মিজান লিটন মেঘনা নদীর চাঁদপুর সীমানার মতলব ষাটনল হতে হাইমচর ও হাজীমারা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার নৌপথ ক্রমান্বয়ে অনিরাপদ হয়ে উঠছে। একের পর এক ঘটছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌকা, ট্রলার ও কার্গোতে ডাকাতি। চলছে চলন্ত নৌযানে চাঁদাবাজি, জেলেদের মাছ, জাল, ইঞ্জিন লুট এবং চোরাচালান। নৌ ভ্রমণে বের হওয়া নৌকা যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটছে। ট্রলার যাত্রীদের কেড়ে নেয়া হচ্ছে সর্বস্ব। ডাকাতের কবলে পড়ে ব্যবসায়ীদের নগদ অর্থ ও মালামাল খোয়াতে হয়। আর এসব সংঘটিত হচ্ছে চাঁদপুর নৌসীমানার বিভিন্ন স্থানে। অথচ নৌনিরাপত্তর জন্য রয়েছে একাধিক নৌপুলিশ ফাঁড়ি এবং কোস্টগার্ডের মতো আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হাইমচরের নীলকমল, চাঁদপুর সদরের আলুরবাজার, চাঁদপুর নৌটার্মিনাল, মতলবের মোহনপুরে রয়েছে চাঁদপুর পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন নৌপুলিশ ফাঁড়ি। এসব থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নদীতে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে জনমনে এখন সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৪টি যাত্রীবাহী ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। বাদ যায়নি বর যাত্রী ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এসব ডাকাতির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি। লুট করে নিয়ে যাওয়া নগদ অর্থ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কারও উদ্ধার হয়নি। জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে শতাধিক বর যাত্রী চর এলাকায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফিরছিলো। এ সময় পীড বোটের সাহায্যে একদল সশস্ত্র ডাকাত বরযাত্রীদের ট্রলারে হামলা চালিয়ে ১০/১৫ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থ, মোবাইল ফোনসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার দু দিন আগে শরীয়তপুর মোল্লা বাজার থেকে যাত্রীবাহী একটি ট্রলার চাঁদপুর আসার পথে ডাকাতের হামলার শিকার হয়। ওই ট্রলারে চাঁদপুর মাছ ঘাটের মৎস্য বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি সেকান্দর কোম্পানীও ছিলেন। যমুনা রোডের বাসিন্দা মুরগী ব্যবসায়ী রহিমের নগদ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায় ডাকাতরা। দু দিনের ব্যবধানে দুটি ট্রলারে ডাকাতি হয়। এর কিছুদিন আগে চাঁদপুর নদী বন্দরের পুরাণবাজার থেকে সকালে যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ঈদগাহ ফেরিঘাটের দিকে রওনা হলে নৌডাকাত সে ট্রলারে গণডাকাতি করে। যাত্রীদের কাছ থেকে ডাকাতরা সব কেড়ে নেয় এবং ডাকাতের হামলায় কয়েকজন যাত্রী আহত হয়। এ ঘটনার কিছুদিন পূর্বে চাঁদপুর মাছ ঘাটে মাছ বিক্রি করে টাকা নিয়ে নামার কালিগঞ্জে মাছ কেনার জন্য যাওয়ার পথে নৌডাকাতরা ট্রলারে হামলা করে চাঁদপুর শহরের মাদ্রাসা রোডের ইয়াছিনের ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। হরিণা-আখনের হাট চর এলাকা দিয়ে সেদিন ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের কেউ কেউ চিনতে পেরেছে। মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী নেতাদের হস্তক্ষেপে এবং দেন দরবার ও মামলা করার ভয় দেখিয়ে কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়েছিলো বলে চাঁদপুর মাছঘাট সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া শরীয়তপুরের কাচিকাটা মেঘনার চর এলাকায় গবাদি পশুর খাদ্য বিক্রি করে যাবার পথে নৌকায় ডাকাতি করে