মিজান লিটন
বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে চাঁদপুরে কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন-২০১৪।
সারা দেশের ন্যায় গতকাল ৪ জুন চাঁদপুরে এ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় সংসদ, চাঁদপুর জেলা ও সদর উপজেলা সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় চাঁদপুর শহরের ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। জেলার ৮ উপজেলায় একই সময় উপজেলা সদরে সেখানকার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে কচুয়ায় ভোটগ্রহণ হয়েছে শুধু কেন্দ্রীয় ও জেলা কমান্ডের। সকালে নির্বাচন কার্যক্রম এবং আয়োজন পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ ইসমাইল হোসেন ও পুলিশ সুপার মোঃ আমির জাফর। এ ছাড়া চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান মোঃ সফিকুজ্জামান, ইউএনও দুলাল চন্দ্র সূত্রধরও ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। জেলা রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮টি নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোট ভোটার ৩ হাজার ২শ’ ৮৪ জন।
চাঁদপুর জেলা সদরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ মোছাদ্দেক হোসেন (উপজেলা শিক্ষা অফিসার) জানিয়েছেন, ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ৫৫৫ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৩৮৫ জন ভোটার। ৭টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হয়। জাতীয় নির্বাচনের আদলে ভোটারদের জন্য রাখা ছিলো স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স। একজন ভোটারকে ৬৯টি ভোট দিতে হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় পদ ৪১, জেলা ইউনিটের পদ ১৭ ও উপজেলা ইউনিটের পদ ১১টি। ২৩৪ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ৬৯ জনকে বেছে নিতে হয়েছে ভোটারদের। ভোটারদের সুবিধার্থে এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার জন্য আলাদা আলাদা ব্যালট বাক্স রাখা হয়। সাদা চিহ্নিত ব্যালট পেপার কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, হলুদ রংয়ের ব্যালট জেলা ইউনিট ও নীল রংয়ের ব্যালট পেপার উপজেলা ইউনিটের নির্বাচনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এ তিন রংয়ের জন্য ব্যালট বাক্সও চিহ্নিত করে রাখা ছিলো। নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত ছিলেন এনডিসি মোঃ আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শচীন চাকমা। প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স এবং ডিবি পুলিশও ভোট কেন্দ্রে মোতায়েন ছিলো। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য কোনো ধরনের অভিযোগ বা আপত্তি ছিলো না।
সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এবং পোলিং অফিসার হিসেবে শিক্ষক ও সমাজসেবার মাঠ কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন। সরজমিনে সদর উপজেলার নির্বাচন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা এক এক করে ভোট কেন্দ্রে আসছেন এবং সিরিয়াল অনুযায়ী নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে গোপন স্থানে পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিয়ে ভোট দিচ্ছেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ শরীরে এবং বয়সের ভারে ন্যুব্জ অবস্থায় ভোট দিতে দেখা গেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা কেন্দ্রের ভেতরে এবং বাইরে একে অপরের সাথে বেশ আন্তরিকতা বজায় রেখে ভোটারদের ভোট দানে সহযোগিতা করেন।
নির্বাচন দেখার জন্য এসেছিলেন আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। উপস্থিত ছিলেন হুমায়ুন কবির খান, সোহাগ পাটওয়ারী, সুব্রত দত্ত প্রমুখ। এবার কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনে ৩টি, চাঁদপুর জেলা কমান্ড কাউন্সিলে ৩টি এবং চাঁদপুর সদর উপজেলা কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনে ২টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।
প্যানেল সমূহ : কেন্দ্রীয় সংসদ ওয়াকার মালেক-মহিউদ্দিন পরিষদ, মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মোর্শেদ খান-মতিন পরিষদ এবং মেজর (অবঃ) জিয়াউদ্দিন-মনিরুল হক পরিষদ।
চাঁদপুর জেলা ইউনিট : এমএ ওয়াদুদ-হাফিজ খান-রনজিদ চাকী পরিষদ, শাহাদাত হোসেন সাবু-সিরাজ বরকন্দাজ পরিষদ ও হানিফ-আহমেদ উল্লাহ-বাসার পরিষদ। চাঁদপুর সদর উপজেলা ইউনিট : আবুল কালাম মোঃ শামছুল আলম চিশতী-সফিকুর রহমান দুলাল ভূঁইয়া-ইসমাইল হোসেন সিরাজী পরিষদ এবং মোস্তফা-দীল মোহাম্মদ-জয়নাল মাস্টার পরিষদ।
