শওকতআলী॥
চাঁদপুরে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের গত ৩অক্টোবর ১২টা হতে ৪ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় চাঁদপুর জেলা,উপজেলা টাস্কফোর্স, মৎস্য অফিস ও কোস্ট গার্ড ৯টি মোবাইল কোট, ৪টি অভিযান চালিয়ে মেঘনা নদী হতে দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা, ৬ হাজার ১শ” মিটার কারেন্টজাল,২০কেজি মা ইলিশ জব্দ ও ৬ জেলেকে আটক করেছে। আটক ২ জেলেকে ১ বছর করে কারাদন্ড, তিন জেলেকে দুইমাস করে কারাদন্ড ও ১ জেলেকে ২হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। চাঁদপুর সদর মেঘনা নদীতে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা এসিল্যান্ড মো: ইয়াছিন, এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী মৎস্য কর্মকতা মো: বোরহান উদ্দিন। তিনি ২ জেলেকে ১ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করেন। চাঁদপুর সদর মেঘনা নদীতে অভিযান কালে নৌ-পুলিশ ১ জনকে জেলেকে আটক করে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্যেট নাজনিন সুলতানা ঐ জেলেকে ২ হাজার টাকা জারমানা করে ছেড়ে দেন। এ ছাড়া মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা শারমিন আক্তার অভিযান কালে ৩ জেলেকে আটক করেন। এ সময় অভিযানে সিনিয়ার মৎস্য কর্মকতা মো: সাখায়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। ভ্রাম্যমান আদালতে শারমিন আক্তার ৩ জেলেকে ২মাস করে সাজা প্রদান করেন। সাজা প্রাপ্ত জেলেরা হলো মামুন মিয়া(২৮),দাদন মিয়া(৪০) ও মহসীন (২০)। এদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার কালীরচর।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সফিকুর রহমান জানান, ইলিশের প্রধান মওসুম রক্ষায় চাঁদপুর জেলার পদ্মা মেঘনা নৌ সীমানায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোসের টহল অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এ পর্যন্ত ১৭ টি মৎস্য আড়ৎ,৯টি মৎস্য অবতারন কেন্দ্র,৪টি মাছঘাট ও ৫টি বাজার পরিদর্শন করা হয়েছে। জব্দ করা হয় দুটি মাছ ধরার নৌকা ও ০.০৬ লক্ষ ৬ হাজার মিটার কারেন্টজাল। ৮টি অভিযান ও ৯টি মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে আটক ৫ জেলেকে সাজা ১ জেলেকে জরিমানা করা হয়।
এদিকে চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, মোহনপুর নৌ ফাঁড়ি পুলিশ ও চাঁদপুর নৌ-পুলিশ মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে মাছ ধরার একটি কাঠের নৌকাসহ ৬ জেলেকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।এসময় তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার মিটার কারেন্টজালও জব্দ করা হয়।এছাড়া লক্ষিপুরের রামগতি এলাকায় দেড় হাজার মিটার কারেন্টজাল উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উত্তাল মেঘনা নদী পাহারা দিতে দেখা গেলো মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারকে। ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার। প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্যে এ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। মা ইলিশ সুরক্ষা অভিযান ২০১৭-এর আওতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নিমিত্তে মতলব উত্তর উপজেলায় উত্তাল মেঘনায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে নদী পাহারা দিচেছন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার। এ সময় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা, নৌ পুলিশ সদস্যরা তার সাথে সহযোগিতা করে যাচেছন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, ইলিশ জাতীয় সম্পদ। একটি মা ইলিশ গড়ে ২০ লাখ থেকে ২২ লাখ ডিম ছাড়ে। জাতীয় স্বার্থে এ মা ইলিশকে সুরক্ষিত রাখা সবার নৈতিক দায়িত্ব । ১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা কেউ মা ইলিশ ধরবো না, বিক্রয় করবো না, ক্রয় করবো না এই হোক আমাদের অঙ্গীকার ।