ফাহিম শাহরিণ কৌশিক খান =
চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলওয়ে টিকেট নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেলওয়ের বুকিং ক্লার্ক সব টিকেট কন্ট্রাক করে কালোবাজারীদের মাধ্যমে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে। সামান্য একজন নিরাপত্তা প্রহরী প্রতিদিন কন্টাকে টিকেট বিক্রি করে ও রেলওয়ের পরিত্যক্ত কোয়াটার দখল করে অন্যত্র দখল বিক্রি করে কোটিপটি বনে যাচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঘরমুখি মানুষরা নদী পথে ঢাকা ও বরিশাল থেকে চাঁদপুরে এসে চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য রেলস্টেশনে টিকেট না পেয়ে কালোবাজারীর হাত থেকে অধিক মূল্যে ক্রয় করছে। চাঁদপুর চট্টগ্রামের রেলপথে উন্নত সেবা দেবার লক্ষে সরকার ইতিমধ্যে যাত্রীদের জন্য স্পেশ্যাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। সম্প্রতি চাঁদপুর-৩ আসনের এমপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথকে উন্নত করার লক্ষে শত কোটি টাকার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে দু’টো ডেম্যু ট্রেন চাঁদপুর-কুমিল্লা যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য এনে দিয়েছেন। সরকার রেল যাত্রীদের সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের ইমেজ ক্ষুন্ন করার জন্য রেল বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে রেলের টিকেট কালোবাজারীদের মাধ্যমে পাচার হয়ে যাচ্ছে। রেলের যাত্রীরা বুকিং ক্লার্কের কাছ থেকে টিকেট না পেয়ে দ্বিগুণ হারে কালোবাজারীদের কাছ থেকে টিকেট ক্রয় করছে।
একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, চাঁদপুর রেলওয়ের বুকিং ক্লার্ক সালাম ও রফিকের মাধ্যমে চাঁদপুর-চট্টগ্রামের টিকেট কালোবাজারীদের কাছে পাচার হচ্ছে। তারা দু’জন তৃতীয় শ্রেণীর দেড়শ’ টাকার টিকেট ১শ’ ৮০ টাকায় কালোবাজারীদের কাছে বিক্রি করছে। মূলতঃ টিকেটগুলোর মধ্যে জিআরপিকে ১৫টি, নিরাপত্তা বাহিনীকে ২০টি, সহকারী স্টেশন মাস্টার ৫টি, পয়েন্ট ম্যানকে ৩টি, ট্রেন ক্লার্ক কালা সফিক ৫টি, নিরাপত্তা বাহিনীর নুরুল হককে প্রতিদিন ২০টি। এছাড়া বাকিগুলো নিরাপত্তা বাহিনী কালাম স্থানীয় কয়েকজন চোরা কারবারীদের মাধ্যমে টিকেট বিক্রি করে। সূত্রটি আরো জানায়, রেলওয়ের নিরাপত্তাবাহিনীর খ-কালীন দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও তা অমান্য করে নুরুল হক ও কালাম টিকেট কন্ট্রাকে দ্বিগুণমূল্যে বিক্রি করার জন্য প্রতিদিন রাতে ডিউটি করে। নিরাপত্তাবাহিনীর কালাম ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে রেলওয়ের পরিত্যক্ত কোয়াটার দখল করে ও টিকেট কালোবাজারীর মাধ্যমে কন্ট্রাকে বিক্রি করে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কালাম টিকেটগুলো বুকিং কন্ট্রাকের কাছ থেকে এনে যমুনা রোডের কালাম, শাহজাহান খান ও জব্বরসহ ৭/৮জন কালোবাজারীর মাধ্যমে দ্বিগুণমূল্যে বিক্রি দিচ্ছেন। বিক্রির টাকা নিজেরাই ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে বুকিং ক্লার্ক সালামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে সে জানান, রেলওয়ের টিকেট কিভাবে কালোবাজারীরা বিক্রি করে তা জানা নেই। মূলতঃ চাঁদপুরের যাত্রীদের জন্য ১ম শ্রেণীর ৩৭টি, চেয়ার ৫৪টি, ২য় শ্রেণী ১৩০টি সিট বরাদ্দ রয়েছে। ১ম শ্রেণী ২৪০টাকা, চেয়ার ১৮০ টাকা ও ২য় শ্রেণী ১৫০টাকা মূল্যে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে। রেল যাত্রীদের অভিযোগ, রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম রেলওয়ের টিকেট সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করতে পারছেনা। কালোবাজারীরা টিকেটগুলো পূর্বে নিয়েই যাত্রীদের কাছে অধিক মূল্যে বিক্রি করছে। রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনেকাংশে কমে যাবে দুর্নীতি।
শিরোনাম:
শনিবার , ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ১২ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।