মোঃ খোরশেদ আলম শিকদার : এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা ২০১৩ আগামী ৩ জানুয়ারী রোববার সারাদেশে এক যোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে অনুযায়ী চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় ৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি ও ভোকেশনাল এ ১৩৬০ জন ছাত্র ১৫৬৪ জন ছাত্রী এবং দাখিল পরীক্ষায় ৩টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪৪০ জন ছাত্র এবং ৫৭০ জন ছাত্রী দাখিল পরীক্ষার্থী রয়েছে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা পূর্ব থেকেই তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তাছাড়া সচেতন অভিভাবক তাদের সন্তানদের ভবিষৎ গড়তে লেখাপড়ায় শেষ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। রোববারের অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় যাতে কোন প্রকার অসুদাপয় অবলম্বন না হয় সেজন্য শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, মেধা যাচাই এর জন্য পরীক্ষার বিকল্প নেই। সেই পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থী নকলের সুযোগ পেয়ে গোল্ডেন জিপিএ- ৫ পেয়ে যায়, আর প্রকৃত মেধাবীরা তা থেকে বঞ্চিত হয়। সদ্য সমাপ্ত জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় বহু মেধাবী শিক্ষার্থী জিপিএ- ৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। যারা মেধাবীদের তুলনায় লেখাপড়পায় নগন্ন তাদের অনেকে জিপিএ- ৫ পেয়েছে এমন বহু অভিযোগ চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় শিক্ষার্থীদের রয়েছে। সে ক্ষেত্রে মেধাবীদের লেখাপড়ায় পূর্বের চেয়ে আগ্রহ কমে গেছে। তারা বলছে ভাল লেখাপড়া করে কি লাভ, যারা পরীক্ষায় নকল করে তারাইতো ভাল করেছে।
অভিভাবকরা ক্ষোভ করে বলেন, বহু ছাত্র-ছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষায় ৪/৫ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। স্কুলের দায়িত্ব প্রাপ্তরা তাদের নিকট থেকে ৫/৬ হাজার টাকা নিয়ে পরীক্ষার ফরম পূরনের সুযোগ করে দিয়েছে। তারাও তো এখন পরীক্ষার্থী। ঐসব পরীক্ষার্থীরা হয়তো নকল করে অথবা মেধাবী শিক্ষার্থীদের খাতা টানাটানি করে ভাল ফলাফল করে। আমাদের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষার পর বাড়িতে এসে বলে, পরীক্ষায় নকল করতে পরীক্ষা কক্ষে যেসব শিক্ষক দায়িত্বে নিয়োজেত থাকেন তারাই বিভিন্নভাবে আমাদেরকে নকলে সহায়তা করেন। তাছাড়া স্কুলের দপ্তরি পানি দেয়ার নামে নকল সরবরাহ, শিক্ষক খাতা দেয়ার নামে কক্ষে যেয়ে নকল সরবরাহ, আবার পরীক্ষা পরিদর্শনে বোর্ডের, প্রশাসনের অথবা পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি কিংবা সাংবাদিক আসলে শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করে দেন যাতে কোন নকল না করে, কারো খাতা আপাতত কেউ না দেখে। তারা যতক্ষন থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত যেন পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ নিটিল ক্লিন থাকে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সচিবরা মরিয়া হয়ে ওঠে।
আবার দেখা গেছে, রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করছেন পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ। জেলা প্রশাসক উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে পরীক্ষার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিয়োগ দেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দায়িত্ব পালন না করে কেন্দ্রের সচিবের সাথে ম্যানেজ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের অফিস কক্ষে জামাই আদরে বসে বসে গল্পগুজব করছেন আর কিছুক্ষণ পরপর বিভিন্ন ফল, মিষ্টি, চানাচুর, বিস্কুট, চা খাচ্ছেন আর পত্রিকা পড়ছেন। আর এ সুযোগে যারা নির্বাচনী পরীক্ষায় ৫/৬ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে পরীক্ষা দিতে এসছেন তারা জিপিএ-৫ পাইতে যেভাবে পরীক্ষার খাতায় লিখতে হবে সেভাবেই লিখছে। এ থেকে পরিত্রান চেয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। আর সেজন্য তারা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিকট আবেদন জানিয়েছে।