এমরান হোসেন লিটন
শহর এলাকায় ভেজাল বিরোধী অভিযানের কারণে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ভেজাল ও নকল সামগ্রীতে সয়লাব হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় গ্রাম এলাকায় কঠোরভাবে প্রশাসন ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছিল। পরে বর্তমান সরকার আসার পর অদ্যাবধি গ্রামাঞ্চলে আর ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা হতে দেখা যায়নি। প্রতিনিয়ত জেলা শহরসহ উপজেলা সদরে এবং জেলা শহরের নিকটস্থ বাজারগুলোতে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে এবং বিপুল পরিমাণে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ সামগ্রী আটকসহ বিক্রেতাদের নিকট থেকে জরিমানা আদায়সহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।
জেলা শহর ও উপজেলা সদরে ভেজাল বিরোধী অভিযানের কারণে বিভিন্ন কোম্পানীর জেলা উপজেলা পর্যায়ে এজেন্টদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। এজেন্টদের নিজেদের গোডাউনে থাকা ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য সামগ্রী বাছাই করে আলাদা করে এগুলো কম মূল্যে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি করছে। গ্রামাঞ্চলের দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় এসব ভেজাল মেয়াদোত্তীর্ণ সামগ্রী কিনে নিচ্ছে। এসব সামগ্রী ক্রয় করে গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত, অসচেতন সাধারণ লোকেরা প্রতারিত হচ্ছে। এসব সামগ্রী ব্যবহার ও খেয়ে তারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ খেয়ে গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরা মেয়াদোত্তীর্ণ ভেজাল খাদ্য খেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অবিক্রিত অবস্থায় বছরের পর বছর পড়ে থাকা পণ্যের মধ্যে বিস্কুট, চানাচুর, চিপস, নুডুলস, চকলেট, আচার ইত্যাদি খেয়ে গ্রামাঞ্চলের শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া কেমিক্যালের সাহায্যে তৈরি বিভিন্ন রংয়ের মুখরোচক আকর্ষণীয় খাদ্য সামগ্রী খেয়ে শিশুরা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ শিশুদের খাবার দুধ ইত্যাদি খেয়ে শিশুদের পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নকল কসমেটিকস এসব হাট-বাজারের দোকানগুলোতে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানীর পানীয় সামগ্রী অহরহ বেচাকেনা করতে দেখা যায়।
ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা বাজার, গাজীপুর, পাটওয়ারী বাজার, রূপসা বাজার, ধানুয়া বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, গল্লাক বাজার, চাঁদপুর সদরের চৌরাস্তা বাজার, শাহতলী বাজার, সুন্দরদিয়া বাজার, কামরাঙ্গা বাজার, রাজাগাঁও বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ ভেজাল ও নকল পণ্য ও খাদ্য সামগ্রীতে এখন সয়লাব হয়ে গেছে। অভিজ্ঞ মহলের মতে, জনস্বার্থে শহরতলী ও গ্রামাঞ্চলের বাজারে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো প্রয়োজন। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগগুলো ভেজাল বিরোধী অভিযান চালালে ভেজাল সামগ্রী বিক্রি কমে যাবে। উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে সভা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিলে তৃণমূল পর্যায়ের ভেজাল বিরোধী অভিযান সফল হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।