শওকত আলী॥
চাঁদপুরে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে চাঁদপুর নৌ-সীমানার বিভিন্ন চরে দক্ষীনাঞ্চীয় ও চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী শতাধীক যাত্রীবাহী লঞ্চ বিভিন্ন চরে আটকা পড়ে। প্রবল ঘন কুয়াশার মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে শত-শত যাত্রী নিয়ে লঞ্চ গুলো নদী পাড়ি দিচিছল। লঞ্চ যাত্রী চাঁদপুর মেডিকেলের মালিক কবির খান জানান, এ সময় রাত দেড়টায় হঠাৎ চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচল কারী লঞ্চ এম,ভি আবে জমজমের সাথে বালিবাহি ভলগেটের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সময় বিকট আওয়াজের শব্দ শুনে যাত্রীরা আতংকিত হয়ে লঞ্চের মধ্যে ছুটাছুটি করে কমপক্ষে ২০জন যাত্রী আঘাত প্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। এসময় লঞ্চটি কাতহয়ে যায়। এতে করে অল্পের জন্য সহস্বাধিক যাত্রী প্রানে রক্ষা পায়। এ সময় লঞ্চের সামনের অংশে ধুমড়ে মুচড়ে যায় এবং বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে যায়। যাত্রীরা চিৎকার করতে থাকে। তাৎক্ষনিক লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের অদুরে নোঙ্গর করে রাখা হয়। ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদের্শে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী লঞ্চ এম.ভি রফরফ রাত ২টায় কুয়াশার কারনে নদীতে নোঙ্গর করে থাকা আবে জমজম লঞ্চের সাথে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুনরায় বিকট শব্দে যাত্রীরা আতংকিত হয়ে চিৎকার করতে থাকে। এ সময় অনেক যাত্রী ভয়ে আবে জমজম লঞ্চ থেকে রফরফ লঞ্চে উঠে চাঁদপুরের আসার উর্দেশে। কিছু দুর যেতেই কুয়াশার কারনে পথ না দেখতে পেরে চলন্ত লঞ্চ রফরফের সাথে বরিশাল গামী যাত্রী বাহী লঞ্চ এম.ভি পূবালীর সাথে প্রচন্ড গতিতে সংঘর্ষ বাধে। এতে করে ২টি লঞ্চের সংঘর্ষে বিকট আওয়াজে লঞ্চে থাকা শত-শত যাত্রী আতংকিত হয়ে পড়ে। এ সময় ২টি লঞ্চের যাত্রীরা লঞ্চে ভিতরে ছুটাছুটি করতে থাকে জীবন বাচাঁনোর জন্য। এতে করে কমপক্ষে ৩০ জন যাত্রী মারাত্বক ভাবে আহত হয়। ২টি লঞ্চের সামনের অংশে ধুমড়ে মুচড়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়েছে। পরে যাত্রীদের অনুরোধে লঞ্চ গুলো নোঙ্গর করে রাখা হয় চাঁদপুর নৌ-সিমানার ষাটনল নামকস্থানে। পরে সকাল সাড়ে ৫টায় কুয়াশা কমে গেলে লঞ্চ গুরো চাঁদপুরের দিকে ছেড়ে আসে প্রায় ৩ ঘন্টা বিলম্বে। এ সব যাত্রীদের মধ্যে আহত অনেকে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বুধবার সকালে। অপর দিকে দক্ষীনাঞ্চীয় লঞ্চ গুলো ৫-৬ ঘন্টাও ঢাকা-চাঁদপুরের মধ্যে চলাচলকারী লঞ্চ গুলো ২-৩ঘন্টা বিলম্বে তাদের গন্তব্যে পৌছায়। যার ফলে প্রচন্ড শীতের মধ্যে শিশু,মহিলা,বৃদ্ব,বৃদ্বাসহ বিভিন্ন বয়সের শত-শত যাত্রীর সীমাহীন দুর্ভোগ পৌহাতে হয়েছে নদীর মাঝ খানে আটকে পরে। এ ঘটনাটি ঘটেছে,গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে চাঁদপুর নৌ-সীমানার ইশানবালা,আলুরবাজার,হাইমচর এলাকার মধ্যচরে, শরীয়তপুর চরে,ষাটনল,মোহনপুর চরে,এখলাশপুরচর ও আমিরাবাদ চরসহ বিভিন্ন চর এলাকায় এ সব লঞ্চ গুলো ঘন কুয়াশার কারনে ও ডুবো চরে আটকা পরে রাতভর যাত্রীদের নিয়ে অবস্থান করতে হয়েছে।
বুধবার চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে লঞ্চের মাস্টার ও যাত্রীদের সাথে আলাপকালে তারা জানান,প্রতিটি লঞ্চ মঙ্গলবার দুপুরে ও বিকেলে দক্ষীনাঞ্চীয় বরিশাল,ফিরোজপুর,পাতারহাট,লেতরা,পয়সারহাট,কালাইয়া ভান্ডারিয়া,কাউখালীসহ বিভিন্নস্থান থেকে ছেড়ে চাঁদপুরে রাত ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পৌছার কথা থাকলেও নদীতে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে লঞ্চ গুলো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছিলনা। যার ফলে প্রতিটি যাত্রীবাহী লঞ্চ রবিবার সকাল ৮ হতে ৯টার মধ্যে ৫/৬ ঘন্টা বিলম্বে চাঁদপুর নৌ-টামিনালে পৌছায়। ঢাকা থেকে মঙ্গলবার লঞ্চ গুলো রাত ১২টায় ও ১টায় ছেড়ে ভোররাত সারে ৩টায় ও ৪টায় চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে পৌছার নিয়ম থাকলে ও লঞ্চ গুলো সকাল ৬টা /৭টায় ২/৩ ঘন্টা বিলম্বে চাঁদপুর নৌ-টার্মিনালে এসে পৌছে। এ ছাড়া অনেক লঞ্চ চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ডুবো চরে আটকা পরে। বুধবার সকালে অন্য লঞ্চের সাহায্যে টেনে ছুটিয়ে এনে বিলম্বে পৌছতে হয়েছে। এতে করে যাত্রীরা বিশুব্দ পানি ও খাদ্যের অভাবে দুর্ভোগ পৌহাতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে এম.ভি আবে জমজম লঞ্চের ম্যানেজার বিপ্লব সরকার জানান, প্রতিটি লঞ্চ ৩/৪ ঘন্টা পর চাঁদপুর ঘাটে আসে। ২টি লঞ্চের ষংঘর্ষের পর যাত্রীদের অনুরোধে লঞ্চটি নোঙ্গর করে রাখা হয়। তবে অনেক যাত্রী আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর বন্দর কর্মকতা ও উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কুযাশার কারনে লঞ্চ গুলো বিলম্বে এসেছে। এতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। কুয়াশা দিয়ে ঝুকির মধ্যে চলাচল করলে দুর্ঘটনা ঘটতো। ২টি লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা আমার জানা নেই। এ রকম খবর আমাকে কেহ জানায়নি।