মনিরুজ্জামান বাবলু
‘স্যারে মারে, মায়ে মারে। এ্যাহানে হে থাকতে চায়না। এই পর্যন্ত আট বার পালাইছে। দুপুরে সবাই যখন গোসল করতে গেছে তখন পালাতে গিয়ে নিচে পড়ে গেছে’Ñ কথাগুলো বলেছেন ৫ তলা থেকে পড়ে প্রাণে বেঁচে যাওয়া শিশু সাহিনুরের ভাই সাজিদ।
এই দুই ভাই হাজীগঞ্জ কাওমী মাদ্রাসার নজরানা শাখার ছাত্র। তারা উপজেলা বাকিলা ইউনিয়নের কাপাইকাপ মিজি বাড়ীর মহসীন মিজির ছেলে।
রবিবার দুপুর ১২ টায় বাড়ীতে যেতে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে এই মর্মাান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়। সে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মাদ্রসার মোহতামিম আবদুর রউফ বলেন, ‘কর্তব্যরত ডাক্তার সাফিনুরকে আশংকামুক্ত বলেছেন। তার হাত-পা-মাথা কোথাও তেমন সমস্যা নেই। কোন প্রকার অস্ত্রপচার করতে হবে না। শুধুমাত্র নাক দিয়ে কিছুটা রক্তপাত হয়েছে। শরীরের বড় ধরনের জখম নেই। ৫ তলা থেকে পড়েও শিশুটির মারাত্মক কিছু না হওয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তার উপর শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি।’
জানতে চাইলে মানবসমাজকে সাক্ষাতকারে সাফিনুরের ভাই সাজিদ বলেন, দিনে দুইবারও পালিয়েছে সাফিনুর। দুপুরে খাবারের সময় অথবা বিকেলে পালাতো। পালিয়ে মামা-খালা অথবা গ্রামের বাড়ীতে চলে যেতো। তখন মা মারতো আবার মাদ্রাসায় আসলে কাওমী মাদ্রাসার নজরানা শিক্ষক কামাল হোসেন বেত দিয়ে মারতো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজীগঞ্জ কাওমী মাদ্রাসার এক ছাত্র বলেন, শিশুটির বাবা বিদেশ থেকে এসেছে খবর শুনে দুই সপ্তাহ আগে (শুক্রবার বিকেলে) পালিয়ে বাড়ী যায়। পরে তার মা আবার মাদ্রাসায় নিয়ে আসে।
শিশুটিকে আহত অবস্থায় হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আশংকাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকায় রেফার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের প্রভাষক বেনজির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের মাঠ থেকে শিশুটিকে মাদ্রাসার ৫ তলা’র রোলিংয়ের সাথে ঝুলন্ত অবস্থা দেখে ডাক-চিৎকার শুরু করি। তারপর মূর্হূতের মধ্যেই শিশুটি দ্বিতীয় তলা এটিএম বুথের উপরে থেতড়ে পড়ে। ওইসময় শিশুটিকে উদ্ধার করতে সহপাঠিরা চেষ্টা করেও ধরে রাখতে পারেনি।
মাদ্রাসার নজরানা শাখার শিক্ষক মাওলানা ইব্রাহিম বলেন, সকালে নাস্তা ও ভাত খেয়ে পড়া শেষে দুপুরে গোসলের সময় সে বারান্দায় যায়। ওইসময় রোলিংয়ের উপর থেকে ছিটকে পড়ে।
হাজীগঞ্জ থানার এসআই মান্নান ঘটনাস্থাল পরির্দশন করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ এই মাদ্রাসা থেকে আরো এক ছাত্র ৭ তলা থেকে ৫ম তলা পড়ে ইসলামীয়া মর্ডাণ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
শিরোনাম:
শনিবার , ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৩ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।