স্টাফ রিপোর্টার:
সুস্থভাবে জন্ম নিলেও প্রাপ্ত বয়সে এসে প্রতিবন্ধী হয়েছেন চাঁদপুরের একই পরিবারের তিনজন। প্রথমে একজন পরে ধারাবাহিকভাবে অপর দু’জন শিকার হন প্রতিবন্ধীত্বের। হঠাৎ করে এমন অবস্থার কারণে সংসারের বোঝা হয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন তারা।
চিকিৎসকরা বলছেন, জেনেটিকাল ডিসঅর্ডারের কারণেই প্রাপ্ত বয়সে এসে এ রোগের বিস্তার ঘটেছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া গ্রামের দিনমজুর মতি মীরের বড় ছেলে মিজান ২০ বছর আগে কাজ করতেন একটি পোশাক কারখানায়। কিন্তু, হঠাৎ করেই চলার শক্তি হারান। এরপর থেকেই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন তিনি।
শুধু মিজানই নয়, বোন হাফসা ও ভাই রাজুরও একই পরিণতি। সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জন্ম নিলেও ভাগ্যের নির্মমতায় এখন তারা প্রতিবন্ধী।
প্রাপ্ত বয়সে এসে তাদের হাত-পা ও শরীর শুকিয়ে এখন শীর্ণকায়। এ অবস্থায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে, বাবা মায়ের সংসারে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা।
চিকিৎসকরা বলছেন, জেনেটিকাল ডিস-অর্ডারের কারণে তারা প্রতিবন্ধী হয়েছেন। তবে নিয়মিত ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে কিছুটা সুস্থ থাকা সম্ভব।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. এ এস এম সিরাজুম মুনীর বলেন, ‘এটি কনজিনেন্টাল মাসকুলার ডিসট্রফি আমরা নিমগার্ডাল মায়োপ্যাথি বলি। এর নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নেই তবে, ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাসের কিছুটা ভূমিকা রয়েছে।’
এদিকে, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।
চাঁদপুর সদরের বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘তাদের সুচিকিৎসা ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে ব্যবস্থা করতে আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিনমজুর মতি মীরের এই তিন সন্তানের মতো অপর তিন সন্তানও প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে, প্রতিবন্ধী তিন ভাইবোনের চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও তাদের কাউন্সিলিংসহ সব ধরনের দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আব্দুর সবুর মন্ডল।