চাঁদপুর জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আরো বেড়েছে। তবে নমুনা
পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্তের হার বলতে গেলে কম। এখন মোট আক্রান্ত রোগীর
সংখ্যা হচ্ছে ৩৪ জন। এর আগে ছিলো ২৮ জন। গতকাল প্রাপ্ত রিপোর্টে আরো
পাঁচজনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর সাথে যোগ হয়েছে ঢাকায় আক্রান্ত হওয়া
কচুয়ার এক ব্যক্তি। তিনি নিজ গ্রামে চলে আসায় তাকে চাঁদপুরের সাথে যোগ করা
হয়েছে। এ হিসেবে এই সংখ্যা এখন চৌত্রিশে পৌঁছে। পাঁচ জনের মধ্যে তিনজন
হচ্ছেন পুলিশ সদস্য, একজন একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিনিয়র নার্স
এবং আরেকজন হচ্ছেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের দুইজন ডাক্তারের কক্ষ
সহকারী অর্থাৎ এটেন্ডেন্ট।
গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মোট ৯২ জনের রিপোর্ট
আসে। আর এটিই হচ্ছে এ পর্যন্ত চাঁদপুর জেলায় একদিনে আসা সর্বোচ্চ রিপোর্ট।
এই ৯২ জনের মধ্যে পাঁচজনের রিপোর্ট পজিটিভ আর বাকি ৮৭ জনের রিপোর্ট
নেগেটিভ। গতকালকের ৯২ জনেরসহ এ পর্যন্ত রিপোর্ট আসে ৫৪২ জনের। আর নমুনা
পাঠানো হয়েছে ৬৭৩ জনের। রিপোর্ট প্রাপ্তির অপেক্ষায় আছে ১৩১ জনের।
গতকাল প্রাপ্ত রিপোর্টে তিনজন পুলিশ সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার
তথ্য জানা গেছে। আর এটিই প্রথম চাঁদপুর জেলায় কোনো পুলিশ সদস্যের করোনা
ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ। এই তিন পুলিশ সদস্য হচ্ছেন চাঁদপুর মডেল
থানার ১জন এসআই এবং দুইজন কনস্টেবল। এদিকে তিন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার
সংবাদে সদর থানা জুড়ে আতঙ্ক এবং ভীতির সঞ্চার হয়। পুলিশ সদস্যরা দিনরাত
সর্বত্র ডিউটি করেন। তারা কোনো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পেলে সে
এলাকায় যান এবং তার বাসা-বাড়ি লকডাউন করেন। আবার কোনো করোনা রোগী মারা গেলে
অথবা করোনার উপসর্গ নিয়ে কেউ মারা গেলে তার লাশ দাফন করা পর্যন্ত পুলিশ
সদস্য এবং স্বাস্থ্য বিভাগের স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন।
তাছাড়া পুলিশ সদস্যরা সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বাত্মক
প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা সর্বত্র বিচরণ করেন। কে কোথায় কোভিড-১৯
ভাইরাস বহন করে লোকালয়ে চলাচল করছে তা তো বাহ্যিকভাবে বুঝা সম্ভব নয়। আর
এমন অনিশ্চয়তার মধ্যেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দিনরাত পালাক্রমে দায়িত্ব
পালন করেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার
সংবাদে এখন খোদ পুলিশের মাঝে ভয় ঢুকে গেছে। কিন্তু তারপরও তাঁরা পেশাগত
দায়িত্ব পালন থেকে পিছপা হবেন না বলে জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা
জানিয়েছেন।
তিন পুলিশ সদস্য ছাড়া আরো যে দু জন আক্রান্ত হয়েছেন তারা হচ্ছেন কচুয়া
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে সিনিয়র নার্স এবং চাঁদপুর সরকারি জেনারেল
হাসপাতালের দুইজন ডাক্তারের একজন কক্ষ সহকারী অর্থাৎ এটেন্ডেন্ট। এদের
শারীরিক অবস্থার আলোকে হাসপাতাল বা বাসায় থাকার ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জেলা
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে কচুয়ায় যিনি আক্রান্ত হয়েছেন
তার বাড়ি গতকাল লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতাল এবং থানা লকডাউন করা
সম্ভব নয়। তবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
তিন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া