শওকত আলী ॥
চাঁদপুর শহরের উত্তর রঘুনাথপুরের ডাকাতিয়া নদীর ভয়া বহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার প্রায় ২০টি পরিবার ভিটে মাটি হারিয়ে, খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। প্রায় ২শ’ পরিবার ভিটে মাটি হারানোর আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তারা তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এখন মানবেতার জীবন যাপন করছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চাঁদপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের উত্তর রঘুনাথপুর ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অবস্থিত এ আর ব্রিক ফিল্ড সংলগ্ন আলম গাজীর বাড়ি হতে প্রায় ৩শ’ বর্গফুট এলাকা জুড়ে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ওই এলাকার ২০টি বাড়ি ভেঙ্গে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ফুট এলাকা নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে । স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর কাজী, সাহেব আলী, আল-আমিন গাজী, মাসুদ গাজী, শাহজাহান খান, মিরাজ খান, নান্নু খান, হাফেজ পাটওয়ারী, ইয়াসিন পাটওয়ারী, মানিক শেখ, মমিন শেখ, খালেক শেখ সহ বেশ ক’জন ব্যক্তি জানান, গত কয়েক দিন থেকে এলাকার দেলু শেখের বাড়ি হতে দক্ষিণে পাটোয়ারী বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ফুট জায়গা জুড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। দু,একদিন পর পর একটু একটু করে হঠাৎ হঠাৎ ভেঙ্গে নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। গতকাল ডাকাতিয়া নদীর সেই ভাঙ্গন বেড়ে গিয়ে আলম গাজী বাড়ি ভিটে মাটি পর্যন্ত ভেঙ্গে যায়। নদীর ভাঙ্গন থেকে নিজের বসত ঘরের চাল, বেড়া এবং আসবাবপত্রগুলো রক্ষা করার জন্যে গতকাল সোমবার সকালে জাহাঙ্গীর গাজীর বসত ঘর সহ কয়েকটি বসত ঘর সরিয়ে ফেলা হয়। স্থানীয়রা জানায়, নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়া জাহাঙ্গীর গাজী একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের সামনে বাদাম বিক্রি করে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছে। নদীর ভাঙ্গনে বাকি জমিটুকু তলিয়ে গেলে তার আর কোন মাথা গোজার ঠাই থাকবে না। এছাড়াও ভাঙ্গনের মুখোমুখি রয়েছে নদীর তীরবর্তী পাটওয়ারী বাড়ি, শেখ বাড়ি, খান বাড়ি, গাজী বাড়িসহ আরো বেশ ক’টি বাড়ির ২শ’ পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। ভাঙ্গন কবলিতরা আরো জানায়, ডাকাতিয়া নদীর এমন ভাঙ্গনের কথা চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রকে এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আলমগীর হোসেনকে জানানো হয়েছে। তারা বলেছেন ভাঙ্গন স্থানটি পরিদর্শন করবেন কিন্তু তারা পরিদর্শন করেন নি। এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে কথা হয় ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আলমগীর হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ভাঙ্গনের বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে কিন্তু আমি ছবি সহ ভোটার হালনাগাদ তালিকার কাজে ব্যস্ত থাকায় সেখানে যেতে পারিনি। তবে আমি মেয়র সাহেবকে ভাঙ্গনের বিষয়টি জানানোর পর তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন। এদিকে উত্তর রঘনাথপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গনের কথা শুনে পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন লোকজন ভাঙ্গনের স্থান দেখার জন্যে শত শত মানুষ ওই এলাকায় ছুটে আসে। এই ভাঙ্গন প্রতিরোধ করার জন্যে এলাকাবাসী প্রশাসনসহ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।