মিজান লিটন: দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে ভোটাধিকার রক্ষায় গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রায়’ প্রথম শহীদ হয়েছে চাঁদপুরের মানছুর প্রধানিয়া। পুলিশের গুলিতে নিহত মানছুর প্রধানিয়া চাঁদপুর সদর উপজেলার নুরুল্লাপুরের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ গণতন্ত্রের অভিযাত্রা সফল করতে গেলে পুলিশের গুলিতে সে নির্মমভাবে প্রাণ হারায়। তার মৃত্যুর সংবাদ চাঁদপুরে আসলে পুরো এলাকায় শোকের মাতম ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত মানছুরের পিতা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ‘৭১ সালে সশ¯্র পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে আবদুর রাজ্জাক প্রাণ হারাননি। দিয়ে গেছেন স্বাধীন দেশ। সে দেশেই তার নিরস্ত্র সন্তান নিরাপত্তা পায়নি পুলিশের কাছে। রক্ষক হয়ে ভক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেন রাজ্জাকের স্বাধীন করা দেশের পুলিশ। প্রকাশ্য নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করল তার ছেলে মানছুরকে। মানছুরের অপরাধ ছিল সে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে শরিক হয়ে ছিল।
যে গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছিল পাকিস্তানিরা। আজ যখন স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিপন্ন। কেড়ে নেয়া হচ্ছে ভোটের অধিকার, তেমনি সময়েই ঘরে বসে থাকতে পারেননি বনানী বেসরকারি সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের আইন বিভাগের মেধাবি ছাত্র মাছুর প্রধানিয়া। আজ সে তার পিতার স্বাধীন করা দেশে লাশ হয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা তাৎক্ষণিক জানিয়েছিল মানছুর ছিল ছাত্র শিবিরের সাথী। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে সে ছিল অত্যন্ত বিনয়ী। গতকাল ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানছুর ছিল হাস্যোজ্জল। ঢাকার মালিবাগের রেলক্রসে পুলিশের গুলির পর এখন শুধুই স্মৃতি। তার রাজপথের মৃত্যু এখন জানান দিচ্ছে গণতন্ত্রিকামী জনতা এগিয়ে আসো। পৃথিবীতে কোন রক্তই বৃথা যায় না। শীঘ্রই ফিরে আসবে তার পিতার যুদ্ধ করা স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র। যার জন্য ‘৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষ হাসিমুখে জীবন দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবদুর রাজ্জাকের ৪ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে ৬ষ্ঠ ছিল মানছুর প্রধানিয়া। রোববার ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় মানছুর। তার মৃত্যুতে এখন শোকে পাথর হয়ে পড়েছে তার পরিবারের সদস্যসহ পুরো এলাকাবাসী। তাদের সকলের দাবি আর চাই না রক্ত, চাই শান্তি।
সে চাঁদপুর শহরের ব্যাংক কলোনী আবাসিক এলাকায় বড় ভগ্নিপতি রফিকুল ইসলাম ভুট্টোর বাসায় থাকতেন। বিষ্ণুদী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস করে। সে এ বছর ঢাকা সিটি ইউনির্ভাসিটিতে এলএলবি ১ম বর্ষে ভর্তি হয়। বড় ভাই ফয়েজ আহমদ প্রবাসে চাকরি করেন। দ্বিতীয় ভাই মানজুর আহমদ ঢাকায় ব্যবসা করেন। ৪র্থ ভাই মারুফ আহমদ ঢাকায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। ৩ বোন সকলে বিবাহিতা।
নিহত মানছুর ছাত্রজীবনে চাঁদপুরে লেখাপড়া করার সময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িত হয়। মুত্যুর আগ পর্যন্ত হাফেজ মনসুর আহমদ ঢাকা বিমান বন্দর থানার একটি ওয়ার্ডের ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিরোনাম:
সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চাঁদপুর নিউজ সংবাদ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।