চাঁদপুর জেলা শহরে দানব ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে এবং উপজেলার বিভিন্ন সড়কে এখনো প্রকাশ্যে দিনে ও রাতে মালামাল বহন করে চলছে। গ্রামীন কাঁচা ও পাকা সড়ক নষ্টসহ বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে ট্রাক্টর। দানব ট্রাক্টর চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এসব কারণে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে ট্রাক্টর চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। এই কাজে সহযোগিতা করেন চাঁদপুরের সাবেক এসপি শামসুন্নাহার।
সরেজমিন চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া, বাগাদি, শাহমাহমুদপুর, রামপুর ইউনিয়ন ও হাইমচর সহ বিভিন্ন উপজেলায় ইউনিয়গুলোতে ইট, বালুসহ অন্যন্যা নির্মাণ সমাগ্রী বহন করার কাজে এখনো ব্যবহৃত হতে দেখাগেছে সড়কে চলাচল নিষিদ্ধ এই ট্রাক্টর। বিশেষ করে যেখানে বড় বড় বালু মহল ও ইটের ভাটা রয়েছে, সেখানেই ব্যবহার হচ্ছে ট্রাক্টর।
পুলিশ সুপারের নির্দেশে এক সময় জেলার ৮ উপজেলার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)’র নির্দেশে পুলিশ বহু ট্রাক্টর আটক করে। কিন্তু এই কাজটি পর্যায়ক্রমে থেমে পড়ে। জেলা ও উপজেলা সদরে ছোট ট্রাক দিয়ে মাল বহন করলেও গ্রামীণ এলাকায় ট্রাক্টর এখনো চলছে।
হাইমচর উপজেলায় পুলিশের সাথে কন্টাকে চলছে দানব ট্রাক্টর। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত উপজেলার আনাচে-কানাচে দিয়ে এই দানব ট্রাক্টর চলাচল করছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রাতের বেলায় বিকট শব্দে ট্রাক্টর চলাচলের কারণে মানুষ ঘুমাতে পারবে না। এছাড়া হাইমচরে নতুন সড়কগুলো হয়েছে সেগুলো এখনই নষ্ট হয়ে গেছে। হাইমচর উত্তর আলগী ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ডের কথিতো সংবাদ কর্মী পরিচয় দিয়ে মহসিন পেদা তার নিজেরই দুটি ট্রাক্টর দিনে ও রাতে চালাচ্ছে। এই মহসিন পেদা হাইমচরের প্রায় ৫০ টি ট্রাক্টর এর কাছ থেকে টাকা উত্তোলন করে হাইমচর থানা পুলিশকে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা দেয় ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
টাকার বিনিময়ে টোকেনের মাধ্যমে এই দানব টাকটার হাইমচর উপজেলায় চলাচলের কারণে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
কিছুদিন পূর্বে এই দানব টাকটার বন্ধের জন্য হাইমচরে বেশ কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা মানববন্ধন করেছে। তারপরেও বন্ধ হয়নি এই দানব ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল।
দানব ট্রাক্টর বন্ধ ও দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয়রা।
চাঁদপুর এলজিইডি’র প্রকৌশলীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরে গ্রামের অধিকাংশ সড়ক পাকা হয়েছে। আর এসব সড়ক খুব দ্রুত নষ্ট হওয়ার পিছনে একমাত্র কারণ হচ্ছে সড়কে ট্রাক্টর চলাচল। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সরকার সড়ক নির্মাণ করলেও কয়েক মাসের পাকা সড়ক ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ট্রাক্টর মালিকদের নূন্যতম দেশাত্ববোধ না থাকায় এই ব্যবসা থেকে তারা বিরত হননি।
গ্রাম এলাকার ভুক্তভোগী মহলের দাবী চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন আবার সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে সড়কে দানব ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হবে।