মিজানুর রহমান রানা
চাঁদপুরের পুরাণাবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ২০, গুরুতর ৫। দফায় দফায় হামলা, গভীর রাতে দোকান ও বাড়িঘর ভাংচুর। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুর পৌর এলাকার পুরাণবাজার পশ্চিম শ্রীরামদী পুকুর পাড় চৌরাস্তা ও মধ্য শ্রীরামদী বউ বাজার এলাকায়।
জানা যায়, বউ বাজার এলাকায় বাবুলের দোকানের সামনে মমিন পাঠান ও সোহরাবের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পরে মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২টি দোকান ও প্রায় ১০টি ঘর ভাংচুর হয়। ভাংচুরকৃত বাড়িঘর ও দোকানগুলোর মধ্যে অধিক তিগ্রস্থ হয়েছে বাবুল গাজীর স্টেশনারী দোকান ও তার বসতঘর, আমির দেওয়ানের স্টেশনারী দোকান, আবু রাঢ়ির বসতঘর। এ সময় তারা বাড়ি ঘরের মানুষজনের ওপর হামলা চালালে বিএনপি কর্মী পশ্চিম শ্রীরামদীর মজিব মিজির ছেলে সুলতান মিজি (৪০), মধ্য শ্রীরামদীর মনা হালদারের ছেলে আরিফ হালদার (২০), অলি আহমেদ বেপারীর স্ত্রী হালিমা বেগম (৬৫), রব মিজির ছেলে মাসুদ মিজি (২৫), রানা (২০)কে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। আহতরা চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা রব মিজি জানান, কী কারণে এলাকায় এভাবে দফায় দফায় হামলা হয়েছে, তা আমার জানা নেই। কী কারণে আমার বসতঘর ভাংচুর ও আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে তা আমি এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি। এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাগবিতন্ডা হলে তাতে আমার ওপর ও পরিবারবর্গের ওপর হামলা চালানো হয়। তবে আমি একজন বিএনপি কর্মী। আমার নেতৃত্বে এলাকার অনেক বিএনপি নেতা-কর্মী সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তারা মূলত আমার ওপর হামলা চালাতে পারে। তবে আমি এলাকায় কোনো মাদকের সাথে সম্পৃক্ত নই। আমি বিড়ি সিগারেটও খাই না। এলাকায় আমার ব্যাপারে সবাই জানে। একটি কুচক্রি মহল আমার রাজনৈতিক সুনাম খর্ব করার জন্য পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে আমার পরিবারের সদস্যদের আহত করে আমার নামে মাদকের কুৎসা রটিয়ে আমাকে হেয় করার জন্য এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মূলত যারা আমার পরিবারবর্গ ও এলাকায় বেশ কয়েকজন বিএনপি কর্মী ও নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তারাই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা তাদের অপকীর্তি ঢাকতে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। কোনো সভ্য সমাজ গভীর রাতে বসতঘরে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের ওপর হামলা চালিয়ে মানুষদের এভাবে আহত করতে পারে তা মেনে নেওয়া যায় না।
অন্যদিকে, মমিন পাঠানের লোকজনরা জানায়, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসা লাগামহীনভাবে চলছে। যারা এই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তারা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এতে করে এলাকার যুবকরা নেশার সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। তাই কোনোভাবেই বউ বাজার এলাকায় মাদক ব্যবসা যারা করবে তাদেরকে কোনোভাবেই এ ব্যবসা করতে দেয়া যাবে না এবং তাদের স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হবে।
বউ বাজার এলাকার সাধারণ মানুষ জানায়, দীর্ঘদিন থেকে এ এলাকার দুটি পরিবার মাদক বিক্রি করে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ জেনেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ইদানিং এ এলাকায় মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে। মাদক কেনার জন্য শহর থেকে এমনকি গ্রাম থেকেও একশ্রেণির মাদকসেবীরা মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় মাদক কেনার জন্য আসছে। সন্ধ্যার পর থেকে বউ বাজার-পুকুর পাড় রাস্তায় মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। বিষয়টি পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সাধারণ জনগণ।
শিরোনাম:
শুক্রবার , ২১ মার্চ, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ , ৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।