শওকত আলী ॥
চাঁদপুর মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে রোটাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে শিশুরা প্রতিদিন এসে এখানে ভর্তি হচেছ। তীব্রশীতের সাথে পাল্লা দিয়ে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে প্রতিদিন ১৯০-২০০ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে বলে হাসপাতালের রেকড বুক থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত ৪ জানুয়ারী থেকে ১৯ জানুয়ারী পর্যন্ত ১৫ দিনে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪ হাজার শিশু চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডি আরবিতে (ডায়রিয়া হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৩ গুণের বেশি। গত বছর এই সময়ে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছিল ১৩০-১৩৫ জন শিশু।
মতলব আইসিডিডিআরবি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোটা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ দিনে যেসব শিশু ভর্তি হয়ে এই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের বয়স ৫ মাস থেকে ৫/৬ বছর। গতকাল শুক্রবার দুপুর এ হাসপাতালে ১শ৭৮ জন শিশু ভর্তি হয়।
হাসপাতাল সূত্রে আরো জানা যায়, জেলা উপজেলা থেকে যেসকল শিশু ভর্তি হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, হাইমচর, শাহরাস্তি, কচুয়া, মতলব দক্ষিণ, মতলব উত্তর, কুমিল্লার বরুড়া, চান্দিনা, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর (দক্ষিণ), দাউদকান্দি, দেবিদ্বার, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, মুরাদ নগর, নাঙ্গলকোট এবং ফেনী, লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, রামগঞ্জ, চাটখিলসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল। সবচেয়ে বেশি শিশু ভর্তি হয়েছে চাঁদপুর জেলার সদর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়ার এবং বরুড়া এলাকার।
সরেজমিনের দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ডে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের ভির অনেক বেশী। হাসপাতালের বর্হিবিভাগেও অপেক্ষমান শিশু রোগীদের ভির দেখা যায়। ১শ’ ২০ সয্যা এই হাসপাতালে ওয়ার্ডগুলোতে বিছানা সংকুলানের কারণে বারান্দায় তাবু টানিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসক ডাঃ চন্দ্র শেখর দাস জানান, মাত্রারিক্তি ঠান্ডার কারণে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ফলে রোটা ভাইরাস সক্রিয় হয়। বিশেষ করে শিশুরাই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে সব চেয়ে বেশী। কারণ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এদিকে আক্রান্ত শিশুদের খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এক রোগীর অভিভাবক বলেন “বহুবার হাতলা পায়খানা ও বমি অইছে দেইখা আমার পোলা তামিমরে (৩) দুহুরে এনো ভর্তি করছি। ডাক্তার স্যালাইন, বেবিজিং আর সুজি খাইতে দিছে। এহন কিছুডা ভালো।
কুমিল্লার পূর্ব চান্দ্রা থেকে আসা মাহমুদা বলেন, সকালে আমার মেয়ে কামরুন্নাহার (৯ মাস) কে এই হাসপাতালে ভর্তি করাই। ডাক্তার ও নার্সদের পরামর্শ মত স্যালাইন ও অন্যান্য খাওয়ানোর পর এখন অনেকটা সুস্থ।
হাসপাতালের সিনিয়র কর্মকর্তা ডা. মো. আল ফজল খান বলেন, ‘১২০ শয্যা এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। ওয়ার্ডের বাহিরে বারান্দায় তাবু টানিয়ে অতি যতœ সহকারে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ময়লা খাবার বর্জন, বিশুদ্ধ পানি পান করলে এবং সময় মতন শিশুদের টিকা (ভ্যাকসিন) দেয়া ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব।’
শিরোনাম:
সোমবার , ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।