সর্বস্ব নিয়ে যায় ডাকাতরা। তরপুরচণ্ডী ইউপির সাবেক মেম্বার আঃ মালেক খন্দকার জানান, গত ২৭ মে কল্যাণপুর ইউনিয়নের চর নন্দলাল এলাকায় একটি জেলে নৌকায় ডাকাতি হয়েছে। ডাকাতরা ৫ জন জেলেকে মারধর করে জাল ও ইঞ্জিন লুট করে নিয়ে যায়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিন সন্ধ্যায় চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় চড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন যাত্রী নৌ-ভ্রমণে যায়। শেষ বিকেলে রাজরাজেশ্বর চর এলাকা থেকে শহরে আসার পথে যাত্রীবেশী অপর একটি ট্রলার ওই দুটি ট্রলারে গণডাকাতি করে। যাত্রীদের স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল, নগদ টাকাসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল এ ঘটনায় লুট হয়। ডাকাতরা সর্বস্ব কেড়ে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, অনেক নারী ও কলেজ ছাত্রীরও শ্লীলতাহানি করেছে। এমন ঘটনার শিকার হাজীগঞ্জের একই পরিবারের দুই বোন, শহরের এক কলেজ ছাত্রীকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। পুলিশ সুপারকে এ ঘটনা অবহিত করা হলে তিনি নৌপুলিশের আইসি জাহিদকে ঘটনা সম্পর্কে জানার জন্য পাঠিয়েছিলেন। জাহিদ সাহেব হাসপাতালেও গিয়েছিলেন। এ ডাকাতির ঘটনায় আরো বেশ কিছু যাত্রী আহত হয়। এ ঘটনাটি সেদিন শহরে বেশ আলোচিত ছিলো। নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের তেমন কোনো ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়নি। উল্লেখিত ঘটনা ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরো অনেক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও কী হবে প্রশাসনকে জানিয়ে, আরো হয়রানি হতে হবে- এমনটা ভেবে ক্ষতিগ্রস্তরা চুপসে যাচ্ছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার আখনের হাট ও হরিণা চর এলাকা, ঈদগাহ-আলুরবাজার, পুরাণবাজার, রনাগোয়াল-হরিসভা, রাজরাজেশ্বর চর, কানুদি চর, মতলবের মোহনপুর, বোরো চর, কাছিকাটা, হাইমচর উপজেলার মাঝের চর, চরমণিপুর, কাটাখালী চর এসব এলাকা দিয়ে নৌডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এক শ্রেণীর জলদস্যু লঞ্চঘাট ইজারার নাম করে নদীতে পণ্য ও মালামাল বহনকারী ট্রলার, বালুবাহী বাল্কহেড, কাঠের ট্রলারে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে। এরা সুযোগ বুঝে যাত্রীবাহী ট্রলারেও ডাকাতি করছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। যাত্রী পারাপারে স্পীড বোট চলাচল করায় ডাকাতির ঘটনা আরো বেড়ে যায়। ইলিশ-জাটকা অভিযানের নাম করে প্রশাসনের ভুয়া পরিচয়েও অনেক সময় ডাকাতি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদীতে বালু উত্তোলন কাজের নামেও কিছু ট্রলার চলাচল করে। এ কাজের নাম ভাঙ্গিয়ে নদীতে নেমে ডাকাতি করেও ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এ ছাড়া জাহাজ থেকে চোরাই পণ্য পাচার কাজে ইঞ্জিন চালিত নৌকার ব্যবহার হচ্ছে। অনেক সময় চোরাচালানীদের ব্যবহৃত ট্রলার ও নৌকা নৌডাকাতির কাজ সুযোগ বুঝে সেরে নিচ্ছে এমন অভিযোগও উঠেছে। চোরাচালানীদের ব্যবহৃত একটি ট্রলার কোস্টগার্ডের ধাওয়া খেলে এক চোরা কারবারী নদীতে পড়ে যায়। গত ১৬ মার্চ শনিবার আমিরাবাদ এলাকায় মেঘনা নদী থেকে ইসমাইল ঢালী (৩৮) নামে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়। আরেক সূত্র জানিয়েছে, ভোলা থেকে তরমুজবাহী ট্রলারেও এবার ডাকাতি হয়েছে। তরমুজ লুট করে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য হরিণা ফেরিঘাটের অনেক যাত্রী দূর থেকে দেখেছে। প্রশাসনের নদী-ঘাট ইজারার নাম ভাঙ্গিয়ে নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, প্রশাসনের অনুমতিবিহীন বেপরোয়া পীড বোট চলাচল, চট্টগ্রাম-ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রূটে চলাচলকারী বিভিন্ন জাহাজ থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান, মাছের পাইকারী ক্রেতা সাজাসহ বিভিন্ন কারণে চাঁদপুর নৌপথ অনিরাপদে পরিণত হয়েছে বলে অভিমত অভিজ্ঞ মহলের। নৌপুলিশ এসব থেকে ভাগ পায় বিধায় তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছে। অভিযোগ উঠেছে, জাটকা ও ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের সময় কিছু অসাধু লোকের শুরু হয় রমরমা আটক বাণিজ্য। প্রতি জেলে নৌকা থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আদায় করে। অনেক সময় আটকের নাম করে মাছও লুট হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের অনৈতিক ভূমিকায় সাহস পেয়ে জলদস্যুরা বিভিন্ন পন্থায় মেঘনা নদীতে ডাকাতি করে যাচ্ছে। এখন আশঙ্কা যাত্রীবাহী লঞ্চে কবে ডাকাতি ঘটে যায়। এক সময় চাঁদপুর নৌসীমানায় ব্যাপক নৌডাকাতি হতো। সাধারণ মানুষের জিজ্ঞাসা : আগের পর্যায়ে কি ডাকাতি বেড়ে যাচ্ছে? কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ কিছুতেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না। নিরাপদ নৌপথের নিশ্চয়তা দিতে হবে তাদেরকেই। অনেকে মনে করছেন, ডাকাতি মামলায় ছাড়া পেয়ে জলদস্যুরা পুনরায় ডাকাতির কাজে নেমে পড়ছে। তাও খতিয়ে দেখা দরকার। চাঁদপুর নৌফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি নৌডাকাতির ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি দূরে থাক একটি মামলাও হয়নি। ডাকাতরা নৌযানে ডাকাতি করে শরীয়তপুর চর এলাকা দিয়ে এবং মোহনপুরের পশ্চিমে পদ্মা নদী দিয়ে মাওয়ার দিকে নিরাপদে চলে যায়। মাওয়া থেকে কিছু পীড বোট এবং দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্্রলার চাঁদপুর নৌ সীমানায় ঢুকে ডাকাতি করছে বলেও একটি সূত্র জানায়। সূত্রটির মতে, নৌপুলিশ তা জানা সত্ত্বেও নদীতে অবস্থান না করে ফাঁড়িতে তাদের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ তৎপর হলে ডাকাতি রোধ সম্ভব। পুলিশ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। যাত্রী সাধারণ ও ব্যবসায়ীরা জানান, চাঁদপুর প্রাচীন একটি নৌবন্দর। পণ্য আনা-নেয়াসহ ব্যবসায়িক কাজের জন্যে বন্দরে চাঁদপুরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন উপজেলাই শুধু নয়, পাশ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার অসংখ্য মানুষ নদী পথে যাতায়াত করে থাকে। বিশেষ করে চাঁদপুরের উপর দিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু হওয়ায় দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের চাঁদপুরে যাতায়াত করতে হয়। শরীয়তপুর এবং মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের মানুষের আসা-যাওয়া চাঁদপুরের সাথে আরো বেশি। ইলিশের পাইকারী বাজার হিসেবেও চাঁদপুর মাছ ঘাট অনেক পরিচিত। এসব গুরুত্বের কারণে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে যাত্রীদের নিয়মিত যাতায়াত করতে হয় এবং ব্যবসায়ীরা মালামাল ট্রলারে আনা-নেয়া করতে হয়। এ সুযোগে চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ-শরীয়তপুর নৌ সীমানায় জলদস্যুরা সংগঠিত হয়ে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রলারে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছে। ডাকাতের কবলে পড়া ট্রলার মাঝি ও যাত্রী সূত্রে জানা যায়, ভোর বেলা চাঁদপুর থেকে এবং সন্ধ্যা হয় হয় এমন অবস্থায় চরাঞ্চলে যাওয়া-আসার পথে