স্টাফ রিপোর্টার:
বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া আদালতের রায়কে ঘিরে এবং রায় পরবর্তী বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা তৎপরতা ঠেকাতে চাঁদপুর জেলার ৮টি উপজেলার থানা পুলিশ তাদের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় চাঁদপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ ২৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আর চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে সংঘর্ষ, ভাংচুর এবং বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় প্রায় সাড়ে তিনশ’ নেতা-কর্মীকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা বিষয়টি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের এবং তারেক রহমানসহ পাঁচচনের ১০ বছরের করে কারাদ- হলে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করার সময়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটালে পুলিশ আরো তৎপর হয়ে ওঠে। চাঁদপুর ও হাইমচর থেকে পুলিশ বিএনপির বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে বিক্ষোভকালে আটক করে বৃহস্পতিবার।
গতকাল শুক্রবারও তাদের অভিযান অব্যাহত ছিলো। শুক্রবার বাদ জুমা খালেদা জিয়ার সাজার প্রতিবাদে বিএনপি দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি ও পুলিশের কারণে তারা তেমনভাবে মিছিল করতে পারেনি। কয়েকটি স্থানে মিছিল শুরু করলেও পরবর্তীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশের বাধার কারণে তা প- হয়ে যায়। ফরিদগঞ্জে থানা পুলিশ মিছিলের চেষ্টার সময় চাঁদপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ ৪ জন বিএনপি নেতাকে আটক করে। এদের মধ্যে আফজাল হোসেনকে মানুরী এলাকা থেকে, নূর আলমকে বাসারা, সৈকত হোসেনকে কালীরবাজার ও কামাল হোসেনকে ফরিদগঞ্জ বাজার থেকে আটক করে।
এদিকে চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার, পালপাড়া, কালীবাড়ি, প্রফেসরপাড়া ও বহরিয়া এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় প্রায় সাড়ে তিনশত বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। ফলে চাঁদপুর ও হাইমচরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে।
চাঁদপুর সদরে পুলিশের ৩ মামলায় আসামী আড়াইশ’ আটক আরো ৮
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া আদালতের রায়কে ঘিরে ৮ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর শহর এলাকাসহ আশপাশে সংঘটিত সংঘর্ষ, ককটেল উদ্ধার ও ভাংচুরের ঘটনায় ৩টি মামলা দায়ের করেছে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। এ মামলায় আড়াইশ’র উপরে বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়েছে। আটক ৮ জনকে ওইসব মামলায় আসামী দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা।
থানা ও ঘটনাস্থল সূত্রে জানা যায়, শহরের নতুনবাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হামলা, ককটেল উদ্ধার ও ভাংচুরের ঘটনায় মডেল থানার এসআই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে বিস্ফোরক ও দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন যার নং ৮, ২০১৮। এ মামলায় ৯ জন এজাহার নামীয়সহ অজ্ঞাত আসামী আরো ১৫ থেকে ২০ জন। একই দিনে শহরের গুয়াখোলা রাস্তায় সংঘর্ষের ঘটনায় এসআই ফজলুর রহমান বাদী হয়ে অপর মামলাটি দায়ের করেন যার নং : ৯, ২০১৮। এ মামলায় এজাহার নামীয় ১৭ জনসহ অজ্ঞাত আরো ৫০/৬০ জন। অপর মামলাটি হয়েছে ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া বাজারের ঘটনায়। এখানে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এসআই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১শ’ থেকে ২শ’ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। যার নং : ১০, ২০১৮।