনা, তরকারীতে পাওয়া যায় একটুকরো আলু, বা পেপে, ডাল যেন সাগরের পানি, রাতের বেলায় বাতি জ্বলে না, ফ্যান চলে না, বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারে থাকতে হয়। পুরনো বিল্ডিং এর ছাদ ধসে পড়ছে। বাথরুমে পানি থাকে না। দরজা জানালা ভাঙ্গা চারপাশে নোংরা ময়লা আবর্জনা রোগীদের ব্রেড কাভার, মোশারী দেওয়া হয় না। হাসপাতালের চারপাশ ঘুরে দেখা যায় সাইড বাউন্ডারী না থাকার কারনে বখাটে ছেলেদের আনাগোনা। তারা হাসপাতালের সিমানার ভিতরে জুয়া, তাস, মাদক সহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকে। এই হাসপাতালটি ৩০ শর্য্যা থেকে ৫০ শর্য্যায় রুপান্তরিত হলেও কাজে কর্মে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। দেশের বিভিন্ন উপজেলা সহ সিটি হাসপাতালে মান কত উন্নত অথচ এই হাসপাতালটি মান্দার আমলের সেই রুপেই চলছে আজও কোন পরিবর্তন হয়নি।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানাযায় এই হাসপাতালে রোগীরা ডাক্তাকে ফি না দিতে নারাজ প্রকাশ করলে ডাক্তারা রোগীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি প্রদান করে এবং অপমানজনক কথা বলে বের করে দেয়। আর প্রভাবশালীদের ভিতরে বসিয়ে বিভিন্ন রকম কথাবর্তা ও আলাপ চালিয়ে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ডাক্তাররা রোগীদের সময় না দিয়ে বিভিন্নভাবে স্বজনদের সাথে মোবাইল ফোনে স্বজন প্রীতি করতে দেখা যায়। গতকাল সোমবার ৪জুলাই রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েগিয়ে এ সব চিত্র দেখা যায়। অন্যদিকে দেখতে পাই ছোট ছোট শিশু বাচ্চাদের টিকা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা মায়েরা দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছে ডাক্তারদে অপেক্ষায়।
টিকা দিতে আসা সন্তানের মা শ্যামলী বেগম জানায়, আমার শিশুটিকে নিয়ে আমি সকাল ৯টা থেকে হাসপাতালে এসে বারান্দায় বসে আছে। বাচ্চারা জালা যন্তনা করছে অথচ এখন বেলা ১১টা বাজলেও ডাক্তারা হাসপাতালে আসেননি।
হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় নতুন ভবনের ভিতর সিড়ির নিচে বাথরুমের ট্রাকিং ঢাকনা ভেঙ্গে ময়লা উপরে এসে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পড়ে আছে। পুরো হাসপাতাল দুর্গন্ধে রোগীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। রোগীরা জানায়, আমরা অভিযোগ করেও কোন সুরাহ হয়নি। রোগীদের খাবার ও বিভিন্ন দিক নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ ধর বলেন, আম্ি এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েআসার পূর্বে অনেক সমস্যা থাকলেও এখন অনেকটা কমে গেছে। সংবাদকর্মী বিভিন্ন প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি প্রশ্নের জবাব দিতে অন্যান্য আর কোন প্রশ্নের জনাব দিতে নারাজ প্রকাশ করেন। তিনি হাসপাতালের প্রদান ডাক্তার প্রদীপ কুমার দত্তের কথা বলেন, আপনি ওনার সাথে বিস্তারিত আলাপ করেন।
রোগীদের খাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালের সহকারী বাবুর্চি ফজলুল হক বলেনত, আমার এখানে কোন কিছু করার নেই। আমাকে যা পাক করতে বলে তাহাই আমি পাক করি। প্রতি উত্তরে জিজ্ঞাসা করলে বাবুর্চি বলে আজ ডাল, আলু আর মাছ পাক করছি। তার কাছে আরও জানতে চাইলে সে বলে আমাকে যে খাবার পাক করার অনুমতি দেওয়া হয় ঠিক আমি সেইটাই পাক করি।
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