কটি তাজা প্রাণ ঝড়িয়ে দিয়ে তার মূল্য ধরা হচ্ছে ২ লাখ টাকা। কিন্তু ঝড়ে যাওয়া তাজা সেই প্রাণের পরিবার চায় খুনির প্রকৃত বিচার ও শাস্তি। চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ধনপর্দি গ্রামে গত ২৪ জানুয়ারি স্বামী ও দেবর কর্তৃক খুন হয় এক মাস্তানের জননী রুবি আক্তার (২০)। ৪ বছর পূর্বে রুবি আক্তার ধনপর্দির রামরা দিঘি সরকার বাড়ির জিন্নাহ সরকারের ছেলে সুজন সরকারকে ভালোবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের ১ বছরের মধ্যেই রুবি আক্তার রায়হান নামের এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। স্থানীয়রা ও রুবির পরিবার জানায়, রুবি আত্মহত্যা করেনি। আমরা তার ঝুলন্ত লাশ দেখেছি তাতে রুবি ঘুমানো চকির মধ্যে দু’ পা সমানভাবে ছিলো। একটুও পা উপরে ছিলো না। তাছাড়া রুবি রান্না ঘরে ভাত রান্না করে পানি ঝড়াতে হাড়ি উপুর করে রেখেছিলো। রান্না ঘরের পাশে মাটিতে নখের আচরের দাগ। মৃত রুবির শরীরে মাটি লাগানো ছিলো। এত সব কিছু প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ঘাতক সুজন ও সাইফুলের পক্ষ নিয়ে স্থানীয় একটি চক্র বিষয়টি ধুলোয় মিশিয়ে দিতে জোর চেষ্টা করছে বলে রুবির পিতা আঃ করিম ও রুবির মা তাছলিমা বেগম জানান। গতকাল বুধবার সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, রুবিকে যারা খুন করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালাচ্ছিলো সেইসব খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা চাই। রুবির মতো এই এলাকায় আর কোনো রুবির মতো এই এলাকার মেয়েকে যেনো এভাবে জীবন দিতে না হয়।
তারা আরো জানায়, ২৪ জানুয়ারি শনিবার রুবির দেবর মোঃ সাইফুল ইসলাম ঘটনার দিন চট্টগ্রাম থেকে ভাড়াটে খুনি এনে রুবিকে হত্যা করেছে বলে দাবি জানায়। রুবির খুনের সাথে তার স্বামী সুজন সরকার দেবর সাইফুল ইসলাম সরকার ও শাশুড়ি রহিমা বেগম পলাতক রয়েছে বলে স্থানীয়রা নারী পুরুষসহ এলাকাবাসী জানায়। রুবির বাপের বাড়ি ধনপর্দ্দি গ্রামে গেলে দেখা যায় অসহায় এ পরিবারটি বিচার চেয়ে পাচ্ছেনা। আঃ করিম এক সময় ফেরি করে সিলভার হাঁড়ি পাতিল বিক্রি করতো। বর্তমানে সে বয়সের ভাড়ে নুইয়ে পরেছে। এখন সে এলাকায় ঘুরে টিপকল মেরামতের কাজ করে। সুজন সরকার বর্তমানে ঢাকায়, সাইফুল ইসলাম চট্টগ্রামে আত্মগোপন করে আছে। আর রহিমা বেগম কোথায় আছে তা কেউ জানেনা বলে জানায়। এ ব্যাপারে গত ২ দিন পূর্বে খুন হওয়া রুবির পিতা আঃ করিমের কাছ থেকে শালিশ ও মিমাংসার কথা বলে কাগজে স্বাক্ষর রাখে। তারা রুবির পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে। রুবির পিতা আঃ করিম আরো জানায়, সে এই বিচার চায়না। সে চায় তার মেয়ে রুবির খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। রুবির অবুঝ শিশু সন্তান রায়হান খেলার ছলে থাকলেও সে খুঁজে ফিরছে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়া মাকে। নানীর কোলে থেকেও রায়হানের চোখ দু’টি ছল ছল করছিলো। রুবির ময়নাতদন্ত শেষে পূর্ব খেরুদিয়া নানার বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করা হয়। শিশু রায়হানের চোখে অমানিশার ছায়া।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।