শওকত আলী
আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চাঁদপুরের রঘুনাথপুর, কমলাপুর, রামদাসদী, বহরিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদের বাল্যবিয়ে পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে ১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন বাসীরা ওই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কাজী আনোয়ার হোসেন ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, কমলাপুর, রামদাসদী, বহরিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদের বাল্যবিয়ে পড়াচ্ছেন বলে জানান।
ইউনিয়নবাসীরা জানায়, যেসব ছেলে মেয়েদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছর তাদের ভুয়া জন্ম সনদপত্র তৈরি করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে তাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করছেন। এর বিনিময়ে তিনি ছেলে মেয়েদের অভিবাবকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ইউনিয়নের কোন কোন এলাকায় এমন বাল্যবিয়ে দেয়ার সময় যখন স্থানীয় যুবকরা প্রতিবাদ করেন তখন তাদেরকে টাকা দিয়ে মেনেজ করেন বলেও তারা জানান। কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে গত ২৮ জুন মধ্য রঘুনাথপুর তিন তাল গাছতল এলাকার ভুঁইয়া বাড়তে এমনই এক বাল্যবিয়ে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ওই বাড়ির রফিকুল ইসলাম ১৩ বছর বয়সী মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কাঁচা কলোনী এলাকার ছাত্তার বেপারীর ছেলে শান্তর সাথে ২৮ জুন রাতে বাল্যবিয়ে পড়ান। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে এই প্রতিবেদক গেলে রফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করেও তার দেখা মিলেনি। পরে সুমাইয়া আক্তার এবং তার মাতা ফাতেমা বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, ওই এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত কাজী আনোয়ার হোসেন তাদের বিয়ে পড়িয়েছেন। যার রের্কডও এ প্রতিবেদকের কাছে সংগ্রহ রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের কাজী আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিয়ে পড়াইনি। তারা তো আমার নাম বলতেই পারে। কিন্তু কে বিয়ে পড়িয়েছে তা সঠিকভাবে জানেন গিয়ে জানেন। যা মন চায় তা লিখেন। পারলে আরো কিছু লিখে দিয়েন। তার বক্তব্য নিয়ে সেখান থেকে চলে আসার একদিন পর স্থানীয় এক ব্যাক্তির কাছে জানা যায়, এ প্রতিবেদক সেখান থেকে চলে আসার পর তিনি বলেন, আমিতো এখনো বালাম বইয়ে তাদের নাম রেজিষ্ট্রি করিনি। আমি যে বিয়ে পড়িয়েছি তার কোন প্রমান তাদের কাছে নেই।
শুধু সুমাইয়া আক্তারই নয় এ রকম আরো অনেক ছেলে মেয়েদেরকে তিনি গোপনে বাল্যবিয়ে পরিয়েছেন বলে একাধিক সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সচেতন মহলের প্রশ্ন যেখানে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন চাঁদপুরকে মাদক, ইভটিজিং এবং বাল্যবিয়ে মুক্ত করার ঘোষনা দিয়েছেন, সেখানে কাজী আনোয়ার হোসেন প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা না করে বরং তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্ভয়ে একের পর এক বাল্যবিয়ে পড়িয়ে চলেছেন। আইনের নিয়ম ভঙ্গ করে এমন বাল্যবিয়ে পড়ানোর অভিযুক্ত কাজী আনোয়ার হোমেসনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন চাঁদপুরের সচেতন মহল।
শিরোনাম:
বৃহস্পতিবার , ১১ আগস্ট, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ , ২৭ শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।