খোরশেদ আলম শিকদার,^
চাঁদপুরের কচুয়ায় দোয়াটি গ্রামের কথিত ভন্ড পীর ও লোকনাথ শ্রী সঞ্জয় সরকার ওরফে বাবা মনি লোকনাথ মন্দিরে মুর্তির পাশে পবিত্র কোরআন শরীফ রেখে এবং দেয়ালে মক্কা শরীফ,রওজা শরীফ,মদীনা শরীফের ছবি টানিয়ে ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম ৪ ধর্মের প্রচারক ও মহামানব দাবী করে। তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার ৪নং পূর্ব সহদেবপুর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের দোয়াটি গ্রামে। তার পিতার নাম-অনিল সরকার। তার শাস্তির দাবীতে ২ অক্টোবর শুক্রবার জুম্মা নামাজ শেষে দোয়াটিসহ আশপাশের গ্রামের মসজিদের মুসল্লিগন আওয়ামীলীগ নেতা জাকির হোসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তাকে গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির দাবীতে শুক্রবার দোয়াটি গ্রামে ২০ সদস্য কমিটি গঠন করে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা না হলে মানব বন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি দেয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন এ কমিটি। বিষয়টি কচুয়ার আলেম সমাজসহ মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে।
এলাকা সূত্রে জানাযায়, ২০১০ সাল থেকে তার এ ভন্ড পীরের সুত্রপাত হয়। তার গ্রামে বসতঘরের পাশে প্রায় ১২ শতক জায়গার ২ শতক জমির মধ্যে ২০লাখ টাকা ব্যায়ে একটি লোকনাথ মন্দির স্থাপন করেন। বিগত ৫বছর যাবৎ কোরআন শরীফ মন্দিরের মুর্তির সাথে রেখে এ পীরানা ও ভন্ডামী চালিয়ে আসছে মন্দিরের ভিতরে লোকনাথসহ হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন মুর্তির সাথে ৩টি পবিত্র কোরআন শরীফ, দেয়ালে পবিত্র মক্কা শরীফের ছবি, রওজা শরীফের ও মদীনা শরীফের ছবি টানিয়ে ইসলাম ধর্মের লোকজনকে আকৃষ্ট করেছে। আর বলেছে এ কোরআন শরীফ পীর অলিরা তার ওপর সোয়ার হয়ে পাঠ করেন। ভন্ড এ পীর সঞ্জয় ওরফে বাবা মনি বলেন, লোকনাথ মন্দিরে ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম,বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম ৪ ধর্মের পীর অলিরা তার শরীরের আশ্রয় নিয়ে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ইসলাম ধর্ম, খ্রীষ্টান ধর্ম এবং শুক্রবারে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হিন্দু ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারকারী হিসেবে ৪ ধর্মের পীর অলিরা ধর্ম প্রচারের দায়িত্ব দেন। সে মোতাবেক লোকদের নিয়ে ঢোল, বাদ্য, যন্ত্র নিয়ে মজনা বানিয়ে লোকনাথ মন্দিরে গান করেন ও ধর্ম প্রচার করেন। এ মজমায় নিং সন্তান মা সন্তান পাবে,পঙ্গু মানুষ ভাল হবে, অন্ধ মানুষ তার দৃষ্টি ফিরে পাবে। এছাড়াও বিভিন্ন রোগ বালাই ভাল হয়ে যাবে বলে পানিপড়া, তেল পড়া,সুতা পড়া দেন কথিত এ ধর্ম প্রচারক পীর।
