স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের নৌকা ও চশমা প্রতীকের ৫টি ইউপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজী, মুকলেছুর রহমান মিজি, শাহাদাত হোসেন রনি, সেলিম খান, মজিবুর রহমান কাজী নির্বাচনী অফিসে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নৌকায় অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাগুলি ঘটেছে গতকাল সোমবার রাত ১২ টায়, গভীর রাতে ও মঙ্গলবার দুপুরে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ও চাঁদপুর মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান মন্ডল। এ ঘটনায় পুলিশ কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদ-প্রার্থী শাহাদাত হোসেন রনির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১ জনকে আটক করেছে। বর্তমানে ঐ সব এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের ও সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো মুহুর্তে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে বলে এলাকায় ঘুরে দেখা যায়।
এলাকাবাসী, চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী বেলায়েত হোসেন বিল্লাল গাজীর নৌকা মার্কার নির্বাচনী অফিস নিজ গাছতলায় ও নানুপুরে সোমবার রাত ১২ টায় ১ দল দুর্বৃত্ত অগ্নিসংযোগ করে অফিসের প্যান্ডেল ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়। তাৎক্ষনিক বিজিপি ও পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১ জনকে আটক করলেও পড়ে ছেড়ে দেয়। গতকাল সোমবার গভীর রাতে সদর উপজেলার মৈশাদী ইউপির আওয়ামী লীগ প্রাথী মোকলেছুর রহমান মিজির মৈশাদী রেলওয়ে ষ্টেশন সংলগ্ন তালতলা বাজারের নির্বাচনী অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেম্বার প্রার্থী হাশিম গাজীর নির্বাচনী অফিসের প্যান্ডেল ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অপরদিকে সদর উপজেলার কল্যাণপুর এলাকার গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী শাখাওয়াত হোসেন রনির কালি ভাংতির নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া দুর্বৃত্তরা ঐ এলাকার চকের মোড় ও চৌ-রাস্তায় দুটি নৌকায় অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ফেলে। ঘটনার পর পর ঘটনাস্থলে বিজিপি ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, মডেল থানার এসআই মাহবুবুর রহমান মন্ডল আমানউল্যাহপুর এলাকার খালেক গাজীর ছেলে যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন গাজী (৩৮) কে মঙ্গলবার বিকেলে আটক করে মডেল থানায় নিয়ে যায়। অন্যদিকে গতকাল সোমবার সদর উপজেলা ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী সেলিম খানের নৌকা প্রতীকের নৌকা ভাংচুর ও ব্যানার, অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে আলী আহম্মেদ এর স্ত্রী আমেনা বেগম, নুরী বেগমসহ ৩ মহিলাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ঐ এলাকার বিএনপি সমর্থিত জয়নাল বেপারী, নাছিরসহ ১০/১৫ জনের একটি দল।
এছাড়া তরপুরচন্ডী ইউপির আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চশমা প্রতীকের মজিবুর রহমান কাজীর নির্বাচনী অফিসের প্যান্ডেলে তরপুরচন্ডী জিএম উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজারে ও আনন্দ বাজারে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে একদল দুর্বৃত্তরা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। সোমবার রাতে মজিব কাজীর প্রচারনা চালানোর সময় মাইক ম্যান ফরিদ বেপারী ও সাহাবুদ্দিন গাজীকে একদল দুর্বৃত্ত আনন্দ বাজার ও কাশের বাজার এলাকায় পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে ও মাইক ভাংচুর করে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মামুনুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য না করে মুঠো ফোন কেটে দেন। এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনা শুনেছেন বলে জানান এবং এ সংক্রান্ত ব্যাপারে রিটানিং অফিসারের দায়িত্বে ৮ জন কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রয়েছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। রিটানিং অফিসার, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম সাইদুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বলেন, কল্যাণপুরের ঘটনায় তার কাছে অভিযোগ আসলে তিনি তা মডেল থানায় পাঠিয়ে দেন।