প্রতিনিধি
কচুয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন ওরফে হাজারী (৬৫)কে বৃহস্পতিবার রাতে মোবাইলে (০১৮১২-৮০৫৭০০) ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি উপজেলার ২নং পাথৈর ইউনিয়নের বড়দৈল গ্রামের মৃত আজগর আলী বেপারীর পুত্র ও স্থানীয় ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জয়নাল আবেদীনের ব্যবহৃত মোবাইলে অজ্ঞাত লোক ফোন দিয়ে তাকে বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে প্রায় ১ কিঃ মিঃ দূরে বিলে নিয়ে ফসলি জমিতে (আলু ক্ষেতে) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্থানীয়রা ধারণা করছে তাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার প্রায় ঘণ্টাখানিক পরে জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী তার মোবাইলে কয়েক বার ফোন দিলে জয়নাল আবেদীন খুন হয়েছে বলে জানিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে নিহতের পরিবার জয়নাল আবেদীন (হাজারীর) লাশ উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী দাউদকান্দি উপজেলা (গৌরিপুর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করে এবং শুক্রবার বাদ আছর জানাজা শেষে মরহুমের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। মরহুমের জানাজায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও হাজার হাজার জনতা অংশ নেয়।
নিহতের বড় ছেলে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, কী কারণে কে বা কারা আমার পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তা আমাদের জানা নেই। দুর্বৃত্তরা জয়নাল আবেদীনের সাথে থাকা নগদ ১৭ হাজার টাকা, মানিব্যাগ, নোটবুক নিয়ে যায় বলে নিহতের পরিবার দাবি করে।
এদিকে বড়দৈল গ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন (হাজারী) দুর্বৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ শুক্রবার দুপুরে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে। নিহত জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। তিনি কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার এমএ মালেকের বড় ভাই।
ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করা হবে বলে পরিবারের লোকজনকে আশ্বস্ত করেন। পুলিশ নিহত জয়নাল আবেদীনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে জয়নাল আবেদীনের মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে যুবলীগ নেতা চাঁন মিয়ার মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয় স্থানীয় জনতা।