জানাযায়, সোম ও শুক্রবারে ধর্ম প্রচারক কথিত পীরের শরীরের যখন পীর ও লোকনাথ আশ্রয় করে তখন কথিত এ পীর ও লোকনাথ সবাইকে তুই করে বলে সম্বোধন করে বলেন, এ তোর ভাল হতে হলে ,হাস, মুরগী,শাখা,কাপড়,পাডা ছাগল এ দরবারে দিতে হবে। এভাবে বিগত ৫ বছর যাবৎ সাধারন মানুষকে ধোকা দিয়ে ও ধর্ম ব্যাবসা চালিয়ে আসছে। তার প্রধান সহযোগী হিসেবে স্থানীয় মেম্বার পরিমল সরকার তার বাবা অনিল সরকার, মা পুস্প রানীসহ ডজন খানেক বাহিনী রয়েছে। কেউ কথিত এ ভন্ড পীরের নিকট আসার পর তাদের নিকট থেকে বিস্তারিত সমস্যা জেনে নিয়ে কয়েকদিন পর বা আগামী সোমবার বা শুক্রবারে আসতে পরামর্শ দেয় ঐ তারিখে যখন কথিত পীরের ওপর পীর বা লোকনাথ আশ্রয় নেয় তখন সব কিছু বলে দিতে পারে সাধারন মানুষতো মনে করে হুজুরতো সবই জানে । মূল বিষয় হলো কয়েকদিন আগে আসার পর ঐ সময়ইতো সব কিছু ভন্ড পীরের লোকজন জেনে নিয়েছে। এভাবেই সাধারন মানুষকে প্রতারনা করে মানুষকে ঠকিয়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক মোঃ খোরশেদ আলম শিকদার সংবাদ পেয়ে ঐ আস্তানায় যায়। সেখানে গিয়ে এ ভন্ড ধর্ম প্রচারকারী সঞ্জয় ওরফে বাবা মনির সাথে প্রায় ৪ ঘন্টা আলাপ করে তার তথ্য নেয় এবং বিভিন্ন ছবি ধারন ও ভিডিও করে। বিষয়টি শ্রেফ ভন্ডামী এবং কোরআন অবমামনা হচ্ছে বিষয়টি মানতে রাজী নন এ সাংবাদিক। তিনি তাৎক্ষনিক ৪নং পূর্ব সহদেবপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক সাহেবের সাথে আলাপ করেন। পরে দহুলিয়ার শাজুলিয়া দরবার শরীফের পীরজাদা মাওলানা শাহ মুহাম্মদ রুহুল্লাহ শাজুলি ও পীরজাদা শাহ মুহাম্মদ নুরুল্লাহ শাজুলির সাথে আলাপ করেন। তিনি তাৎক্ষনিক কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইব্রাহীম খলিলকে জানান। ওসি থানার এস আই নাসির উদ্দিনকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। এস আই নাসির ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে কথিত এ পীরের লোকনাথ মন্দিরে আসেন এবং ভন্ড এ পীরকে কোরআন শরীফের কথা জিজ্ঞাসাবাদে মন্দিরে কোরআন শরীফ রয়েছে শিকার করে ৩টি কোরআন শরীফ উদ্ধার করে স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেনের নিকট দেন। মন্দির থেকে কোরআন শরীফ উদ্ধার বিগত ৫ বছর যাবৎ ধর্ম ব্যাবসা ও কোরআন শরীফ অবমাননার বিষয়টি হালকাভাবে মানতে রাজি নন মুসলিম ও আলেম সমাজ। ভন্ড এ প্রতারকেকে শাস্তি পেতে হবে এর দাবীতে ২ অক্টোবর শুক্রবার জুম্মা নামাজ শেষে দোয়াটিসহ কয়েকটি গ্রামের মুসল্লিগন একত্রিত হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
ভন্ড এ প্রতারক ও তার সহযোগী পরিমল মেম্বারকে গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির দাবীতে শুক্রবার দোয়াটি গ্রামে ২০ সদস্য কমিটি গঠন করা হয়েছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ভন্ড পীরকে গ্রেফতার করা না হলে মানব বন্ধন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি দেয়ার কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন। বিষয়টি কচুয়ার আলেম সমাজসহ মুসলমানদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় বইছে।