চাঁদপুর জেলাধীন কচুয়া উপজেলার বালিয়াতলী গ্রামের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাচাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে জেঠাতো ভাইয়ের করুণ মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলাকে পুজি করে কচুয়া পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহাবুব নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য আসামীদের বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানো তালা মেরে তাদেরকে বের করে দিয়েছে। যুবলীগের নামধারী নেতরা পর পর দুইদিন দুই ভাইকে ফিল্মি ষ্টাইলে অপহরণ করে তুলে নিয়ে আটকে রেখে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে মুক্তিপন পাওয়ার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে শুক্রবার কুচয়া বানীয়াতলী গ্রামের মিয়াজি বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৩শে মে দুপুর ১২টায় হঠাৎ কাল বৈশাখির টনের্ডো মহাশেন আসার আগ মুহুর্তে অলি উল্লাহ মিয়াজীর ছেলে রিয়াদ (২৮) তার চাচা হাবিবউল্লাহ মিস্ত্রির ঘর থেকে
বাড়ির উঠানে শুকানো ধান থুবানোর জন্য তাওরা নিয়ে আসে। এসময় ধান থুবানো পাউরাটি রিয়াদ ভেঙে ফেলে। এই নিয়ে রিয়াদের সাথে তার জেঠা হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির ছেলে ইসমাইল এর সাথে বাকবিদন্ড সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইসমাইল ভাঙা পালাটি দিয়ে রিয়াদের মাথায় আঘাত করেন। অনাকাঙ্কিত এই ঘটনায় আহত অবস্থায় রিয়াদকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩দিন রিয়াদের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় রিয়াদের বাবা অলি উল্লাহ মিয়াজী বাদী হয়ে কচুয়া থানাায় ইসমাইলকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পর পুলিশ ইসমাাইলকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। প্রায় ৬ মাস কারাভোগের পর সে জামিনে বেরিয়ে আসে। হত্যা মামলা ঘটনাটি পুজি করে এলাকার শালীশিরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য শালিশী বৈঠকের নামে উভয়পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাাতিয়ে নিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখে। বেশ কয়েকবার শালিশী বৈঠক হওয়ার পর মামলার বাদী অলি উল্লাহ ও তার ছেলেরা মামলা উঠিয়ে নেওয়ার নামে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির বসতঘর ও সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য তাদেরকে বলেন। বাদীর কথামতো শালিশীরা হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রিকে তার ৩৯ শতাংশ সম্পত্তি তার বড় ভাই অলি উল্লাহ মিয়াজীকে রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়। বিনিময় অলি উল্লাহ মিয়াজী তার ভাইকে পৌরসভার বাইরে ধান ক্ষেত্রের কম মূল্যের ১৫ শতক সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য বলে। শালিশী বৈঠকে সিদ্ধান্তক্রমে কচুয়ার সমাজসেবক ও ঢাকায় কেমিক্যাল ব্যবসায়ী হাজী আঃ জলিলের কাছে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির তার ৩৯ শতাংশ সম্পত্তি পাওয়ার করে দিয়েছেন। মামলা তুলার পর সেই সম্পত্তি হাজী আঃ জলিল অলি উল্লাহ মিয়াজীকে রেজিষ্ট্রি করে দিবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত অলি উল্লাহ মিয়াজী না মেনে মামলা তুলার আগে সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য তার ভাই হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রিকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে। পরে অলি উল্লাহ কচুয়ার পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহাবুবের সরনাপন্ন হয়ে তার ভাইয়ের কাছ থেকে সম্পত্তি লিখে নেওয়ার জন্য বলে। গত বুধবার দুপুরে পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহাবুব ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার সহযোগী বোরহান, জিন জাকির, শাহাদাত, কাশেম ও মোস্তফা কে নিয়ে মটরসাইকেল যোগে কচুয়া উত্তর বাজার সিএনজি ষ্ট্যান্ড হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির দোকানে এসে দোকান তালা মেরে তার ছেলে ইউছুফ কে জোর পূর্বক মটরসাইকেলে উঠিয়ে অপহরন করে নিয়ে যায়। বিনিময় হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রি ৩৯শতাংশ লিখে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। পরে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপন দেওয়ার পর তাদের কাছ থেকে রাতেই ইউছুফকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির ছেলে ইসমাইলকে উত্তর বাজার থেকে একই কাদায় তুলে নিয়ে কচুয়া বিশ্বরোড মর্ডান হাসপাতালের সামনে সৌদিয়া হোটেলের ২য়তলায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায়। দিনভর আটকে রাখার পর রবিবারে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির উল্লেখিত সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার কথা বলে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। কচুয়া যুবলীগের নামধারী নেতারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে নিজেরা সন্ত্রাসী ভূমিকায় হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির ২ ছেলেকে অপহরণ তাদের দোকানে তালা বালিয়াতলী গ্রামের ১নং ওয়ার্ড মিজি বাড়িতে গিয়ে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির বসতঘরে তালা মেরে তার স্ত্রী সন্তানকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ও গুঞ্জন ছড়িয়ে পরে। শুক্রবার দুপুরে কচুয়া উত্তর বাজার সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির দোকানপাট ও বসতঘর ও সম্পত্তি আত্মসাত করার জন্য হত্যা মামলার ঘটনাকে পুজি করে রাজনৈতিক দলের নামধারী নেতার নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে ফিল্মি ষ্টাইলে দোকানে তালা ও ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। উত্তর বাজারের বেশ কয়েকজন দোকানদার জানায় নর্বযুবলীগের সভাপতি মাহাবুব ও তার দল সন্ত্রাসী কায়দায় কচুয়ায় এই ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটিয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ী ও মানুষদের জিম্মি করে তারা চাঁদাবাজি, অন্যের সম্পত্তি দখল, মারামারি করছে। তাদের ভয়ে এলাকার জনসাধারণ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ কচুয়াবাসী। এব্যাপারে পৌরযুবলীগের সভাপতি মাহাবুব মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলে হত্যা মামলার ঘটনা সমাধান করার লক্ষ্যে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রি ও তার ভাই অলি উল্লাহ কে নিয়ে এলাকার শালিশীরা বেশ কয়েকবার বৈঠকে বসে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি করে না দেওয়ায় শালিশীরাই দোকানে ও বসতঘরে তালা মেরেছে। অপহরণের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি এরিয়ে যায়। গত কয়েকদিন যাবত বালিয়াতলী গ্রামে হাবিবুল্লাহ মিস্ত্রির ও তার ভাই অলি উল্লাহ মিস্ত্রির পারিবারিক ঘটনা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার গুঞ্জন ছড়িয়ে পরেছে। কারণ যুবলীগের নেতারা যেভাবে হাবিবুল্লার বসতঘর তালা মেরে বের করে দিয়েছে তাতেই এলাকার মানুষ তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত। যেহেতু আদালতে মামলা চলমান সেহেতু আদালতে মামলার রায় হবে। তারা আইন হাতে নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এই ঘটনা করেছে।
শিরোনাম:
রবিবার , ২৫ মে, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।