ফাহিম শাহরিন কৌশিক খান
চাঁদপুরের শীর্ষ ছিনতাইকারী, হত্যা মামলাসহ বহু মামলার আসামী মুন্না গাজী (৩০)-কে আটক করেছে নৌ-পুলিশ। গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দেয়ার পর নৌকা নিয়ে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মুন্নাকে গ্রেফতার করে। শীর্ষ ছিনতাইকারী ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী মুন্না গাজী রাতের আঁধারে বেরিয়ে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অপহরণ, চাঁদাবাজী, ছিনতাইসহ অনেক অপকর্মের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাদ্রাসা রোড নতুন লঞ্চ টার্মিনালে রাত ৯টায় মিতালী লঞ্চ ঘাটে ভীড়ানো অবস্থায় ছিনতাইকারী মুন্না গাজী ও তার সহযোগি রাশেদ খান লঞ্চে দ্বিতীয় তলায় ওঠে। এসময় ঢাকার জনৈক দু’যুবককে তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লঞ্চের ছাদে নিয়ে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত যুবকরা লঞ্চের সুপারভাইজার ইউসুফকে ও টার্মিনালে থাকা নৌ-পুলিশকে ছিনতাইর ঘটনাটি জানায়। ঘটনার পর-পরই লঞ্চের সুপারভাইজারসহ অন্যান্যরা ছিনতাইকারী মুন্নার সহযোগি মৈশাদী মির্জাপুর গ্রামের খান বাড়ির বর্তমানে নাজির পাড়ার বাসিন্দা শাহাজান খানের ছেড়ে রাশেদ খান (২৮)-কে ছিনতাই হওয়া মোবাইল ও টাকা পয়সাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশের ইনচার্জ মনির তাকে আটক করে কৌশল অবলম্বন করে তার মাধ্যমে শীর্ষ ছিনতইকারী মুন্নাকে ফোন করে আসতে বলে। মুন্না লঞ্চ টার্মিনালে আসার পর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে গেলে সে উপায় না দেখে নদীতে ঝাঁপ দেয়। এসময় নৌ-পুলিশের ইনচার্জ মনির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে নৌকা দিয়ে কসাইখানার সামনে গিয়ে মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে শীর্ষ ছিনতাইকারী মুন্না গাজীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের স্ট্যান্ড রোডের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মুন্না গাজীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘ দিন যাবৎ পলাতক থেকে ব্যাংক কলোনীতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। রাতের আঁধারে তার ছিনতাইকারী চক্রদের সাথে নিয়ে লঞ্চ টার্মিনাল ও বাস স্ট্যান্ডে অবস্থান করে অসহায় যাত্রীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব ছিনতাইকরে নেয়। ছিনতাইকারী মুন্না নিজেকে মডেল থানার এএসআই নন্দন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অপকর্মের ঘটনা ঘটিয়েছে। বেশ কয়েকবার তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান করেও আটক করতে পারেনি। চাঁদপুরের শীর্ষ ছিনতাইকারী মুন্না গাজী ও তার সহযোগী রাশেদ খান আটক হওয়ায় ভুক্তভোগী মানুষদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার তাদের কোর্টে প্রেরণ করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।