দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘সোমবার ভোর রাতে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হলেও দেশে একটা বিল্ডিংয়েও ফাটল ধরেনি। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত ধর্মভীরু। এদেশে আল্লাহর রহমত আছে।’
তিনি বলেন, ‘সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ঢাকায় ক্ষতি হবে বলে আমার মনে হয় না, এটা আমার আত্মবিশ্বাস।’
ভূমিকম্পের পর সকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, `বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত ধর্মভীরু। এদেশে আল্লাহর রহমত আছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেক সময় অনেক গবেষক যে গবেষণা করেন, বাংলাদেশের এরিয়ায় তা সঠিকভাবে ফলেনি। গবেষকরা বলেছেন ৬ দশমিক ৫ হলেই (ভূমিকম্পের মাত্রা) ম্যাসাকার হয়ে যাবে। ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে গেছে। আল্লার রহমতে একটা বিল্ডিংয়েও ফাটল ধরেনি।’
ভোরে যে ভূমিকম্পে বাংলাদেশ কেঁপে উঠেছে, তার কেন্দ্র ছিল ঢাকা থেকে ৩৫২ কিলোমিটার পূর্ব উত্তর-পূর্বে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৫৫ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পে পুরান ঢাকার বংশাল এবং যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে দু’টি ভবনে হেলে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। সিলেট নগরীর একটি নির্মাণাধীন মার্কেটের দেয়াল ধসে পাশের ভবনে পড়ে চারজন আহত হয়েছেন।
মন্ত্রী মায়া বলেন, ‘আমি মনে করি, ঢাকার মাটি ভূমিকম্পকে সহনশীল করতে পারে। সাত মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ঢাকায় ক্ষতি হবে বলে আমার মনে হয় না, এটা আমার আত্মবিশ্বাস।’
এই ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কের হুড়োহুড়িতে ঢাকা, রাজশাহী ও লালমনিরহাটে তিনজন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
‘ঢাকায় ৩১ জনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬০/৬৫ জন আহত হয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বন্যা, খরা, সাইক্লোনে গরিব মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্পে ম্যাসাকার হয়ে গেলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঢাকাসহ দেশের বড়লোকরা।’
মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যেক জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, উপজেলা থেকে শুরু করে শহর ও জেলাভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাঠাতে।
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার অভিযান চালাতে ৬৯ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আরও ১৪৫ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কিনতে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চলছে।
ঢাকায় ৭২ হাজার ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বলেন, বিল্ডিংকোড বাস্তবায়নে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো এখনও না ভাঙায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মায়া।
তিনি বলেন, ‘ঝুকিপূর্ণ ভবন লাল রঙ করে দিলাম, এক মাস পরে সেই লাল রং সাদা হয়ে যায় কিন্তু বিল্ডিং ভাঙে না।’
সচিব জানান, মঙ্গলবারের (৫ জানুয়ারি) মধ্যে প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে দুর্যোগ প্রস্তুতিমূলক সভা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ভূমিকম্প নিয়ে জেলাওয়ারি মহড়া আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে সচিব শাহ কামাল বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের বার বার মাফ করছেন।’
শিরোনাম:
বুধবার , ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৯ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।