শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুর শহরের হাজী মহসিন রোডের ছায়াবানী সিনেমা হলের পিছনে বসবাসকারী শহীদ মিয়ার স্ত্রী জাকিয়া বেগম (৩৬) খুনের ঘটনায় চাঁদপুর মডেল খানা পুলিশ নবীনগর থেকে প্রধান আসামীকে আটক করে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসে। আজ প্রধান আসামী খায়ের মিয়া (২৫) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবান বন্দির পর জেল হাজতে প্রেরণ করে। আটক খায়ের মিয়া নবী নগর থানার মীরপুর গ্রামের ওচমান মিয়ার ছেলে। সে ১ ছেলে ১ মেয়ের জনক।
১৯ জানুয়ারী চাঁদপুর মডেল থানার জাকিয়া হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. নিজাম উদ্দিন ভূইয়া ও এ এস আই পলাশ তথ্য প্রযুক্তি ্যবহার করে আসামীকে সনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করেন। নবীনগর থানার মীরপুর গ্রামের ওয়ারুক বিল এলাকার একটি মুরগির ফার্ম থেকে ২০ জানুয়ারী রাতে তাকে আটক করে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে খায়ের মিয়াকে চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে আসে পুলিশ । পরে তাকে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করলে সে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মাসরুর সালেকীনের আদালতে জবান বন্দি দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. নিজাম উদ্দিন ভূইয়া জানান, খুন হওয়া জাকিয়া বেগমের সাথে আটক খায়ের মিয়ার ভাইয়ের ছেলের সাথে মোবাইলে রং নাম্বারে পরিচয় হয়। এরপর খায়ের মিয়া ভাতিজার কাছ থেকে নাম্বার সংগ্রহ করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই সূত্র ধরে খায়ের মিয়া জাকিয়াকে গত ১৫ ডিসেম্বর চাঁদপুর থেকে ডেকে ব্রাক্ষনবাড়িয়ার নবীনগর নিয়ে যায়। সেখানেই নির্মমভাবে হত্যা করে।
আটক খায়ের মিয়া চাঁদপুর মডেল থানায় আনার পর প্রকাশ্যে স্বীকার করে সে একাই নবীনগরের মীরপুর ওয়ারুক বিলে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার নেপথ্য কারণ ছিলো- জাকিয়াকে তার এলাকায় নেওয়ার পর জানতে পারে খায়েরের পরিবার ও সন্তান রয়েছে। তখন সে খায়েরকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে এ ঘটনা ঘটে। একটি সূত্র জানায়, জাকিয়া হত্যার ঘটনার সাথে তার স্বামী সহিদের হাত রয়েছে। কারন বেশ কয়েক বছর যাবত জাকিয়ার সাথে সহিদের মামলা চলে আসছিলো। সহিদের নামে ওয়ারেন্ড জারি হলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমের নাটক সাজিয়ে আটক আসামিকে দিয়ে ১৭ ডিসেম্বর ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার নবীনগর নিয়ে এই হত্যার ঘটনা ঘটাতে পারে বলে এলাকাবাসী মন্তব্য করেছেন। ১৭ ডিসেম্বর জাকিয়াকে হত্যা হওয়ার পর ১৯ ডিসেম্বর তার স্বামী সহিদ নিজের ইচ্ছায় জাকিয়ার দেওয়া নারী নির্যাতন মামলায় পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে বর্তমানে জেলা কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারী জাকিয়ার ছোট বোন পাপিয়া বেগম চাঁদপুর মডেল থানায় নিখোজের ডায়েরী করে। এরপর ১৭ ডিসেম্বর ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার নবীনগর থানা এলাকায় একটি বিলের মাঝে অজ্ঞাত নারীর ক্ষত বিক্ষত লাশ নবীনগর থানা পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইনসানের মাধ্যমে সেখানেই দাফন করে। পরে বেতার বার্তার মাধ্যমে বিভিন্ন থানায় নবীনগর থেকে অজ্ঞাত নারীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে জাকিয়ার ভাই ও পরিবারের অন্যান্য লোকজন নবীনগর গিয়ে জাকিয়ার লাশ থানায় ছবি দেখে সনাক্ত করেন।