শওকত আলী:
‘মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সুযোগ দিন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা নিন’ এ শ্লোগান নিয়ে ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরে ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালিত হয়। মা ইলিশ রক্ষায় সরকার চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ১শ’ কিলোমিটার এলাকায় ২২ দিন পর্যন্ত অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছেন। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অভয়াশ্রম ঘোষিত নদী এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে চাঁদপুরে একটি শক্তিশালী টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়ে ছিল। চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, তার পরেও মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করে পদ্মা-মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করায় প্রশাসন ২২ দিনে, ৯০ জেলেকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৫ দিন থেকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড প্রদান করেছে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমান আদালতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, চাঁদপুর সদর, মতলব উওর,হাইমচর,মতলব দক্ষিনও ফরিদগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাগন ৩২জন জেলেকে জরিমানা করেছেন, ১লক্ষ ১৫ হাজার ৫শ”টাকা। এদের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২৩ জন জেলেকে ১লক্ষ,৫শ,হাইমচরে ৩ জন জেলেকে ১২ হাজার টাকা ও মতলব উওরে ৬ জনকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে। জব্দ করা হয়েছে,অবৈধ কারেন্ট জাল ৭.৭ লক্ষ মিটার( কারেন্ট জালের মূল্য ১শ”৫৩.৯৮লক্ষ টাকা), মা”ইলিশ ২.৫২২মে: টন, ২৯টি নৌকা। আটক জেলেদের বিরুদ্বে মামলা দেওয়া হয়েছে,১১২টি। ৯০ জন জেলের মধ্যে ১১ জনকে ২ বছর,১৭ জনকে ১ বছর,৪ জনকে ৬মাস,২৬ জনকে ১ মাস,৬ জনকে ১৫ দিন করে সশ্রম ও বিনাশ্রম করোদন্ড প্রদান করা হয়। এরা চাঁদপুর জেলা কারাগারে কারাদন্ড ভোগ করছে। অপর দিকে প্রশাসন অভিযান কালে ১৪৩টি মোবাইল কোর্ট,১০২টি অভিযান, মাছ ঘাট পরিদর্শন করে ১০৯টি,আড়ৎ পরিদর্শন করেছে,৬শ”২৫টি,বাজার পরিদর্শন করেছে২৭৫টি।
অভিযানের ২২দিনে দেখা যায় অসাধু জেলেরা সরকারের নির্দেশনা ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে বৃদ্ধাঙুলী প্রদর্শন করে অসাধু জেলেরা কৌশল পরিবর্তন করে তাদের শিশুদের মাধ্যমে পদ্মা- মেঘনা নদীতে নিষিদ্ধ মা ইলিশ নিধন করে নিজেরা লাভবান হয়েছে, আর দেশের সম্পদ মা” ইলিশকে ডিম ছাড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে দেশের কোটি টাকার সম্পদ নস্ট করেছে। নদী এলাকার চরাঞ্চলের একশ্রেণীর অসাধু জেলেরা শিশুদের দিয়ে এবার দিনের আলোতেই যেনো মা ইলিশ নিধনের এ মহাৎসবে মেতে উঠতে দেখা গেছে। তারা ইঞ্জিন বিহীন ও ইঞ্জিন চালিত ছোট-বড় নৌকায় কারেন্ট জাল নিয়ে দিনভর এ অবৈধ কাজ করেছে
এ সময় ইলিশ ধরা পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ সংরক্ষণের জন্য দেশব্যাপী এই বাইশ দিন ইলিশ মাছ ধরা ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। সেই সুবাদে চাঁদপুর জেলার পদ্মা মেঘনার ৭০ কিঃমিঃ নৌ-সীমানা এলাকায় এ সময়ের মধ্যে ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান। তিনি আরো জনান, ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা টাস্কফোর্স ব্যাপক প্রচার প্রচারণা এবং জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণকে সচেতন করতে উদ্বুদ্ধকরণ সভাও করেছে বহু বার। মা ইলিশ রক্ষায় প্রতিদিন নদীতে অভিযান চলে। জেলেদের ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখতে চাঁদপুরের প্রশাসন বদ্ধপরিকর ছিল।