আবু সাঈদ, কচুয়াঃ
কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বাসাবাড়িয়া গ্রামের সেলিম মেম্বার বাড়ীর জনৈক বুজরত আলীর ছেলে স্বপন (৩৫) কর্তৃক স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী পান্না আক্তার (২৮) নির্মম নির্যাতনে হত্যার শিকার হয়। আজ সোমবার সকালে কচুয়া থানা পুলিশের তদন্ত অফিসার শামছুল হক ও এসআই মাহাবুব রহমান সঙ্গীয়- ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পান্নার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরন করে।
সরজমিন জানাযায়, রবিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে যৌতুক লোভী স্বামী স্বপন নিজ গৃহে পান্নাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি, লাঠি-সোঠা দিয়ে মারধর নির্যাতনে তাকে অর্ধবস্ত্র করে ফেলে। পান্না জীবন বাঁচাতে ঘর থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও ঘাতক স্বামী টেনে হেঁচড়ে আঘাত আঘাতে তার নিথর দেহ মাটিতে লুটে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩‘শ গজ দক্ষিন দিকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক অভিনাস জানান, স্বপন ও তার বাবা বুজরত আলী রাত ১১ টার দিকে পান্না কে আমার কাছে নিয়ে আসলে, দেখতে পাই এবং তাদেরকে বলেছি কেন এনেছ, সে তো মরে গেছে। তাৎক্ষনিক তারা পান্নার মৃত দেহটি এ ডাক্তারের ফার্মেসীর সামনে রাস্তায় ফেলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। রাতেই ঘটনাটি জানাজানি হলে গেলে স্বপনের অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা পান্নার লাশ বাড়ির উঠানে এনে রাখে। সাংবাদিক ও পুলিশের অনুরোধক্রমে স্থানীয় মহিলারা পান্নার মৃতদেহ দেখে তথ্য প্রদান করে যে, মারধরের আঘাতে তার দু’ঘাড়, গলায় নিলা-ফুলা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে। পান্না একই ওয়ার্ডের পাশাপাশি তুলাতুলী গ্রামের সিকদার বাড়ির আবুল বাশারের মেয়ে। সকালে তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে পিত্রালয়ের আত্মীয় স্বজন ঘটনা স্থলে ছুটে আসলে এক হৃদবিদারক কান্নার ঢল নেমে আসে। পান্নার লাশ এক নজর দেখার জন্য এলাকার শত শত লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পান্নার ছোট ভাই সুজন জানান, সে ১৫ দিন হয় প্রবাস থেকে ছুটিতে বাড়িতে আসে। তার ২৩ অক্টোবর শুক্রবার বিয়ের দাওয়াত নিয়ে বোন পান্নার বাড়িতে আসলে যৌতুক লোভী স্বামী ৫‘ হাজার টাকা না দিলে, সে বিয়েতে যাবে না বলে বায়না ধরে। এক পর্যায়ে সুজন তাদেরকে বিয়েতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং টাকা দেবে বলেও আশ্বাস প্রদান করেন। শুক্রবার তারা বিয়েতে গেলেও সুজনের ব্যস্ততার কারনে টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় শনিবার ঘাতক স্বপন ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী কে নিয়ে নিজ বাড়ীতে চলে এসে ওই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায়। সুজন আরও জানায়, ২০০১ইং সালে স্বপনের সাথে বোন পান্নার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবীতে বহু নির্যাতনের মধ্যেও সে স্বামী ঘর-সংসার করে আসছে। বেশ কয়েকবার তাদের চাহিদামত বোনের শান্তির জন্য টাকাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঘাতকরা এর পরও আমার বোনকে বাঁচতে দেয় নি। পান্নার শ্বশুর বাড়ি এলাকার গ্রাম পুলিশ সফিকুল ইসলাম জানান, অন্য ১০টি বাড়ির মধ্যে পান্নার মত একটি ভাল মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারা মেয়েটার প্রতি বহু অন্যায়-জুলুম নির্যাতন করেছে এবং বেশ ক’বার দেন-দরবারও হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে পান্নার ভাই সুজন জানান। এলাকাবাসী পান্না হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।