রফিকুল ইসলাম বাবু ঃ
‘নামে নামে যমে টানে’- বলে যে প্রবাদটি প্রচলিত রয়েছে তা আবারো সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে চাঁদপুরে। এই জেলার কচুয়া উপজেলার শিংআড্ডা গ্রামের নিরাপরাধ যুবক বিল্লাল পাঠান কোন মামলার আসামি না হয়েও সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক আসামির সাথে নামের মিল থাকায় তাকে এখন জেল খাটতে হচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিল্লালের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত তার পরিবারের সদস্যরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে প্রতিক অনশন পালন করেছে। পরে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দের ন্যায় বিচার পাওয়ার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা অনশন ভঙ্গ করে। প্রায় ১২ বছর আগে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে ধৃত ডাকাত দলের এক সদস্য নিজের নাম বিল্লাল হোসেন মোল্লা, গ্রাম কচুয়ার শিংআড্ডা উল্লেখ করলেও এটি ছিলো ভুয়া। তারপরও পুলিশ বিল্লাল হোসেন পাঠান নামে এ ব্যক্তিকে আটক করে। ফরিদগঞ্জ থানার একটি ডাকাতির মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে পুলিশ বিল্লাল হোসেন পাঠানকে চাঁদপুর কোর্টে চালান দেয়। তিনি গত ৮ দিন ধরে চাঁদপুর জেলা কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। আইনজীবীরা জানান, ২০০৪ সালের ৮ ডিসেম্বর ফরিদগঞ্জ উপজেলার বর্ডার বাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ আটক হয় ৬ ডাকাত। পরে পুলিশ তাদের কারাগারে পাঠায়। এদের মধ্যে এক ডাকাত পুলিশের কাছে নিজের প্রকৃত নাম ঠিকানা গোপন করে নিজের নাম বিল্লাল হোসেন মোল্লা, কচুয়া উপজেলার শিংআড্ডা তার গ্রামের বাড়ি উল্লেখ করে। পুলিশ পরে মামলার চার্জশীট তৈরি করতে গিয়ে দেখে বিল্লাল হোসেন মোল্লা, পিতা আঃ জব্বার মোল্লা সাং-শিংআড্ডা, উপজেলা কচুয়া, জেলা চাঁদপুর এমন নাম ঠিকানা সম্পূর্ণ ভুয়া। তখন তাকে ভাসমান অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে জেল হাজতে রেখে বিচারকার্য পরিচালনার জন্যে আদালতের কাছে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নূর নবী ভূঁইয়া। এরই মধ্যে ওই ভুয়া নাম ও ঠিকানা ব্যবহারকারী বিল্লাল হোসেন মোল্লা সাড়ে তিন বছর জেলে থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে সে লাপাত্তা। তবে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভ’ঁইয়া আশ্বাস দিয়েছেন বিল্লাল পাঠান যাতে ন্যায় বিচার পায় সে বিষয়ে তারা উদ্যোগ নিয়েছেন। চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান বলেন । নিরাপরাধ বিল্লাল পাঠান দ্রুত কারাগার থেকে মুক্তি পাক এবং প্রকৃত আসামিকে ধরে জেল হাজতে পাঠানো হোক- এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তিভোগীসহ আইনজীবীদের প্রত্যাশা।