গতকাল শুক্রবার একদিনের রিপোর্ট বর্তমান করোনাকালের তিন মাসের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। চাঁদপুরে গতকাল একদিনে ৭১ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়ার রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে মৃত চারজন। এই ৭১ জনসহ জেলায় এখন মোট আক্রান্ত রোগী হচ্ছে ৩৬৪ জন। আর মৃত সংখ্যা বেড়ে ২৯জন। এই ৩৬৪ জনের মধ্যে সদর উপজেলায়ই হচ্ছে ১৫৭ জন। আর মৃত ২৯ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ১০ জন। এছাড়া হাইমচর এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলা ছাড়া অন্য সব উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা একাধিক রয়েছে।
গতকাল শুক্রবার চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রিপোর্ট ২৭৪টি আসে। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট আসে ৭০টি। এর বাইরে মতলব আইসিডিআরবি থেকে একজন আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট আসে। এই একটিসহ গতকাল একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭১ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এই ৭১ জনের মধ্যে মৃত চারজন। এরা হচ্ছেন : সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বড় সুন্দর গ্রামের মাহবুবুল হক পাটওয়ারী (৬০) ও মৈশাদী ইউনিয়নের উত্তর মৈশাদী গ্রামের টেলু বকাউল (৩৫) এবং হাজীগঞ্জ শহরের মকিমাবাদ সর্দার বাড়ির আঃ আউয়াল (৪৫) ও বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের রনজিত দাস (৫০)। যিনি গত কদিন আগে মারা যান এবং তার মরদেহ সৎকার করা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। রনজিত দাস হাজীগঞ্জ বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী। এ চারজনই করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা যান। গতকাল তাদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এদিকে হাজীগঞ্জের আঃ আউয়াল মারা গেছেন গত শুক্রবার সকালে। এর এক সপ্তাহ পর গতকাল একইদিনে একই সময়ে তার বাবা লেদু মিয়া করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে মারা যান।
গতকাল যে ৭১ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাদের উপজেলাভিত্তিক সংখ্যা হচ্ছে : চাঁদপুর সদর ২০, হাজীগঞ্জ ১৭, হাইমচর ৫, শাহরাস্তি ১১, ফরিদগঞ্জ ৪, মতলব দক্ষিণ ৭, মতলব উত্তর ৩ এবং কচুয়ায় ৪ জন।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহর স্বাক্ষরিত তথ্য সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে মোট ২ হাজার ৭শ’ ৮৫ জনের স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল পাঠানো হয়েছে ৫৮ জনের। গতকাল পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে ২ হাজার ৩শ’ ৯৬ জনের। এর মধ্যে গতকাল একদিনেই রিপোর্ট আসে ২শ’ ৭৪ জনের। রিপোর্ট অপেক্ষায় আছে আরো ৩শ’ ৮৯ জনের। গতকাল পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭৬ জন। আর হাসপাতাল ও হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন ২শ’ ৫৬ জন এবং ঢাকায় রেফার করা হয়েছে ৪ জনকে। এদিকে মৃত ২৯জনের উপজেলা ভিত্তিক সংখ্যা হচ্ছে : চাঁদপুর সদর ১০, মতলব উত্তর ২, ফরিদগঞ্জ ৪, হাজীগঞ্জ ৫, কচুয়া ৫, শাহরাস্তি ৩।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা বেগম পলিনের কাছ থেকে এ উপজেলার গতকালকের ২০ জন পজিটিভ রোগীর তথ্য জানা গেছে। এর মধ্যে মৃত দু’জন হচ্ছে রামপুর ও মৈশাদী ইউনিয়নের। বাকী ১৮ জনের মধ্যে একজন বাগাদী ইউনিয়নের। অন্য ১৭ জন চাঁদপুর শহরের।
তিনি আরো জানান, গতকাল পর্যন্ত চাঁদপুর সদর উপজেলায় আক্রান্ত রোগী ১শ’ ৫৭ জনের মধ্যে ১শ’ ৪৩ জন চাঁদপুর শহরের আর বাকী ১৪ জন উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের। ইউনিয়ন ভিত্তিক রোগীর সংখ্যা হচ্ছে : রামপুর ৫, লক্ষ্মীপুর ৩, মৈশাদী ৩ এবং চান্দ্রা, বাগাদী ও বালিয়ায় ১ জন করে মোট ৩ জন।
ডাঃ পলিন আরো জানান, গতকাল প্রাপ্ত ২০ জনের মধ্যে মৃত ২ জন এবং বাগাদী ইউনিয়নের ১ জন বাদ দিয়ে বাদবাকী ১৭ জনের অবস্থান হচ্ছে : পুরাণবাজারে ২ জন, পালপাড়া ২ জন, বাবুরহাট ৩ জন, পুলিশ লাইন্সের পুলিশ সদস্য ৪ জন, কোড়ালিয়া ২ জন, ওয়াপদা গেইট ১ জন, মাদ্রাসা রোড ১জন, সদর হাসপাতাল এলাকায় ১ জন এবং শহরের একটি এলাকায় ১জন।