প্রতিনিধি
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া শ্রীরামপুর গ্রামে চাচার বাড়িতে বেড়াতে এসে ফেরার পথে লঞ্চঘাটে এমভি রফ রফ-২ ও আবে জম জম লঞ্চের আঘাতে লঞ্চযাত্রী মানিক চৌকিদারের (২৫) পা কেঁটে যায়।
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনাটি ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ঘটনাস্থলে টার্মিনালে দৈনিক চাঁদপুর বার্তার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মুহাম্মদ আলমগীর, দায়িত্বরত মেঘনাপাড় মুক্ত রোভার স্কাউট গ্র“প ইউনিট লিডার সোহাগ চন্দ্র দাস তাকে উদ্ধার করে সিএনজি স্কুটারযোগে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আহত মানিক চৌকিদারের ছিন্নভিন্ন ডান পা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। প্রথমত তার নাম ঠিকানা না জানলেও তার পকেটে থাকা কাগজে লেখা মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করে তার আত্মীয়-স্বজনকে খরব দিলে তারা এসে তাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা নিয়ে যায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বহরিয়ার শ্রীরামপুর গ্রামের মান্নান চৌকিদার ঢাকা যাত্রাবাড়ির একটি বরফকলে দারোয়ানের চাকুরি করে বিধায় স্বপরিবারে তারা ঢাকায় বসবাস করে। ঈদের পরদিন বুধবার তার ছেলে মানিক চৌকিদার চাঁদপুরে তার চাচা জয়নাল চৌকিদারের বাড়িতে বেড়াতে আসে। সকালে খাওয়া দাওয়া শেষে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দুপুর ১২টায় এমভি রফরফ-২ লঞ্চটি ছেড়ে পেছনে যাবার সময় আবে জম জম লঞ্চের মলিন থেকে এমভি রফরফ লঞ্চের মলিনে পা রাখার সাথে সাথে দু’ লঞ্চের মাঝখানে পরে যাত্রী মানিক চৌকিদারের ডান পা হাটুর নিচে থেঁতলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গুরুতর রক্তাক্তবস্থায় সাংবাদিক মুহাম্মদ আলমগীর ও মেঘনাপাড় মুক্ত রোভার স্কাউট গ্র“প ইউনিট লিডার সোহাগ চন্দ্র দাস তাকে উদ্ধার করে সিএনজি স্কুটারযোগে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঐ সময় ঘটনাস্থলে থাকা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম ও এটিএসআই বেলায়েত হোসাইন, এমভি রফরফ-২ এর মালিক বারেক হাজীর ছেলে মুন্না, লঞ্চের সুপার বাইজার চারু মাঝি, ইউসুফ, এমভি আবে জম জমের সুপার ভাইজার শাহীন, বিপ্লব সরকার লঞ্চঘাটের পন্টুনে থাকলেও তারা আহত যুবককে উদ্ধার করতে দায়সারা কাজ করেছেন। লঞ্চ ঘাটে ভিড়ানো কোস্ট গার্ডের সদস্যরা ঘটনাটি দেখার কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে যান। তবে সেখান থেকে স্থানীয় নৌকায় তাদের লেবার দ্বারা পাঠিয়ে দেয়। আহত মানিক চৌকিদারকে হাসপাতালে আনার পর কর্মরত চিকিৎসক আহত মানিকের রক্তক্ষরণ বন্ধ করে দ্রুত ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এসময় চিকিৎসক জানান, মানিকের পা কেটে ফেলতে হবে। সে বাকি জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাবে। দুপুর অনুমান আড়াইটায় আহত মানিকের স্বজনরা খবর পেয়ে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তারা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানায়।
এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পরও লঞ্চ স্টাফ বা মালিক পক্ষের প্রতিনিধি লঞ্চঘাটে থাকলেও সহানুভূতি দেখাতে বা খোঁজখবর নিতে এগিয়ে আসেনি। নৌ টার্মিনালে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা লঞ্চ থেকে তাদের দৈনন্দিন চাঁদা তুলতে ব্যস্ত থাকলেও যাত্রীদের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ব ও কর্তব্য নেই বললেই চলে। মানবতা, মানবিক দায়িত্বও যেনো অবৈধ টাকা পয়সার কাছে গণ্য হয়ে গেছে। স্বেচ্ছায় দায়িত্বরত স্কাউট সদস্যদেরকেও মানতে পারছেনা, এখানকার দায়িত্বে থাকা পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
শিরোনাম:
সোমবার , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৫ ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।