মিজানুর রহমান রানা
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)র আয়োজনে গত বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামের সামনে গাছতলে কোলাহলপূর্ণ বিশৃঙ্খল পরিবেশে পেশাজীবী গাড়ি চালকদের প্রশিণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে প্রতি বছর রোড দুর্ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। এই দুর্ঘটনা রোধে বাংলাদেশ সরকারের বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)র আয়োজনে এই কর্মশালার ল্য ছিলো গাড়ি চালকদের উন্নত প্রশিণের মাধ্যমে অনাকাক্সিত দুর্ঘটনা রোধে কাজ করে যাওয়া। সেই ল্েয এ খাতে সরকারের বাজেট অনুসারে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু চাঁদপুরের এই সেক্টরের কর্তাব্যক্তিরা বৃহস্পতিবার যে আয়োজন করেছেন তা ছিলো হাস্যকর পুতুল খেলার মতো। বাস স্ট্যান্ডের তো কোলাহলপূর্ণ রাস্তার পাশে বিশৃঙ্খল পরিবেশে উত্তপ্ত রোদে যেখানে মানুষের কথা মানুষ শুনতেই পায় না সেখানে এভাবে একটি প্রশিণ কর্মশালা আয়োজন দেখে অভিজ্ঞমহল বলেছেন, গাড়ি চালকদের প্রশিণ কর্মশালা যেনো কোনো পুতুল খেলার মতো চাঁদপুর সার্কেলের আয়োজক বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের কাছে।
কর্মশালায় আগত প্রশিণার্থীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, সত্যিকার চালকদের এখানে প্রশিণের জন্যে হাজির করা হয়নি। বরং কর্তাব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজন ও নিকটজনদের নিয়ে এ প্রশিণ কর্মশালার টাকা ভাগাভাগি করে নিজেরা বণ্টন করে নিয়েছে। তার মধ্যে যে ক’জন অপেশাদার সিএনজি চালককে প্রশিণ কর্মশালায় সার্টিফিকেট দেয়ার কথা বলে নিয়ে এসেছে তাদের কাছ থেকে প্রতিজন ৫/৪ হাজার টাকা করে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা আদায় করে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিআরটিএ চাঁদপুর সার্কেলের সহকারী পরিচালক ফারহানুল ইসলামের সাথে সরাসরি কথা বলে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন এসব বিষয়ে কথা বলার সময় নেই। আমি এখন ব্যস্ত। পরে কথা বলা যাবে। অফিস সহকারী আবদুর রহিমের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে ১ হাজার টাকার একটি নোট দিতে চান এবং বিষয়টি নিয়ে লেখালেখির প্রয়োজন নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ প্রতিবেদক টাকা হাতে না নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি রেগে বলেন, আপনাদের যা খুশি তা লিখুন আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।
কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা কোনো করছেন বিষয়টি নিয়ে বিআরটিএর মোটরযান পরিচালক মাহবুব কামাল এর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আসলে এ ধরনের প্রশিণে এমনই হয়। এটি নিয়ে বাড়াবাড়ির কিছুই নেই।
এ বিষয়ে প্রশিণ কর্মশালায় উপস্থিত ক’জন প্রশিণার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সিএনজি অটোরিকশা চালকদের ৮৮ জন প্রশিণার্থী ড্রাইভারের মধ্যে ৩০ জনকে বাদ দিয়ে কর্মকর্তারা তাদের পছন্দমাফিক ব্যক্তিদের নিয়ে এ কর্মশালা পরিচালনা করছেন। এখানে কিছু অযোগ্য ড্রাইভারকে প্রশিণের নামে আইওয়াশ করে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে ড্রাইভিং সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। তারা আরো জানান, তাদের কাছ থেকে সরকারিভাবে বাৎসরিক কর প্রতি বছর ১০ হাজার টাক করে নেয়ার নিয়ম থাকলেও বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা ১৫-২০ হাজার টাকা করে নেন। বলা যায়, বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা এই সেক্টরে যে বিশাল চাঁদাবাজি করে থাকেন তা দেশের সব সেক্টরের দুর্নীতির চেয়েও পরিমাণে বেশি।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ২৫ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।