বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোডে ছেলে মায়ের সাথে দেখা করায় স্ত্রীর আত্মহত্যা
রফিকুল ইসলাম বাবু॥
চাঁদপুর শহরের বিষ্ণদী মাদ্রাসা রোড এলাকায় পারিবারিক কলহের জের ধরে মম আক্তার (২৪) নামের ১ সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছে। তার স্বামী ঢাকার খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মো. তামিম। তাদের মাশরাফি নামে ২ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। ৭ জুলাই শুক্রবার বিকেলে ওই এলাকার আলহাজ্ব এম এ হান্নান খানের মালিকানাধিন খাঁন ভিলা’য় এই ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ এসে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত মমর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায় এবং মুমর স্বামী তামিমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ৪ বছর পূর্বে চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশদী ইউনিয়নের মম আক্তারের সাথে শহরের তরপুরচন্ডি ওয়ারল্যাছ এলাকার তামিমের প্রেমের সম্পর্কে বিবাহ বন্ধনে অবাদ্য হয়। পরিবারের অমতে বিয়ে করায় মমকে তার পরিবার ত্যাজ্য করে দেয়। এরপর মমও তার স্বামী তামিমকে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখতে বারণ করেন। এর মধ্যে তাদের কোলজুরে আসে মাশরাফী নামের এক পুত্র সন্তান। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মম তার স্বামির সাথে প্রায় ঝগড়া হতো। খুবই জিদি স্বভাবের মেয়ে হওয়ায় মম প্রায় তার স্বামীকে মারধর করতো বলে প্রতিবেশীরা জানায়। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মুরব্বিরা বেশ কয়েকবার শালিসের মাধ্যমে তাদের মিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। এদিকে গত ৬ মাস পূর্বে তারা বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকায় খাঁন ভিলার নিচ তলায় বাসা ভাড়া নেয়। গত ঈদুল ফিতরের কিছুদিন আগে মম আলিগঞ্জস্থ তার নানার বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানেই সে ঈদ উদযাপন করে। ঈদের পরে মমর অনুপস্থিতিতে তামিম তার নিজের বাড়িতে খালাতে বোনের বিয়েতে যায়। তামিমের ভাই পারিবারিক কিছু ছবি ফেইসবুকে আপলোড করলে বিষয়টি মম জানতে পারে। মমের অনুমতি না নিয়ে তামিম কেনো বোনের বিয়েতে গেছে এ নিয়ে দু’জনের মাঝে আবরো ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। ঘটনার একদি আগে ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার মমর স্বামীকে খুব মারধর করেছে বলে তামিম চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ করে। ওই অভিযোগের ভিক্তিতে মডেল থানার ওসি তাদের ডেকে নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদের মিলিয়ে দেয়। পরদিন ৭ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৩টায় তামিম দুই বছরের ছেলে মাশরাফিকে সাথে নিয়ে বেড়াতে গেলে ফিরে এসে ঘরের দড়জা বন্ধ দেখে। একাধিকবার ডেকেও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দড়জা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মমর লাশ দেখতে পায়। তাৎক্ষতান তার ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশী ছুটে এসে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে। চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়ালি উল্লাহ অলি জানায়, ৬ জুলাই বৃহস্পতিবার তামিম চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ করে যে তার স্ত্রী মম তাকে মারধর করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা দুজনকে থানায় ডেকে এনে স্থানীয় কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে তাদের মিলিয়ে দিয়েছি। তিনি আরো জানান, শুক্রবার মমরে আত্মহত্যার খবর শুনে লাশ উদ্ধার করতে এসে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ আমরা মমর পরিবারকে অবহিত করলে তারা ঘটনাস্থলে আসতে অপরাগতা প্রকাশ করে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় মর্গে পাঠানো হয়েছে।