কচুয়া সংবাদদাতা: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় জলাশয় পুন:খনন কার্যক্রমে খাল খননে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছে হাজারও কৃষক। অতীতে জমি থেকে ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা বিরম্বনা সৃষ্টি ও রোপণের পর পরিচর্যার জন্য দিনের পর দিন বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হলেও এবার আর সেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। খাল খননে জমির জন্য সহজেই পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা,মাছ উৎপাদনের বৃদ্ধি ও নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ায় খুশি স্থানীয় হাজারও কৃষকরা।
কচুয়া উপজেলার কাদলা ইউনিয়নের সাহপুর,দোঘর, বরিগাঁও,গুলবাহার ও কড়ইয়া ইউনিয়নের সাদিপুর,চাঁদপুর,বাসাবাড়িয়া গ্রামের কয়েক হাজার কৃষকরা ২ হাজার বিঘা জমি চাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বোরো জমি চাষের পর ফালগুন-চৈত্র মাসের শেষদিকে বৃষ্টির জন্য কৃষকদের অপেক্ষা করতে হয়। জমিতে পানি দেয়ার বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকায় তাদের অনেক কষ্ট হতো। বৃষ্টি এলে বৈশাখ মাসে তাদের কষ্টার্জিত ফসল কেটে বাড়িতে নিয়ে আসতে অনেক বেগ পেতে হতো। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এমন দুর্ভোগ দেখে এগিয়ে আসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় জলাশয় পুন:খনন কার্যক্রম।
সরেজমিনে এলাকায় ঘুরে গিয়ে দেখা যায়, এখন আর জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থার জন্য বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। খাল খননের সুবিধায় খালে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে কৃষকেরা সহজেই জমিতে পানি দিতে পারছে এবং দেশী প্রজাতির মাছ চাষিবাদ করার জন্য সুবিধা হচ্ছে। অপরদিকে নতুন মাটির রাস্তা তৈরি হওয়াতে আগামী বৈশাখ মাসে জমি থেকে ধান কেটে সহজেই কৃষকরা বাড়িতে কিংবা গোলায় নিয়ে আসতে পারবে।
সাদিপুরা চাঁদপুর গ্রামের কৃষক ও কড়ইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিন জানান, এই প্রকল্পে আমাদের একসঙ্গে দুটি কাজ হয়েছে। একদিকে খাল খনন অপরদিকে নতুন রাস্তা নির্মাণ। আগে হাওরের ধান শ্রমিকের মাধ্যমে কাঁধে করে নিয়ে আসতে হতো। এখন আমরা ছোট গাড়ির মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারবো
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন ৫০-৬০ একর জমিতে স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি দিতে পারি। আগে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। প্রকল্পটিতে আমাদের অনেক উপহার হচ্ছে।
দোঘর গ্রামের কৃষক দুলাল প্রধান জানান, খাল খনন প্রকল্পের কারণে এখন আর জমিতে পানির অভাব হয় না। এছাড়া নতুন রাস্তা হওয়ার কারণে হাওর থেকে ধান আনতে অসুবিধা হবে না। এখন ট্রলির মাধ্যমে ধান আনতে পারবো। খাল খনন ও রাস্তা তৈরি হওয়ায় দুটি গ্রামের ব্যাপক সুবিধা হয়েছে।
কচুয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুদুল হাছান বলেন, কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় জলাশয় বর্তমানে ৬টি পুন:খনন কার্যক্রম চলছে। আগে কৃষকদের মাঠের ফসল নিয়ে বাড়ীতে আসতে পারতো না। পাশাপাশি ধান বের হওয়ার সময় পানি সেচের অভাবে অধিকাংশ ধানেই চিটা হতো। এখন আর হবে না। এই খাল খননে দেশী প্রজাতির মাছ চাষাবাদ করার জন্য সুবিধা হবে। বর্তমানে খননের খাল গুলোতে পানির জন্য কোন সমস্যা হবে না।
কাদলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম লালু জানান, খাল খননে পানি সেচের সুবিধা বেশি পাওয়ার কারণে কৃষকদের ফলন বৃদ্ধি পাবে এবং তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
চাঁদপুরনিউজ/এমএমএ/