বিশেষ প্রতিনিধি ॥
চাঁদপুরে পদ্মা ও যমুনার অয়েল কোম্পানীর এজেন্টারের তেল বিক্রিত টাকা ব্যাংকে জমা দিতে গিয়ে ৩ দিন যাবত ট্রাংক লরীর হেলপার কালু গাজী (২০) নিখোজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুর কালিবাড়ি মোড় থেকে মাইক্রোবাস যোগে অপহরনের পর অচেতন করে টাকা ছিনতাই এর নাটক করার ঘটনায় পুলিশ জানতে পেরে অবশেষে তাকে বাড়ি থেকে আটক করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর মডেল থানার এসআই অনুপ চক্রবর্তী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে খবর পেয়ে তাকে আটক করার পর বর্তমানে সদর হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জানা যায়, লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার নন্দনপুর গ্রামের কেশব লাল ভৌমিকের ছেলে তাপস কুমার ভৌমিকের মালিকাধীন ঢাকা মেট্রো ড-১৪-৪০২০ তেলের লরীটি দীর্ঘদিন যাবত পদ্মা ও যমুনার অয়েল কোম্পানীর ডিপো থেকে তেল নিয়ে বিক্রি করে। সেই তেল বিক্রির টাকা চালকের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেন। চাঁদপুর শহরের রেলওয়ে কাচা কলোনীর রতন গাজীর ছেলে কালু গাজী দীর্ঘ ৩ বছর যাবত তেলের লরীতে হেলপার হিসেবে চাকুরী করে। গত সোমবার রাতে তাপস কুমার ভৌমিকের মালিকাধীন তেলের লরীর চালক আব্দুল রহিম তেল বিক্রির নগদ ৪ লক্ষ ৩০ হাজার ও ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ২শত ৬০ টাকার পে-অর্ডার ব্যাংকে জমা দেওয়ারর জন্য হেলপার কালু গাজীর হাতে তুলে দেয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় কালু গাজী টাকা ও পে অর্ডার নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ৩ দিন যাবত নিখোজ থাকে। এ ঘটনার পর তেলের লরির মালিক তাপস কুমার বাদী হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে মামলা নং ৪০ তাং ২৪/২/২০১৬ । মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামী কালু গাজীকে আটক করতে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা চালায়। অবশেষে কালু গাজী শুক্রবার ঢাকা থেকে ময়ুর লঞ্চে চাঁদপুরে এসে বাড়িতে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন তাকে সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে আসতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে আটক করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে অচেতন হওয়ার নাটক করে সে বিছানায় পরে থাকে। পরে পুলিশ তাকে সেখান থেকে আটক করে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করায়। পুলিশ তার পকেট থেকে ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ২শত ৬০ টাকার পে-অর্ডার উদ্ধার করলেও নগদ অর্থ উদ্ধার করতে পারেনি। এসময় পুলিশকে সে জানায়, তাকে শহরের কালীবাড়ি মোড় থেকে অপহরন করে নিয়ে অচেতনের পর টাকা ছিনতাই করে ছেরে দেয়। ঢাকা থেকে লঞ্চ যোগে অসুস্থ অবস্থায় চাঁদপুরে আসে। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনুপ চক্রবর্তী জানায় অচেতন হওয়ার নাটক করে সে টাকাগুলো আত্বসাৎ করেছে। হেলপার কালুর সহযোগী সোহাগ নাম পরিচয়ে ফোন করে জানায় মঙ্গলবার সকালে কালীবাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে অপহরন করে নিয়েছে। এ খবর জানতে পেরে কালুর সহযোগী সোহাগকে থানায় আসতে বলে সে না এসে ফোনটি বন্ধ করে দেয়। যেহেতু কালুকে আটক করার পর তার পকেট থেকে পে অর্ডার উদ্ধার করা হয়েছে। যদি ছিনতাইকারীর কবলে পরতো তাহলে ছিনতাইকারীরা পে অর্ডারটিও নিয়ে যেতো। এতেই প্রমান হয় কালু অচেতন হওয়ার নাটক সাজিয়ে নিজেই টাকা ছিনতাই করেছে।