শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥ দেশের ৫৩টি নৌ রুটের মধ্যে প্রথম শ্রেনীর নৌ রুট চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদী। চাঁদপুর থেকে হাজীগঞ্জের নৌ চ্যানেলের নাব্যতা সংকট নিরসনে ও ডাকাতিয়ার নৌ রুট সচল রাখার লক্ষে সরকার টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ এর তত্বাবধায়নে নৌ চ্যানেল খননের উদ্যোগ নেয়। গত কয়েকমাস আগে সর্বনি¤œ ১৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে দেশের প্রখ্যাত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানী কাজটি পায়। দীর্ঘ ১ মাস পূর্বে শহরের ইচলীঘাট এলাকায় বঙ্গ খনন ড্রেজার কোম্পানীর নদী খননের সরঞ্জামাদি এসে পৌছলেও এখন পর্যন্ত তারা কাজ শুরু করতে পারেনি।
চাঁদপুরের একটি নামধারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ব্যর্থ হয়ে কাজ নিতে না পেরে চাঁদপুর হাজিগঞ্জ নৌ রুটের ড্রেজিং কাজ বন্ধ করে দিয়েছে, শুধু তাই নয় কাজ করতে হলে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হবে বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ড্রেজিং এর ব্যপারে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় থেকে মার্চের ২৪ তারিখে প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত চিঠি আসার পরও জেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত অজানা অজ্ঞাত কারনে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ। ফলে চাঁদাবাজ ও নামধারী কিছু রাজনৈতিক দলের নেতাদের কারনে সরকারের বরাদ্দকৃত নৌ রুট সচল রাখার ড্রেজিং কাজটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চাঁদপুর বড় ষ্টেশন মোলহেড থেকে চাঁদপুর-হাজিগঞ্জ নৌ রুটের শাহাব বাজার পর্যন্ত নদী ড্রেজিং করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের টেন্ডার আহব্বান করা হয়। এসময় চাঁদপুরের নব্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি নেওয়ার জন্য তদবির করে। নদী খননের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম,ড্রেজার,দক্ষতা ও দরপত্র বেশি দেওয়ায় তাদেরকে নৌ মন্ত্রনালয় কাজটি দেয়নি। সর্বনি¤œ দরপত্র হিসেবে বঙ্গ খনন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ রেজাউল প্রায় ১৫ কোটি টাকায় খনন কাজ পায়। কাজ পাওয়ার পরপরই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি গত ১মাস পূর্বে বিশাল জনবল নিয়ে ড্রেজিং এর সরঞ্জামাদী সহ চাঁদপুর আসে। প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করতে গেলে গুনরাজদী এলাকার রাজনৈতিক দলের নেতা নামধারী টিটু সহ তার লোকজন কাজে বাধা প্রদান করে। নেতাদের অনুমতি ব্যতিত কাজ করতে দেওয়া যাবে না বলে হুমকি প্রদান করে। এছারা কাজ করতে হলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে এমন হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে এ কাজ বন্ধ করতে চাঁদপুরের রাজনৈতিক দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতা জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বঙ্গ খনন ড্রেজারের এজিএম ড্রেজিং আনিছুর জামান জানান, কি জামেলা হচ্ছে তা আমি জানি না জানতে চাইও না। বিআই ডরিøউটিএ আমাকে কাজ শুরু করা পরিবেশ তৈরী করে দিবে আমি কাজ শুরু করবো। যে কোন সমস্যা হলে তারাই মোকাবেলা করবে।
এ ব্যপারে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, পোর্ট অফিসারে মাধ্যমে জেনেছি কে বা কারা সরকারের বরাদ্দকৃত ডাকাতিয়া নদী খনন কাজে বাধা প্রদান করেছে। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ এর অফিস সূত্রে জানা গেছে, কাজে বাধা প্রদান করলে সাথে সাথে চাঁদপুরে পুলিশ সুপারকে ফোনে অবগত করা হয়। পুলিশ সুপার যাচাই বাচাই করে লিখিত দিতে বলে অন্যথায় মামলা করার পরামর্শ প্রদান করে।