মনিরুল ইসলাম মনির:
মেঘনা নদীর চরাঞ্চল মতলব উত্তরে গত বছরের তুলনায় এবার মরিচ ফলন হয়নি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে যেটুকু জমিতে চাষ হয়েছে, তার মধ্যে গাছের ফুল-ফল অকালে ঝরে পড়েছে। সার ও ওষুধ প্রয়োগ করেও চাষিরা কোনো প্রতিকার পায়নি। এ কারণে চলতি মৌসুমে মতলবে মরিচ চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, মতলব উত্তরে গত বছর ব্যাপক এলাকায় মরিচের চাষ হয়েছিল। কিন্তু এবার একই পরিমাণ জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। মরিচ বীজ বপনের সময় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে খড়া-অনাবৃষ্টি থাকায় আবাদ কম হয়। অনেক মরিচ চাষি ইচ্ছে থাকলেও জমিতে বীজ বপন করতে পারেননি।
স্থানীয় মরিচ চাষিরা জানান, মেঘনা নদীর উর্বর চরে ব্যাপকহারে মরিচের চাষ হয়। দেশের সর্বত্র মতলবের মরিচের আলাদা কদর রয়েছে। এজন্য চাষিরাও দাম ভালো পায়। এ কারণে এলাকায় মরিচের চাষও বেড়ে যেতে থাকে। মতলব উত্তরের সব চরে কমবেশি মরিচের চাষ হলেও চরকাশিম, বোরোচর, চরউমেদ, নয়াচর, চরওয়েস্টার উর্বর চরে ব্যাপক হারে এর চাষ হয়।
কৃষি বিভাগ জানায়, অসময়ে বপন করা মরিচ গাছে ফুল এলেও শৈতপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে তা অকালে ঝরে পড়ে। পাতা লালচেসহ বিভিন্ন বালাইয়ে আক্রান্ত হয় মরিচ গাছ।
এখলাছপুর ইউনিয়নের চরকাশিমের মরিচ চাষি ইব্রাহিম গাজী, জহিরাবাদ ইউনিয়নের চরউমেদের কৃষক আলাউদ্দিন জানান, তারা প্রায় সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেন। একাধিকবার বালাইনাশক ব্যবহার করার পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
মোহনপুর ইউনিয়নের চরওয়েস্টারের মরিচ চাষি মোসলেম ৪ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেন। তিনি জানান, প্রতিটি মরিচ গাছে কমপক্ষে ২৫/৩০টি মরিচ ধরার কথা থাকলেও গাছ প্রতি ৭/৮টি মরিচ ধরেছে। তাছাড়াও গাছে যে মরিচ ধরেছে সেগুলো খুব একটা বড় হয়নি। এজন্য হেক্টরে মরিচের উৎপাদন অনেক কম হবে। বোরোচরের মুরাদ মিয়ার বাজারে এখনো শুকনা মরিচ উঠা শুরু হয়নি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে পাকা ও শুকনা মরিচ আমদানি শুরু হবে বলে মরিচ ব্যবসায়ী ও চাষিরা জানান।
উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ হোসেন জানান, আমাদের পরামর্শক্রমে মরিচ চাষিরা ছত্রাকনাশক, বালাইনাশক ও ফুুল-ফলের জন্য হরমোন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে। কিন্তু সব ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় তারা পরিমাণ অনুসরণ না করার কারণে তেমন কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ূম মজুমদার জানান, মরিচ চাষিরা বৈরী আবহাওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাজারে কাঁচা মরিচের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন। এতে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।