চাঁদপুর নিউজ ডেস্ক=
চাঁদপুর-হাইমচরের এমপি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির অভিযোগ, খালেদা জিয়া পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছেন। তার দাবি, বিরোধী দলীয় নেত্রীর সেই ইচ্ছে বাংলাদেশে পূরণের আর কোনো সুযোগ নেই। মহামান্য আদালতের রায়েও খালেদা জিয়াকে সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আবারো তিনি সংবিধানের পরিপন্থী উল্লেখ করে সাংবিধানিক নিয়মে নির্বাচন হবে বলে দাবি করেন। তারপরও যদি তিনি মীমাংসা চান তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বসার সুযোগ এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেত্রী এ দেশের মানুষের উপর ভরসা না রেখে নিজের মতো করে ক্ষমতায় বসতে চান। এটা কখনোই সম্ভব হবে না।
দীপু মনি বলেন, বেগম জিয়া কথায় কথায় ইসলামের দোহাই দেন। অথচ ৩০ লাখ মানুষকে হত্যার জন্যে যারা দায়ী সে জঘন্য যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবি করেন। এ বিষয় তুলে ধরে তিনি তার কাছে জানতে চান, যদি তা-ই হয় তবে ন্যায় বিচার কোথায় থাকে। আর তা না থাকলে ইসলামইবা কোথায় থাকে? তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪২ বছরে ১৩ বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিলো। বাকি সময় দেশ চালিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধীরা। এর মধ্যে খালেদা ছিলেন ১০ বছর। ওই সময়ে এ দেশে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছে। বাংলা ভাইয়ের মতো জঙ্গী গোষ্ঠী সৃষ্টি হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে মারতে চেয়েছিলো। ওই ঘটনায় আইভী রহমানসহ ২৪ জনকে হত্যা করেছে। ২ জন এমপি, ১ জন মন্ত্রীসহ শ’ শ’ মানুষ খুন করেছে। দেশবাসীকে খাম্বা দিয়েছে, বিদ্যুৎ দেয় নেই। বরং শেখ হাসিনার তৈরি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুনে পুড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঘর-বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট করেছে। অথচ গত ৫ বছরে আওয়ামী লীগ একটা ঘটনারও প্রতিশোধ নেয়নি। ৯০ ভাগ আসন নিয়ে নির্বাচিত হয়েও একটি আনন্দ মিছিল করেনি। কারণ, নৌকা উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তির প্রতীক।
বিরোধী দলীয় নেত্রীকে সংবিধান পড়ার তাগিদ দিয়ে দীপু মনি আরো বলেন, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার ক্ষমতায় আছে। সাংবিধানিক নিয়মেই শেখ হাসিনার সরকার পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তিনি পুনরায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী অসাধারণ উদারতা দেখিয়ে বিরোধী দলের নেত্রীকে সংলাপের আহবান জানিয়েছেন। অথচ তিনি আসলেন না। কারণ, তিনি শান্তি চান না, সংঘাত চান, নৈরাজ্য চান। সুতরাং ১৪ দলের প্রত্যেকটি নেতা-কর্মীকে সকল আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থাকতে হবে। সকল অরাজকতা, নৈরাজ্যের প্রতিবাদ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, যাতে মানুষের শান্তি বিনষ্ট না হয়। তিনি গতকাল হাসান আলী হাই স্কুল মাঠে ১৮ দলের নাশকতার প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের সভাপ্রধানে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইউছুফ গাজী, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহামেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়াজী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্যা আখন্দ, অ্যাডঃ মোঃ জহিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান, পৌর কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াছ, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মোঃ বাবর, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রোমান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শেখ আব্দুল মোতালেব, সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুর রহমান তৃপ্তি প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বহু নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ সভাটি এক পর্যায়ে বিশাল জনসভায় রূপ নেয়।