মেঘনা নদীর উপর জেগে উঠা চরের নির্জন স্থানে বেশির ভাগ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। নৌপুলিশের কোনো টহল তারা দেখতে পায় না। কোস্টগার্ড নদীতে বিভিন্ন সময় নামতে দেখলেও তারা কারেন্ট জাল, জাটকা ইলিশ ও জেলেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। চাঁদপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম জানান, সদর উপজেলার নৌপথে কোনো ডাকাতি হয়নি। ছোট-খাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও একজন লোককেও খুঁজে পাওয়া যায়নি অভিযোগ করার। কেউ অভিযোগ করতেও আসেনি। তিনি আরো জানান, ডিসি-এসপির নির্দেশে নদীতে পীড বোট চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ৬টি পীড বোট আটক করা হয়েছিলো। তারা আর বোট চালাবে না লিখিত দেয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ৭ হাজার টাকা করে জরিমানা আদায় করে পীড বোটগুলো ছেড়ে দেয়। এনডিসি মোঃ আমিনুল ইসলাম মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। চাঁদপুর রিভার এসএসপি’র দায়িত্বে থাকা নবাগত এএসপি চাঁদপুর সদর সার্কেল হেলাল উদ্দিন চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, ১৬ মে চাঁদপুর জয়েন করেছি। চাঁদপুর নৌপথে নৌযানে ডাকাতির ঘটনা আমার জানা নেই। এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মানুষের জীবন ও যাতায়াত আরো নিরাপদ যাতে হয় সেমতে নৌপুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হবে। তিনি জানান, নৌপথের নিরাপত্তা অধিক নিশ্চিত করতে হলে যে সব লজিস্টিক সাপোর্ট থাকা দরকার তা সীমিত। তারপরও নিরাপত্তা জোরদারে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। চাঁদপুর কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার লেঃ এম হাবিবুর রহমান (এক্স) বিএন জানান যে, নৌনিরাপত্তায় কোস্টগার্ড ১০০% দায়িত্ব পালন করছে। তবুও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ পাওয়ায় সম্প্রতি ৫টি পীড বোট আটক করেছেন। নিয়মিত টহলের বাইরেও বিশেষ অভিযান চালাচ্ছেন। মেঘনা নদীতে চাঁদাবাজি হয় এমন অভিযোগ পেয়ে নারায়ণগঞ্জ পাগলা কোস্টগার্ড স্টেশনের সহযোগিতা নিয়ে চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া নৌসীমানায় গত ২৯ মে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১০ জন চাঁদাবাজকে এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার আটক করেছেন। অনিরাপদ নৌপথ কোস্টগার্ডের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন থাকার সাথে তিনি দ্বিমত পোষণ করেন। নদীর নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে চাঁদপুরের কাটাখালী ও মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আরো দুটি কোস্টগার্ড স্টেশন হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর জানিয়েছেন, চাঁদপুর নৌসীমানায় বিচ্ছিন্ন কিছু চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি যে ঘটছে না তা অস্বীকার করছি না। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কোস্টগার্ডের সাথে সমন্বয় করে আমরা অপরাধীদের ধরার জন্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। নৌপুলিশের তৎপরতা বাড়ানোরও নির্দেশ রয়েছে। তিনি আরো জানান, বেশির ভাগ নৌডাকাতির ঘটনা ষাটনল, মুন্সীগঞ্জ নৌসীমানায় হচ্ছে। কিছুদিন আগে আমরা দু ডাকাতকে আটক করেছি। ডাকাতির মামলাও হয়েছে। অন্য জেলার কোনো পীড বোট এখানে চলাচলের জন্য আমরা এলাউ করছি না। বাইরের পীড বোট চলাচল করায় ডাকাতি, ছিনতাই বেড়েছিলো। আমরা সেটাও বন্ধ করে দিয়েছি।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।