শাহরিয়ার খাঁন কৌশিক ॥
চাঁদপুর বঙ্গবন্ধু সড়কে মিজানুর রহমানের নামধারি পদ্মা অয়েল এজেন্সীর গোডাউনে জ্বালানী তেলের ট্যাংকার থেকে পেট্টোল অকটেন তেল নামানোর সময় এলপি গ্যাস সিলেন্ডার বিস্পরনে নিহত দোকান মালিকের ছেলে রায়হানকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্থান্তর করেছে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে অগ্নিদগ্ধ ৪ জনের মধ্যে ২ জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর পাঞ্জ লড়ছে। আবাসিক এলাকায় ফ্লাট বাসা ভাড়া দিয়ে অবৈধ ভাবে তেলের ব্যাবসা করার সুযোগ দেওয়ায় বাড়ির মালিক শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুক্রবার দুপুরে পুলিশ থানায় নিয়ে আসে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেরে দেয় পুলিশ।
বুধবার (৩১ আগষ্ট) দিনগত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টায় একটি জ্বালানী তেলের ট্যাংকার থেকে ওই তেলের গোডাউনে ড্রামে পাম্প মেশিন দিয়ে তেল অপসারণ করতে গিয়ে গ্যাস সিলেন্ডার বিস্পরনে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। মুহুর্তের মধ্যে আগুন পুরো ট্যাংকারে ছড়িয়ে পড়ে এবং ওই গোডাউনে বিক্রির জন্য থাকা গ্যাস সিলিন্ডারগুলো বিকট শব্দে উপরের দিকে উঠে। অগ্নিকান্ডের খবর শুনে চাঁদপুর উত্তর ও হাজিগঞ্জ ফায়ার স্টেশনের ৫টি ইউনিট তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে এসে আগুন নির্বাপনের কাজ শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এ সময় দালানের নিচতলায় থাকা তেলের দোকানে থাকা তেলের ড্রামগুলো বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের লেলিহান শিখা আরো ভয়াবহ আকার ধারন করে। বাসার সামনে থাকা তেলের লরী ও ভিতরে একটি পিক আপ ও মোটরসাইকেল সহ বাসার পর্যাপ্ত আসবাবপত্র পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়। দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহত দোকানের মালিক মিজানুর রহমান (৪৫), ছেলে রায়হান (২৩), নূর মোহাম্মদ(২১), বাদশা মিয়া (৫০), বেলাল হোসেন ভূইয়া (২৮) ও খোকন (৩০)কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দোকান মালিক মিজানের ছেলে রায়হান মারা যায় । এদের মধ্যে ৪জন ৮০/৯০% এবং দুইজন ৫০/৬০% পুড়েছেন।
এলাকাবাসি জানায়, দির্ঘ কয়েক বছর যাবত চাঁন্দ্রা লোহাগড় পাটওয়ারী বাড়ির মৃত আবু সাদেক পাটওয়ারীর ছেলে মিজানুর রহমান পাটওয়ারী বঙ্গবন্ধু সড়কের সেলিনা ভবন ভাড়া নিয়ে পদ্মা অয়েল এজেন্সীর নাম ব্যবহার করে পেট্টোল অকটেন, এলপি গ্যাস সিলেন্ডার বিক্রি করে আসছিলো। মিজানুর রহমান প্রতি সপ্তাহে চট্রগ্রাম থেকে তেলের ট্যাংকার করে পেট্টোল অকটেন এনে আবাসিক এলাকায় সেই বাসায় ও তার দোকানে এসে তেল মজুদ করে রাখে। তাকে এলাকাবাসি বহু বার বারন করেও তাকে এই এলাকা থেকে সড়াতে পারেনি। ঘটনার দিন রাতে তেলের ট্যাংকার থেকে তেল তরিগড়ি করে নামানোর সময় এলপি গ্যাস সিলেন্ডার বিস্পরনে সূত্র পাত হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৮ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। দোকান মালিক মিজান এলাকার মাস্তানদের ভাড়া করে ও প্রসাশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে টাকার বিনিয়ে ম্যেনেজ করে এই তেলের ব্যাবসা করে আসছিলো।
্
এদিকে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল, পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আব্দুল হাই, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শাহাদাৎ হোসেন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং পুলিশ মোতায়ন করেন। এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গত ৩দিন যাবত বঙ্গবন্ধু সড়কে গ্যাসের লাইন বন্ধ রয়েছে।