* ফার্মেসীগুলোতে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা চিঠি প্রেরণ।
*বিদেশী গরুর পাশাপাশি দেশী গরুতে ব্যবহৃত হওয়ায় ক্রেতা সাধারণ সংশয়ে।
মুসলমানদের ২য় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আযহা। আল্লাহ তায়ালার বিধানমতে ও অশেষ রহমতে দিনটিতে ধনীদের পাশাপাশি গরীবদের গোশত খাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। এমনকি চিকিৎসার জন্য যেসব মুসলমান সারাবছর গরুর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকেন, তারাও উৎসবমুখর এই দিনটির সুবাদে কম করে হলেও একটু গোশত খেয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে কোরবানির গরুর গোশত খাওয়া সকলের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে শুধুমাত্র অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও বিদেশী ষ্টেরেয়েড, ডেস্কামেথাসিন জাতীয় ঔষধ পশুকে খাইয়ে দেওয়ার কারনে। এক্ষেত্রে কোরবানীর পশু ক্রয়ের সময় যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, পশুটিকে ষ্টেরয়েড জাতীয় খাওয়ানো হয়নি, তাহলে উক্ত পশুর গোশত খাওয়া সকলের জন্য নিরাপদ। এ বিষয়ে সাবেক সরকারী প্রানীসম্পদ ডাক্তার ও বর্তমানে প্রাণীসম্পদ ফার্মেসী ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ মিয়ার সাথে আলাপকালে জানা যায় একজন মানুষ যখন দুর্বল কিংবা স্বাস্থ্যহীনতায় ভুগে, তখন ডাক্তার তাকে কিছু ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষুধা বৃদ্ধির জন্য ঔষধ দিয়ে থাকেন, এতে করে স্বাস্থহীন লোকটি ঔষধের পাশাপাশি ঠিকমতো খাওয়া খেলে অনেকটা সুস্থ্য হয়ে যায়। ঠিক পশু ডাক্তারগনও অপেক্ষাকৃত দুর্বল একটি পশুকে ৩-৪মাস পূর্বে পশুর জন্য নির্ধারিত ভিটামিন ট্যাবলেট এর পাশাপাশি গরুর খামারিকে খাওয়ার ম্যানুয়েল দিয়ে দেন, সে অনুযায়ী গরুকে খাওয়ালে গরু অনেকটা মোটা তাজা হয়ে উঠে। সেসব পশুর গোশত খাওয়া কারো জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় এবং এটিই বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। কিন্তু বিগত কয়েক বছর আগে ভারত থেকে আমাদানীকৃত গরুকে বাংলাদেশে পাঠানোর পূর্বে একধরনের ষ্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ খাইয়ে দিত। সাধারণ খাদ্যে প্রয়োগকৃত ফরমালিনের মতো এটিও মানব দেহের ক্যান্সার ও কিডনি নষ্ট সহ নানা রোগ তৈরীতে দ্রুত কাজ করে। সম্প্রতী ভারত থেকে অবৈধ পথে আসা ষ্টেরয়েড, ডেস্কাথেমাসিন জাতীয় ঔষধ দেশের প্রাণীসম্পদ ফার্মেসীর পাশাপাশি সাধারণ ফার্মেসীগুলোতে অনায়াসে বিক্রি করা হচ্ছে। আর গরুর খামারিরাও মানবক্ষতির কথা চিন্তা না করে লাভজনক হিসেব তাদের পোষাকৃত গরুকে খাইয়ে দিচ্ছে। তাই বর্তমানে দেশী-বিদেশী সকল গরুতে এ ঔষধটি প্রয়োগ হওয়ায়
ক্রেতাসাধারণ রয়েছেন সংশয়ে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানা যায় ষ্টেরয়েড ট্যাবলেটি ১৫-২০দিন পূর্বে খাওয়ালে গরুর শরীরের মাংস বৃদ্ধি না হয়ে ফুসফুসে পানি জমে এবং মাংসের ভিতরে পানি ছড়িয়ে যায়, তখন গরুটিতে দেখতে অনেক মোটাাতাজা মনে হয়। আর গরুটি নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে জবেহ করা ছাড়া উপায় থাকে না। এক্ষেত্রে ষ্টেরেয়েড ঔষধ খাওয়ানো গরুটিকে কোন কারনে ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে বিক্রি করথে ব্যর্থ হলে তার জন্যও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অসাধু গরুর খামারী ও ব্যবসায়ীরা কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে মেয়াদী এই ক্ষতিকর ঔষধটি খাইয়ে থাকেন। ইতিমধ্যে প্রাণীসম্পদ ফার্মেসীর পাশাপাশি বড় ফার্মেসীগুলো বরাবরে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ষ্টেরেয়েড জাতীয় ঔষধ বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে নিতিমালা তৈরীর সুপারিশে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠনের জন্য নির্দেশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। কমিটির সদস্যগন ষ্টেরেয়েড জাতীয় ঔষধ ও অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতের গরুমোটাতাজাকরন বিষয়ে প্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞা ও নীতিমালা প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে। বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহল বেশ উদ্দিগ্ন ও ফরমালিন বিরোধী অভিযানের ন্যায় ষ্টেরেয়েড জাতীয় পশুর জন্য অভিযান জরুরী।