: মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে এক মহিলার বগলের টিউমার অপারেশন করতে গিয়ে পেট অপারেশন করেছে ডাক্তাররা।মহিলা এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভুনবীর ইউপি’র শাসন গ্রামের বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী আইরিন বেগম (২৫) জানান, ১০ নভেম্বর রোববার বগলের টিউমার অপারেশনের জন্য ৪৯৬২৭ নং রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে হাসপাতালের মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের ৭ নং বেডে ভর্তি হন তিনি।
বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রথমে ডা: মোস্তফা এবং পরে ডা: ইফতেখার রোগীনিকে বগলের টিউমার অপারেশনের পরামর্শ দেন। সেই মোতাবেক তিনি অপারেশনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।
রোববার সকালে অপারেশন এর তালিকায় পিত্তথলিতে পাথর নিয়ে ১ নম্বর লিষ্টে ছিলেন কমলগঞ্জের শ্রীনাথপুরের মৃত টুনুমনি করের স্ত্রী সুধারানি কর (৭০)। কিন্তু ১ নম্বরের স্থলে ২ নাম্বার লিষ্টে থাকা আইরিন বেগমকে অপারেশন থিয়েটারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
ডা: সুব্রত কুমার রায় এবং ডা: ইসতিয়াক আলম রোগীনীর পেট অপারেশন করেন। আইরিনের জ্ঞান ফেরার পর তিনি দু’হাতের বগলের নীচ হাল্কা অনুভূত হলে তিনি তার নিকট আত্মীয়কে বলেন আমার বগলে বেন্ডিজ আছে কিনা? এসময় তার পেটে প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছিল। পেটে ব্যথা হলে তিনি জানতে চান তার পেট অপারেশন হল কেন? এতে ডাক্তারদের বোধোদয় ঘটলেও তখন কিছু করার ছিল না।
রোগিনী আইরিন জানান, সকাল ৯-১০ টার মধ্যে তার অপারেশন সম্পন্ন হলেও বিকেল ৩ টার দিকে তার স্বামীর কাছে ৩ টি পাথর দিয়ে বলা হয় এগুলো তার পেট থেকে এসেছে। রোগিনী বলেন আমি নিজে রোগী হয়েও আমার পেটের সমস্যার কথা জানিনা। তাছাড়া বারবার আমার বগলের বিভিন্ন টেষ্ট হয়েছে, কিন্তু পেটের কোন প্রকার টেষ্ট বা আলট্রা সনোগ্রাফি আমি করাইনি। তাহলে ডাক্তাররা কিভাবে বুঝলেন আমার পিত্ত থলিতে পাথর আছে? এখন আমি কি করবো?
ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে ডাক্তাররা আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
কিন্তু রোগিনীর ভাই ইকবাল হোসেন জানান, এই ঘটনায় আমরা সুবিচার পেতে প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব, আপনারা অমাদের সাহায্য করবেন।
এ ব্যাপারে হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা: দীনেশ সুত্রধর ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, তা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন এ ব্যাপারে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির চিফ হিসেবে আছেন কার্ডিওলজিষ্ট বিভাগের সিনিয়র কলসালটেন্ট ডা: মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী, এনেস্থেসিয়া বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: সাখাওয়াত হোসেন এবং সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা: আবু মোহাম্মদ মোস্তফা।
তিনি আরও বলেন, দোষী হলে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি রোগীনিকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি কেবিন বরাদ্ধ করে সেখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানান।
আইরিন বর্তমানে মহিলা ৩ তলায় মহিলা ৯ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছে।