স্টাফ রিপোর্টার:বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকরা এখন থেকে গ্রামীণ ও রবি মোবাইল কোম্পানীর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল রিচার্জ করতে পারবেন। বিটিআরসির সাথে গতকাল রোববার এ দুই মোবাইল কোম্পানীর চুক্তি হয়েছে। আজ থেকে এ সেবা চালু হতে পারে। বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহকদের জন্যে এমন স্বস্তির খবর জানালেন চাঁদপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসাইন। গতকাল রোববার বিকেলে তিনি এ তথ্য জানান।
বিদ্যুৎ সেবায় একটি পরিবর্তন আসে প্রি-পেইড মিটার সংযোগের মধ্য দিয়ে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েক বছর আগেই প্রি-পেইড মিটার সংযোগ চালু হয়। চাঁদপুরে শুরু হয় গত বছরের জুলাই মাস থেকে। এ প্রি-পেইড মিটারের দ্বারা গ্রাহকরা অন্তত ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাবে। আর বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তথা সরকারও বিল খেলাপীর মধ্যে পড়বে না। এ সেবাটি মোবাইল ফোন ব্যবহারের মতই। অর্থাৎ মোবাইলে কেউ যে পরিমাণ টাকা রিচার্জ করবে সে পরিমাণ বা সময় পর্যন্তই কথা বলতে পারবে। রিচার্জের টাকা শেষ হয়ে গেলে মোবাইল সংযোগ যেমনি বন্ধ হয়ে যায়, তেমনি প্রি-পেইড মিটারের বেলায়ও যে পরিমাণ কার্ড অর্থাৎ টাকা রিচার্জ করবে সে পরিমাণই বিদ্যুৎ সার্ভিস দেয়া হবে। টাকা শেষ হয়ে গেলে বিদ্যুৎ চলে যাবে। তবে টাকা শেষ পর্যায়ে চলে আসলে মিটারে লালবাতি জ্বলে সিগন্যাল দিতে থাকবে। আর রাতের বেলা এবং সরকারি ছুটিসহ শুক্রবার মিটারে টাকা শেষ হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ যাবে না। পরদিন অর্থাৎ সরকারি কার্যদিবসে সকাল ৮টা পর্যন্ত ইমার্জেন্সী সার্ভিস দিয়ে যাবে। ৮টার পর রিচার্জ না করলে বিদ্যুৎ চলে যাবে। আর রিচার্জ করলে দেখা যাবে যে, ইমারজেন্সী সার্ভিস যে পরিমাণ দেয়া হয়েছে, সে পরিমাণ টাকা অটোমেটিক কর্তন করা হয়ে গেছে। এই নিয়ম ও বিধি-বিধানের কারণে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি গ্রাহকরা বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মিতব্যয়ী হবে।
চাঁদপুর পিডিবি শহরে গত বছরের জুলাই থেকে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দেয়ার কাজ শুরু করে। যদিও এ কাজ করতে গিয়ে কিছু এলাকায় ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয়েছে এ কাজে নিয়োজিত লোকজনকে। দু’-একটি জায়গায় মারধরের শিকারও হয়েছে কর্তৃপক্ষের লোকজন। এসব ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। তারপরও কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটারের সুফলের বিষয়টি বুঝিয়ে এ কাজ অব্যাহত রেখেছে। সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসাইন জানান, চাঁদপুর পিডিবির ৫২ হাজার গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে এই প্রি-পেইড মিটার রিচার্জের জন্যে চাঁদপুর শহরে একটি সেন্টার করা হয়। সেটি নতুন বাজারস্থ বিদ্যুৎ অফিসের ভেতরে। এ একটি মাত্র রিচার্জ সেন্টার হওয়ায় প্রি-পেইড মিটারের সকল গ্রাহককে নতুনবাজারে এসে রিচার্জ করতে হয়। এতে গ্রাহকদের চমর ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দেখা গেছে যে, পুরাণবাজার, ওয়্যারলেস, বাবুরহাট থেকে গ্রাহকদের নতুনবাজার আসতে অনেক সময় এবং যাতায়াতে অর্থ ব্যয় হয়। আবার রিচার্জ সেন্টারে এসে দেখে দীর্ঘ লাইন। মিটার সংযোগ সংখ্যা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রাহকদের এ ভোগান্তি বাড়তে থাকে। এমন অবস্থায় নতুনবাজার ও পুরাণবাজার এলাকায় মিটার রিচার্জের জন্যে একাধিক বুথ খোলার জোরালো দাবি উঠে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষও গ্রাহকদের এ ভোগান্তির বিষয়টি অনুধাবন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে থাকে। অবশেষে বিটিআরসির সাথে মোবাইল কোম্পানী গ্রামীণ ও রবির চুক্তি হয় প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকদের বিল রিচার্জের বিষয়ে। সহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসাইন আরো জানান, গ্রামীণ ও রবির এ জেলায় ডিস্ট্রিবিউটর যারা আছেন তারা ঠিক করবেন শহরের কোন্ কোন্ এলাকায় তাদের কতজন এজেন্টকে বিদ্যুৎ মিটার রিচার্জের দায়িত্ব দিবেন। তবে আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুরাণবাজার এলাকায় এক বা একাধিক এবং নতুন বাজার এলাকায় একাধিক এজেন্টকে যাতে রিচার্জের জন্যে দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি নতুনবাজার বিদ্যুৎ অফিসে যে রিচার্জ সেন্টার রয়েছে সেটিও চালু থাকবে।